মধ্যপর্ব:
গাঢ় সালফিউরিক এসিডের এমনতর ব্যবহার যে শাওনকে করতে হবে তা সে আগে কখনো ভাবেনি। সে কারখানায় কেমিস্ট হিসেবে এই এসিডের ব্যবহার করে আসছে সবসময়। কিন্তু কারো মুখ ঝলসে দেয়ার জন্য এই এসিড সে ব্যবহার করবে তা সে কখনো কল্পনা করেনি। আজ বাধ্য হয়েই এ কাজটা করতে হলো তাকে! নীলার মুখ ঝলসে দিতে হলো। কাজটা করতে কি ওর মোটেও কষ্ট হয়নি? হয়েছে! প্রচন্ড কষ্ট হয়েছে! দাঁতে দাঁত চেপে কাজটা করতে হয়েছে তাকে।
তবে সাবধান থাকতে হয়েছে বেশ। কেউ যাতে ওকে দেখে না ফেলে। এমনকি নীলাও যাতে ওকে ঘুনাক্ষরে সন্দেহ না করে সেদিকেও যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হয়েছিল। যাই হোক, সে যে সফল হয়েছে তাতেই সে সুখী। প্রচন্ড কষ্টের মধ্যেও মাঝে মাঝে যে সুখের ছোঁয়া পাওয়া যায় এ অভিজ্ঞতা এই-ই প্রথম।
আদিপর্ব:
শাওন, নীলা একে অন্যকে ভালবাসতো। খুব ভালবাসতো। কিন্তু তাদের এই ভালবাসাতে বাঁধ সাধলেন নীলার বাবা-মা। তারা কখনোই চাইলেননা নিচু বংশজাত শাওনের সাথে নীলার বিয়ে হোক। নীলাও চাইলনা তার বাবা-মাকে কষ্ট দিতে।
সে তার নিজের কষ্ট, শাওনের কষ্ট - সব মেনে নিলো। তাদের এই আলাদা থাকাটাকেই ভবিতব্য হিসেবে মেনে নিলো সে। কিন্তু শাওন কি এই ব্যাপারটা সত্যিই মেনে নিতে পেরেছিল?
শেষপর্ব :
কয়েক বছর পরের ঘটনা। শাওন আর নীলা এখন সুখী দম্পতি। নীলার মুখ ঝলসে যাবার পরে নীলার বাবা-মার স্বপ্নটাও ভেস্তে গেল চিরতরে।
তারা ভেবেছিল মেয়েকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার দেখে উচ্চবংশীয় ছেলের কাছে বিয়ে দেবেন। তাদের সে ইচ্ছের অকাল মৃত্যুতে তারা একেবারে বিমর্ষ হয়ে গেলেন। এতটাই অসহায় হয়ে পড়লেন যে, যখন শাওন দ্বিতীয় বারের মতো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসলো তখন তাকেই তাদের কাছে অচীনপুরের রাজপুত্রের মতো মেনে হলো। ফলশ্রুতিতে বিয়ে হয়ে গেল শাওন আর নীলার। তারা এখন সোহাগে ভালবাসায় দিন যাপন করছে।
তবে নীলা কিন্তু আজও জানেনা, কে সেদিন নীলার মুখে এসিড ছোঁড়ে মেরেছিল। ঝলসে দিয়েছিল নীলার মায়াবী মুখ। শাওন ও আজ পর্যন্ত নীলাকে বলেনি কথাটা, বোধহয় বলবেও না কোনোদিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।