পাহাড়ী রাস্তা গুলো ভারী অদ্ভুত - এই তারে দেখলাম, এই সে নেই । কেউ চোখের আড়াল হয়ে গেল এইমাত্র, এই চলে এল চোখের তারায় । ছল - তবে ভারী মিষ্টি । তৃষ্ণা ধরায় আবার তৃষ্ণা মেটায় । নিয়ে যায়, আকাঙ্খিত করে আবার আকাঙ্খাকে কাছে পাইয়ে দেয় ।
আমরা তেমনই এক পাহাড়ী ঢালে ধীরে ধীরে হাটছি । মন বলছে যেন আমি একটু এগিয়ে গিয়ে পথের এই খেলাটা খেলি । তার চোখের সামনে থেকে আড়াল হয়ে যাব, কিছুক্ষণ নাই হয়ে থাকব, কিছুক্ষণ সে আমাকে দেখতে পাবে না, আমাকে দেখার জন্য অপেক্ষা করবে, তারপর আমি আবার তার আকাঙ্খিত কাছে চলে আসব ।
আমাদের ধীর গতি পা আরো ধীরে ধীরে হেটে ল্যাম্পপোস্টের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে । আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু ঢালগুলো ক্রমাগত টানে যেন শিরা উপশিরাদের ছিঁড়ে নেয়।
আমার হাত শিরশির কাঁপে । সে ছায়াতে আমাদের দেখে। হাত গুলো অনেক লম্বা হয়ে রাস্তা পেড়িয়ে বনের মধ্যে মিশে যায় । আমার হাত কাঁপে কিন্তু তার হাত স্থির থাকে ।
পাহাড়ী রাতে জমাট বেধে রয় অন্ধকার ।
গাঢ় কাল আকাশে খুব জ্বলজ্বল করে শত শত তারা ঝাঁক বাধে । কোথাও কোন কোলাহল নেই । যত দূর চোখ যায় বিস্তৃর্ণ কালো জলে এক বিন্দু আলো নেই । তবু কারো কথা জল থেকে উঠে আসে । অন্ধকারে ঢেউ কেটে হয়তো কোন ডিঙি যায় ।
সরসর করে উড়ো সাপ ঝাপ দেয় । ব্যাঙ ডাকে, ঝিঁ ঝিঁ ডাকে । কুহকী অন্ধকারে ল্যাম্পপোস্টের আলো খুব নিষ্প্রাণ লাগে । মহুয়া মাতাল গন্ধে ভারি হয়ে ওঠে বাতাস । আমি চোখ বুঁজে গাঢ় নিঃশ্বাস নেই ।
চোখ খুলে চিবুক উঁচু করে ল্যাম্পের দিকে তাকাই । ওখানে আলোপ্রেমি পোকারা ল্যাম্পপোস্টের গলা ধরে ঝুলে আছে । আমি কোমল মুখে তার দিকে তাকাই । সে বলে, চলো ফিরি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।