জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিব্বত হল দখল করে তা ভেঙে ফেলছে সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা হাজী সেলিমের লোকজন। বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আটজন শ্রমিক হলটির দেয়াল ভাঙার কাজ করছেন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামান জানান, হাজী সেলিম তার লোকজন দিয়ে ভবনটি ভাঙছেন।
তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে সাবেক এ সংসদ সদস্য হলটির একটি অংশ দখল করে ‘গুলশানারা মার্কেট’ তৈরি করেন। এখন ঈদের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে তিনি বাকি অংশ দখল করে নিয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল থাকা ১২টি হল উদ্ধারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা অনেকদিন আন্দোলন করে আসছে। সর্বশেষ এ বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা হল উদ্ধারের আন্দোলনে নামলে ছাত্র-পুলিশ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এরপর হলগুলো উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়কে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে আবেদন জানায়। শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে দেখা করে তারা এ সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপিও দেয়।
এ ঘটনার পর সচিবালয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা সচিবের সভাপতিত্বে জবির বেদখল হওয়া হল উদ্ধার সম্পর্কিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনারকে (রাজস্ব) আহ্বায়ক করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১৬ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি দুটি সভা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল থাকা হলগুলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সুপারিশ করে।
জানা গেছে, ১২টি হলের মধ্যে শহীদ আনোয়ার শফিক হল, আজমল হোসেন হল, সাহাবুদ্দিন হল, হাবিবুর রহমান হলে বর্তমানে পুলিশ রয়েছে। এসব হল পুলিশের কাছ থেকে উদ্ধার করে দীর্ঘমেয়াদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সুপারিশ করে কমিটি।
জানা গেছে, হাজী সেলিমের লোকজন তিব্বত হল ভাঙার কাজ শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ তাৎক্ষণিকভাবে ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হিরার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।
মন্ত্রী ঢাকার ডিসিকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার নির্দেশ দেন। উপাচার্য ক্যাম্পাসে এসে জানান, বিষয়টি ভূমিমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, হল উদ্ধারের জন্য ছাত্ররা যখনই আন্দোলনে যায়, তখনই তাদের বুঝিয়ে অন্দোলন থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিব্বত হল ভাঙা নিয়ে এ ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।