আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁটাতারে ঝুঁলছে স্বাধীনতা - মাসুম বিল্লাহ

একজন নির্বোধের বয়ান ‘কাঁটাতারে ঝুঁলছে বাংলাদেশ। ’ চিৎকার করে বলবো একথা। শাস্তি যা দেবে তোমরা, দাও না আমায়। বাদ্য বাজনা, সালাম গ্রহনের মাধ্যমে পালন করা হবে স্বাধীনতার ৪০ বছর। তার আগে ও পরে স্বাধীনতার নমুনা পেলাম, অগনিত লাশ।

স্বাধীনতার উপহার এর চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে? শুনে হাসি পায়, দেশের সকল নেতা-নেত্রীর মুখে স্বাধীনতা নিয়ে মিথ্যে ভাষণ দিতে। সবার ইস্তেহারে প্রাধান্য পায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা। তার নির্মম ব্যবহার। আমার দেশের সীমান্তবর্তী কুষক ভাইয়ের লাশ। দাবী করা হয়, বাংলাদেশ স্বাধীন একটি রাষ্ট্র।

এ কেমন স্বাধীনতা? দেশের সীমান্তবর্তী জনগন মৃত্যুভয়ে ভীত দিনরাত। প্রতিদিন প্রিয়জনের লাশ বুকে নিয়ে ক্রন্দন চলে প্রতিটা দিন। এ সবই স্বাধীন একটা দেশের প্রতি একটা অন্য একটা দেশের স্বীকৃতি! রাতে দেশের কিছু শহুরে কুলাঙ্গার মেতে থাকে অপসংস্কৃতিতে আর ভোরে সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আমার ভাইয়ের লাশ পাঠায়। যখন আমার দেশের শিল্পী ভিসা পায়, আমার দেশের কোন চ্যানেল সেদেশে প্রদর্শনের অনুমতি পায় তখন সে দেশের শিল্পী সকালে এসে বিকালে অপসংস্কৃতিতে ডুবিয়ে যায় আমাদের। এ লজ্জা কার? গীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া কে কবে মেনেছে।

আকাশের পাখি কী মানে, সে কি বোঝে কোনটা তার দেশ? কোনটা তার দেশ? এই আকাশ, এই মাটি সবই তো মহান আল্লাহতালার সৃষ্টি। তবে কী করে মানুষ তার ভাগ বাটোয়ারা করে? করেই যখন তখন কী করে অন্যের জীবন কেড়ে নিতে পারে সীমান্তের দোহাই দিয়ে। যেখানে মানুষ প্রাণীর সেরা সেখানে সে কি করে সীমান্ত মানে? মনে পড়ে ফেলানীল কথা, মেয়েটার কি এতকিছু বোঝার কথা? তাই বলে ফেলানীকে মেরে ফেলতে হবে? তারপর তাকে বোঝাতে হবে, ফেলানী তুই আর সীমান্ত অতিক্রম করবি না বুঝলি, নইলে তোকে এভাবে আবার মরতে হবে!!! ফিলিস্তিন বাসীদের উপরও বুঝি ইসরাইল এমন করে নিষ্ঠুর ব্যবহার করে না। আমরা তো ভারতের জমি দখল করে রাখিনি, বরং প্রতিদিন তারাই সীমানা বাড়িয়ে চলেছে। আমরা নিজেদের জমিতে বাস করছি, চাষ করে ফসল ফলাই তবুও কেন বন্ধু নামধারী প্রতিবেশী দেশটি আমাদের ফসল কেটে নিয়ে যাবে? আমাদের কৃষক ভাইদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করবে? অনেক সময় সে লাশটাও ফেরৎ দেয় না।

সেক্ষেত্রে সাদা পতাকার বৈঠকের আয়োজন করতে হয়। প্রশ্ন জাগে মনে, আমার দেশের সীমান্ত বলতে কি কিছু থাকবে না? আর কতটুকু জমি ছেড়ে দিলে, কেড়ে নিলে আমাদের আর জীবন দিতে হবে না? নিজ মাতৃভূমিতে যখন আমরা নিরাপদ না তখন কী ধরে নেব, আমরা স্বাধীন রাষ্টের নাগনিক নই? নতুন করে আর একটা যুদ্ধ নামতে নামতে হবে? সেটাই বরং ভাল হয়। যুদ্ধ করে বাঁচব, যুদ্ধ করে মরব। অন্যের হাতে আর নয় অসহায় মৃত্যুবরণ। মিথ্যে স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচায় কোন গৌরব নেই।

প্রতিদিন কতজন নিরীহ জনগন সীমান্তে প্রাণ দিচ্ছে জানা আছে কী দেশের নীতি নির্ধারকের? শুধুমাত্র পত্রিকার পাতায় সীমান্তে প্রাণ দেয়া ব্যক্তির সংবাদ ছেপে আমরা দায় এড়াতে পারি না। এতজন মানুষের পরিসংখ্যান দেখেও বুকটা কেঁপে ওঠে না সরকার বাহাদুরের? এ লজ্জা রাখি কোথায়? আমরা তো সাধারন জনগন, আমাদের অনেক কিছু সইতে হয়। কিছু বলা যাবে না, করা যাবে না। শুধু পারি শান্তিপূর্ন মৌন মিছিল, দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি পালন, ছাপানো পোষ্টার নিয়ে মানবন্ধন। আর কিছু করতে পারি না।

আসলে এসব করে কি আদৌও কিছু হয়? নাকি হয়েছে নির্লজ্জ ক্ষমতাবানের, নাকি নিষ্টুর কাপুরুষ খুনীদের? আমার যদি ক্ষমতা থাকত না, অসহায় সীমান্তবর্তী ভাইদের রক্তের বদলা আমি নিতাম। হায় রক্তের বদলা নেওয়ার ক্ষমতা আমার নাই। শুধু পারি বুকের ভিতর ধেকে উঠে আসা থু-থু নিক্ষেপ করতে। আসুন আজ থেকে আমরা শপথ নিই, দেশপ্রেমিক হব। সেইসব খুনির দেশের পণ্য বর্জন করি।

অপসংস্কৃতি আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে মারি। আমাদের জন্যই আমাদের আরেকবার গর্জে উঠতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.