আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রবাসী তপন দেবনাথ একজন নিভৃতচারী লেখক

লস এঞ্জেলেস প্রবাসী লেখক তপন দেবনাথ একজন প্রচারবিমূখ নির্ভৃতচারী লেখক। বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত তার ১৪ খানা বই প্রকাশিত হয়েছে এবং অমর ২১শে গ্রন্থমেলা ২০১২তে প্যাসেঞ্জারি নামে একটি ছোটগল্প গ্রন্থ এবং দ্বন্দ্বের অবসান নামে একটি উপন্যাস বের হবে বলে জানা গেছে। ইতপুর্বে প্রকাশিত বইগুলো হল হলিউডের ডাইলের পানি, শ্রাবণ মেঘের দিন, বাদল দিনের তিনটি কদমফুল, দিন বদল, ফেরারী নীলিমা, পলাতকের জবানবন্দি, গল্পের খোঁজে, একই বৃত্তে এপার-ওপার, অপরাজিত, স্বপ্ন ভাসে তেপান্তরের মাঠে, অচেনা, নিঃশব্দ রক্তক্ষরণ, নীল আকাশের নীচে ও দি সিটিজেন। তপন দেবনাথের প্রকাশিত বইগুলো ইতিমধ্যে উত্তর আমেরিকা ও বাংলাদেশের পাঠক সমাজ কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে। তপন দেবনাথ ১৯৬৫ সনের ৫ মে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানার বড় মানিকা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।

তাঁর বাবার নাম হরেকৃষ্ণ দেবনাথ, মায়ের নাম চিন্তামনি দেবী। তিন ভাই দু’বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বোরহানউদ্দিন আব্দুল জব্বার কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি ঢাকা চলে যান। ১৯৯০ সনে ঢাকা সিটি করপোশেনে চাকরি নেন। চাকরির ফাঁকে ফাঁকে তিনি পড়ালেখা চালিয়ে যান এবং প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে বি, এ পাশ করেন।

ইতিমধ্যে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র কর্তৃক আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগদান করেন এবং ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমীতে তরুণ লেখক প্রকল্পের ৬ মাস ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। সে সময় ঢাকার কয়েকটি অল্প পরিচিত পত্রিকা যেমন সোনালীবার্তা, রূপালিদেশ, সবুজ বাংলায় তার লেখা নিয়মিত ছাপা হতো। খুব ছোটবেলা থেকেই তপন দেবনাথ লেখালেখি শুরু করেন। ২০০০ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস দি সিটিজেন (বাংলা) প্রকাশ করে ঢাকার ইতি প্রকাশন। নিয়মিত ছোটগল্প ও উপন্যাস লেখা ছাড়াও তিনি সাংবাদিকা পেশার সাথে জড়িত আছেন।

নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিক সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সাথে তপন দেবনাথ গত এক দশকেরও বেশী সময় ধরে জড়িত আছেন। এ ছাড়া নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ঠিকানা, খবর ডট কম, কানাডা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বেঙ্গলি টাইমস, লন্ডন থেকে প্রকাশিত ইউকেবিডিনিউজ, জাপান থেকে প্রকাশিত বিবেকবার্তা, সৌদি আরব থেকে প্রকাশিত মরুপলাশসহ অন্যান্য পত্রিকায় তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হতে দেখা যায়। সাপ্তাহিকের প্রবাসে পাতায়ও তিনি ইদানীং লিখছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তপন দেবনাথ বলেন একজন লেখকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সুদৃঢ় না হলে তার থেকে ভালো লেখা আশা করা যায় না। লেখার চাইতে পড়া হল একজন লেখকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক যদি শিক্ষিত না হন তাহলে জাতি তার থেকে কী আশা করতে পারে? দেশের তুলনায় প্রবাসে সাহিত্য চর্চায় কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তপন বলেন, লেখকের জন্য দেশ এবং প্রবাস বলতে কিছু নেই। দেশ ছেড়ে দূরে বাস করলে লেখায় সে প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা ওঠে আসতে পারে। বাংলাদেশের লেখকদের প্রবাসে যেভাবে সমাদৃত করা হয়, প্রবাসী লেখকদের বাংলাদেশে সেভাবে সমাদৃত করা হয় কিনা প্রশ্নের জবাবে তপন বলেন, বাংলাদেশে প্রবাসী লেখকদেরকে একেবারেই গনায় ধরা হয় না এবং বাংলাদেশের বাইরে যে বৃহত্তর একটা জনগোষ্ঠী আছে এবং তাদের দ্বারাও যে কোনো ভাল সাহিত্য রচিত হতে পারে এটা বাংলাদেশের কোনো সংবাদপত্র বা কোনো প্রকাশক স্বীকারও করতে চায় না। এতে আপনার মনে কোনো ক্ষেদোক্তি আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, কোনো অভিযোগ নেই তবে প্রবাসীরা দেশেরই একটা অংশ একথা স্বীকার করতে তো দোষের কিছু নেই। আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? উত্তরে তপন বলেন, নিরলস লিখে যাওয়া।

প্রবাসে কঠিন জীবন সংগ্রামের পর লেখার সময় কী করে বের করেন প্রশ্নের জবাবে তপন বলেন, খুব কষ্ট করে সময় বের করি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে এমন কি কাজের মধ্যেও লেখালেখির কাজটা চালিয়ে যাই। কেন এত কষ্ট করে লেখালেখি করেন প্রশ্নের জবাবে তপন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং নিজের আনন্দের জন্যই লিখে থাকে। না লিখে আমি থাকতে পারি না। ব্যক্তিগত জীবনে তপন দেবনাথ বিবাহিত এবং পুজা দেবী নামে ১৪ বছরের ও প্রভাতী দেবী নামে ৫ বছরের মেয়ে ও স্ত্রী দীপিকা দেবীকে নিয়ে ২০০১ সন থেকে লস এঞ্জেলেসে বসবাস করছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.