তুমি রবে নীরবে...
গতদিন আমার হাসপাতামে থাকার কিছু অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলাম, আজকে বাকি কথাগুলো লিখবো।
হাসপাতালে প্রথমে আমার রুম ছিলো ৫০৪, সেখানের নার্সগুলি বেশ ভাল ছিলো আর আমাকে আপনি আপনি করে বলতো, আর বেশ হাসিখুশি ও ছিলো। কিন্তু কিছুদিন পর ৬১২ নং বুমে চলে যাই, কিন্তু সেখানের নার্সরা অনেক বড় ছিলেন, আমার সাথে এমনভাবে কথা বলতো যেনো আমি একটা বাচচা ছেলে... তো তাদের সাথে কোনো মজা করতে পারি নি, তবে এক ডাক্তার আর সাথে ছোট্ট একটু মজা করেছিলাম।
হাসপাতালে থাকার সময় সবচেয়ে বিরক্তিকর সময় ছিলো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত, কারন ততক্ষন আমাকে স্যালাইন নিয়ে শুয়ে থাকতে হত, আর আর মধ্যে ২বার পিচ্চি (মানে ইন্টার্নি) ডাক্তার এসে দেখে যেতো। দেখা বলতে কেমন আছি, কোনো সমস্যা আছে কিনা এসব জিজ্ঞাসা করতো।
একদিন ডাক্তার এসেছে, আর আমার মা বাবা কেউ নেই তখন রুমে, এসে যথারীতি প্রশ্ন, কেমন আছেন? এই ডাক্তার ছিলেন সব চেয়ে ছোটো অন্যদের চেয়ে, আর খুব সেজেগুজে আসতেন (আর বিশাল ভাব নিয়ে চলাফেরা করতো...)। তো তখন যেহেতু কেউ ছিলো না মনে হলো একটু মজা করি। বললাম, ভালো না। উনি তো বিশাল ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো, কি হয়েছে? আমি অনেক কস্টে হাসি চেপে বললাম, দেখছেন না, জন্ডিস হয়েছে। এটা শুনে নার্স সাথে সাথে হেসে দিলেন, আর ডাক্তার এর মুখ পুরো লাল হয়ে গেলো, তারপর উনি কোনো রকমে ব্লাড প্রেসার মেপে চলে গেলেন।
পরে নার্স বলেছিলো যে, ওই ডাক্তার প্রথমে খুব রাগ করলেও পরে নাকি নিজেও অনেক হেসেছে আমার কথা মনে করে...
হাসপাতালে থেকে আরেকটা কাজ করেছি, সারাদিন বসে থেকে থেকে একসময় কবিতা লেখার চেস্টা শুরু করলাম। প্রথমদিন এক লাইন লিখে বসে আছি, পরের লাইন আর মনে আসছে না। এমন সময় এক মামা ফোন করলেন খবর নেয়ার জন্য। তাকে বললাম যে কবিতার লাইন পাচ্ছি না। উনি যা সাহায্য করলেন তাতে কবিতাটা দাড়ালো এমন,
“বনের মধ্যে মাঠ চলেছে সরু,
তুমি আর আমি যেনো দুটি গরু।
প্রভাতে ঊঠেছে সুর্য লাল,
আমি আজ খেয়েছি মশুরের ডাল। । “
এই অবস্থা দেখে বুঝলাম কবিতা লেখা আমার কাজ না। তবুও অনেক কস্ট করে কিছু লাইন লিখেছিলাম পরে। হাসপাতালে একদিন হঠাৎ বেশ জ্বর এসেছিলো, জানি না সেদিন কেনো যেন একজনের কথা খুব মনে পড়ছিলো, সেদিন কয়েকটা লাইন লিখছিলাম.....
১।
“শিশির ভেজা ঘাসে, তুমি হেটেছো কি কখনো?
কখনো কি পেয়েছো সেই স্নিগ্ধ ছোঁয়া?
কুয়াশার চাদরে নিজেকে ঢেকে কখনো কি দেখেছো নতুন ভোর?
এই সব স্বপ্ন, টুকরো স্মৃতি, কখনো কি যাবে ভোলা?”
২। “সবুজ ঘাসের উপর তোমার লাল আঁচল,
ভালোবাসতে শেখায় আমায়,
তোমার হাতের ওই লাল চুড়িগুলো,
আমার প্রাণে নতুন স্পন্দন জাগায়,
তোমার মুখের ওই একটুখানি হাসি,
আমার মনে নতুন আশার দোলা দেয়,
তোমার চোখের সেই দৃষ্টি,
স্বপ্ন দেখতে শেখায় আমায়,
তোমার সব স্মৃতি, তোমার সব কথা,
আমাকে নতুন করে প্রেরণা জাগায়। । “
যদিও কোনো ভাবেই এগুলোকে কবিতা বা ছড়া কোনো কিছুর মধ্যেই ফেলা যায় না, তবুও লেখলাম। কারন ... থাক, কারণটা না হয় নাই বললাম...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।