দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে হামলা ভাংচুর সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। তবে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষের আহান সম্ভবত এই প্রথম। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক গ্রামের। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’ গ্রপে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। শুক্রবার এক গ্রপের সমর্থকরা অন্য গ্রপের সমর্থকদের মারধর করলে এলাকায় উত্তেজনা বাড়ে।
এ প্রেক্ষিতে আক্রান্তদের দলীয়প্রধান রাতে মসজিদের মাইক থেকে নিজের কর্মী সমর্থকদের সংঘর্ষের জন্য তৈরি হতে বলেন। মাইকে ঘোষণা শুনে রাতভর সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয় দু’ গ্রপ। সকালে শুরু হয় মুখোমুখি যুদ্ধ। দেশী অস্ত্রের ঝনঝনানিতে কেঁপে ওঠে বিল গ্রামটি। ছয় ঘণ্টা ধরে চলা লড়াইয়ে আহত হয় দু’দলের অর্ধ শতাধিক লোক।
এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ধরনের ঘটনার পেছনে প্রায়ই প্রচ্ছন্ন থাকে রাজনৈতিক বিরোধ। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ নিরীহ ও শান্তিপ্রিয়। সহজে কারও সাতেপাঁচে থাকে না। অল্পকিছু মানুষের সন্ত্রাসী-কার্যকলাপে বিপন্ন হয় তাদের জীবন।
এতে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় তার প্রভাবও কম নয়। আপত দৃষ্টিতে একে গ্রামের অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব মনে হলেও একে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। এ ছোট ছোট ঘটনা সামগ্রিকভাবে প্রভাবিত করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে। প্রাথমিকভাবে ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরূপতার প্রকাশ ঘটলেও পরে এগুলোই অনেক সময় ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। রাজনৈতিক পক্ষ বিপক্ষ তৈরি করে।
এই গ্রামের ঘটনায় কারও নিহত হওয়ার খবর না পাওয়া গেলেও ভবিষ্যতে এর জের ধরে যে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে। প্রকাশ্যে মাইকিং করে সংঘর্ষ আহান করা হলো। পরদিন যথারীতি সংঘর্ষ শুরু হলো কিন্তু পুলিশ পৌঁছাতে পৌঁছাতে পঞ্চাশ জনের বেশি আহত হলো। স্বভাবত প্রশ্ন জাগে পুলিশের গতি এত ধীর কেন।
পুলিশের এ ‘ডাক্তার পৌঁছিবার আগে রোগী মারা গেল’ ধরনের গতিবিধি বদলানো জরুরী। এ ধরনের সংঘাত সহিংসতা কার্যক্রম বন্ধে সবাইকে তৎপর হতে হবে। পুলিশ প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সবার সম্মিলিত চেষ্টায় একটি সুন্দর সমাজ নিশ্চিত হতে পারে। গ্রাম্য সংঘাত, হানাহানি অনেক হয়েছে। মানুষ এসব আর দেখতে চায় না।
সমাজে পরিবর্তনের যে সুর উঠেছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ভালবাসা, ক্ষমা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের বিকল্প নেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।