জবির আন্দোলনে ছাত্রলীগ তান্ডব চালিয়ে দমিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয় । পর দিন সব গুলো কাগজে ছাত্রলীগের কৃর্তির সচিত্র প্রতিবেদন আসলে আন্দোলন দমাতে ভিন্ন কৌশল নেয় প্রশাসন । এবার তারা ধোয়া তোলে আন্দোলনকারীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত (কিন্তু ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা যখন ভিসির কক্ষে তান্ডব চালায় তখন তার লাঞ্ছিত হন না) ! এই কারণে আজ শিক্ষকরা কাল ব্যাচ পড়ে ও মানব বন্ধন করেন । যা দিয়ে জনগণ ও মিড়িয়ার কাছে কৃপা দৃষ্টি কামনা করছে । যদিও তাদের এই অভিযোগ ধোপে টেকে না ।
যে আন্দোলন কারীরা ছাত্রলীগের বর্বর হামলা থেকে নিজেদের বাচাতে পারে না তারা শিক্ষক লাঞ্ছিত করার কথা কিভাবে ভাবতে পারে ? আর এটা কোন সহিংস আন্দোলন নয় । শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ।
আবার অনেক ব্লগার বন্ধু আসিফ মহিউদ্দীন এর পোষ্টে দেখাতে চাচ্ছেন জবিতে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পড়তে চাচ্ছে এবং তাদের মেধাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। কথাটার সাথে একমত হতে পাচ্ছি না । প্রথমত ছেলেরা ১০০ টাকা বেতন দিচ্ছে ( যেখানে অন্যান্য সমমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ২৫ টাকা )।
উন্নয়ন ফির নামে আরও ৫০০০ টাকা নেয়া হচ্ছে । প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার পর যেটা নেয়ার আর বৈধতা থাকে না । ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৫০০০ করে নেয়া হচ্ছে । আর এই ৬ বছরে ছাত্রদের জন্য ৬টা দ্বিতল বিআরটিসির বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে । একটা অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় এর জন্য যার পর নাই অপ্রতুল ।
এর বিপরীতে ৬০০টাকা পরিবহন খরচ নেয়া হচ্ছে । অথচ শিক্ষরা এ বছরই ১ কোটি টাকার ভলভো বাস ও ভিসি ৭০লাখ টাকায় মাইক্রো কিনেছে । দ্বিতীয়ত মেধার যে বিষয়টা বলা হচ্ছে সেটাও পুরোপুরি সত্য না । জবি বা অন্য যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বার ভর্তি থেকে ২য় বার কেউ কেউ ঢাবিতে ভর্তি হচ্ছে । তবে কি করে মানি জবির একটা ছেলে বা মেয়ের চেয়ে ঢাবিতে ভর্তি হওয়া ঐ ছাত্রটি বড় বেশি মেধাবি ! এমনও অনেক ছাত্র আছে যারা ঢাবির নিচের সারির কোন বিষয়ে ভর্তি না হয়ে জবির সিএসই, ফার্মেসি, মাইক্রো বায়োলজি, আইন বিষয়ে পড়তে পছন্দ করেন।
হা ব্যবধান একটা হয় ,তবে সেটা ভর্তি সময় না যতটা , বের হওয়ার পর তার দশক পরিমান । কারণ ঢাবিতে একটা ছেলে ভর্তির পর থেকে যে জামাই আদর ও শিক্ষার পরিবেশ এবং আধুনিক পরিবেশ পায় জবির একটা ছেলের জন্য তা স্বপ্নাতীত । ফলে ঢাবির যে ছেলেটার মেধার মেধার পারদ স্কেল উর্ধ্বমুখী সেখানে জবির ছেলেটার পারদ স্থিমিত । অনেক ক্ষেত্রে নিম্নমুখীও বটে । জবির রসায়ন বিভাগে শিক্ষক ৮জন , গণিত ৮ জন .পদার্থ ১২ ।
এই চিত্র সব বিভাগের । ছাত্র আয়তনে দক্ষিণ এশিয়ার বড় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩০০০ ছাত্রের বিপরীতে ২৭৫ জন । বিজ্ঞানাগারে রয়েছে যন্ত্রপাতির রয়েছে অপ্রতুলতা । এত সব অভাব আর অপ্রতুলতা নিয়ে একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কি ভাবে মেধাবি ছাত্র আশা করা যায় ! তারপরও কর্ম বাজারে জবির ছাত্ররা সফলতার স্বাক্ষর রাখছে । প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর শিক্ষকরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ চলে যায় ।
জবিও সেই একই সমস্যায় পড়েছে । ফলে শিক্ষক ২৭৫ জন হলেও প্রকৃত সংখ্যা আসলে তা নয় । আছে ক্লাস রুমের সমস্যাও । গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পর ভেবেছিলাম এত সব জরাজীর্ণ দশা থেকে বেরিয়ে এসে জ্ঞানের বাতি ঘর হিসেবে আলো ছড়াবে । কিন্তু সে আশা দুরাশা ।
শিক্ষা বাণিজ্যিকী করণের যে চক্রান্ত চলছে তা আরও একধাপ এগিয়ে গেল । কিন্তু আমাদের ছাত্র সমাজ কখনই অন্যায় ও দুরভিসন্ধি মূলক স্বিদ্ধান্তের সামনে মাথা নত করেনি । জবিতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্রজোট আন্দোলনের ডাক দেয় গত ৩ জানুয়ারী । আজ ৫ জানুয়ারী সব ছাত্র সে আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে । সত্য প্রতিষ্ঠা ও দাবি আদায়ের এই আন্দোলন গতি পাক ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।