১৯৯৩ সালের দিকে ক্যাসেট প্লেয়ারে করে দেখেছিলাম অমিতাভ বচ্চনের “Don”। পুরাই টাশকি খাইয়া গেসিলাম। ২০০৬ এ আবার হলো সেটার রিমেক। আরে সব প্যাঁচ তো জানাই আছে। কিন্তু নতুন Don এ ছিল Shahrukh Khan।
এতটুকুই মুভি হিট করবার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু এ কী? নতুন পনের ভাব-সাব আর কাহিনীর কঠিন প্যাঁচ দেখে পুরাই হা হয়ে গেসিলাম। ৫ বছর ধরে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এলো সেই Don এর পরের পর্ব Don2। মুভিটি নিয়ে আর কী বলবো? Shahrukh এর অভিনয়, Farhan এর পরিচালনা আর মানুষের উন্মাদনা। আর কী লাগে? কিন্তু মুভিটি দেখার পর মনে হলো কী যেন নেই।
কাহিনী জানা যাক। মালয়েশিয়ার দিক এক্কেরে ফাটায়ে রাজত্ব করা Don ( Shahrukh Khan) এর পরবর্তী টার্গেট ইউরোপ। কিন্তু ইউরোপের লোকেরা আগের থেকেই সজাগ। এইটারে আগেই খতম করতে হইবো। ডনরে তো চিনো না বাপু।
শুরু হলো ডনের এক নতুন চালের সূচনা। যেই ডনরে সব পুলিশ খুঁজে সেই ডন পুলিশরে কয় আমারে ধরেন। আজব তো! মালয়েশিয়ার জেলে সে তার পুরান শত্রু Vardhan ( Boman Irani) কে পায়। সেইখান থেকে দুজন শত্রু দোস্ত হইয়া পালায়ে যায় ইউরোপে। ডনের প্ল্যান হলো কোন এক ব্যাংকের ভিতর থেকে মুদ্রা ছাপার প্লেট চুরি করা।
কিন্তু সাথী সব শত্রুরা। এদিকে ডনরে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান Interpol এর দুই বেকুব Malik ( Om Puri ) আর Roma ( Priyanka Chopra)। অবশেষে ব্যাংকের বস Diwan ( Aly Khan) কে Blackmail করে ব্যাংকের ভিতরের খুঁটিনাটি জানা হলে প্রয়োজন পরে এক হ্যাকারের। অবশেষে পাওয়া যায় Sameer (Kunal Kapoor) কে। ব্যস শুরু হয় ডনের অভিযান।
কিন্তু ডন জানে না যে তার প্রত্যেক সাথী তার বিরুদ্ধে। কিন্তু আগেই বলসি। ডনকে তো চিনো না বাপু।
মুভিটির কাহিনী শুনেই বোঝা যাচ্ছে বেশ দুর্বল। তার চেয়েও বড় কথা মুভির চিত্রনাট্য খুবই খারাপ মানের।
কয়েকটি মজার সংলাপ বাদে মুভিটির চিত্রনাট্যে কিছুই নেই। পুরো মুভিতে মনে হয় যে Shahrukh এরকমই বেকুবের মত এই টাইপ প্ল্যান কেন বানাইলো? কিন্তু সমাপ্তির আগে বোঝাই যায় না যে আসলে Shahrukh কখনই তার প্ল্যান ভুল বানায়নি। এছাড়া মুভিটির প্রথম ভাগের দৃশ্যে মোটামুটি বোঝা যায় যে কী হতে যাচ্ছে। আসল কথা একদম শেষ দৃশ্য বাদে তেমন কোন চমকই নেই।
মুভিটিতে আছে তো সেই Shahrukh Khan।
অসাধারণ অভিনয়। দুর্দান্ত সম্মোহনকারী চরিত্র ডনটি অমিতাভের হলেও এখন কেউ কল্পনাও করতে পারবে না যে এটা শাহরুখ ছাড়া কাউকে দিয়ে সম্ভব। বেশীর ভাগ দৃশ্যেই শাহরুখের ডায়লগ শোনার পর তালি দিতে বাধ্য হতে হয়। তবে পুরো মুভির তুলনায় শেষ ২০ মিনিট শাহরুখকে আরও দারুণ লেগেছে। যেমন হাঁটা তেমন মারধর আবার ৩০০ ফুট উপর থেকে লাফ।
সবই দারুণ।
মুভিতে বাকী কারো অভিনয় একটুও ভালো হয়নাই। Priyanka Chopra ‘র চরিত্রটিই ছিল ফালতু টাইপের। Boman Irani র তো বেইলই নাই। Lara Dutta কে কেন নিসে কে জানে? আর Om Puri কে তো দেখে মনে হইসে সে হিন্দী সিরিয়ালের শ্বশুড় ছাড়া কোন অভিনয় আগে করেই নাই।
তবে ৫ মিনিটের জন্য এক অতিথি শিল্পীকে দেখে কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছে শাহরুখরে বাদ দিয়া এইটারেই নায়ক রাখো।
মুভির সংগীত একেবারে মাঝারী মানের। ২০০৬ এ যেখানে বেশ দারুণ সংগীত দিয়েছিল Shankar – Ehsaan – Loy। সেখানে এবার চেষ্টা করা হয়েছে একটু অন্যরকম করতে। কিন্তু কিছুই হয় নাই।
ভাবসে শাহরুখ থাকতে আমাগো আর কী কাম?
মুভিটিতে আছে খালি স্টাইল। জার্মানিতে করবো শ্যুটিং। কিন্তু জার্মানী এর আগে শুধুমাত্র Tom Cruise এবং Brad Pitt কে মুভি করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু শাহরুখের নাম শুনে কী অনুমতি না দিয়ে পারা যায়। শাকিব খান কবে যে জার্মানী যাবে!
মুভিটিতে খুবই হতাশ হয়েছি Farhan Akhtar এর নির্দেশনা দেখে।
এত বড় মাপের একজন পরিচালক। অভিনয় করতে করতে নিজের পরিচালনার ধারই হারিয়ে ফেলেছে।
মুভিটি শাহরুখ খানের ভক্তদের জন্য দেখা অবশ্য কর্তব্য। সব মিলিয়ে কিছুটা হতাশাজনক।
রেটিং – ২.৫ / ৫
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।