আপাতত স্ট্যাটাস দেবার মত স্ট্যাটাস খুজছি .........ফেবুতে https://www.facebook.com/stimulators তে আছি ।
গতকাল সন্ধ্যায় সিলেটের বাদাঘাট এলাকায় বেড়াতে গিয়ে খুন হয় শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র অনীক এবং খায়রুল। তারা বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব মিলে সেখানে বেড়াতে গিয়ে নদীতে নৌকাভ্রমণ করার সময় নৌকার মাঝির কারসাজিতে এক জায়গায় বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারী নৌকায় উঠে। ছিনতাইকারীদের অস্ত্রের মুখে সাথে থাকা মোবাইল এবং টাকা দিয়ে দেয়ার পর দুজনকে তারা ছেড়ে দেয়। তারপর নৌকায় থাকা অনীক এবং খায়রুলকে ছিনতাইকারীরা নির্মমভাবে মারার এক পর্যায়ে তারা নদীতে পড়ে যায়।
এর মধ্যে খায়রুল সাতার জানতো। কিন্তু তার মাথায় বাড়ি দেয়াতে সে বেশীদুর সাতরে তীরে পৌছাবার আগেই নদীতে তলিয়ে যায়। আর অনীক সাতার না জানায় সে সেখানেই ডুবে যায়।
সন্ধ্যায় খবর পাওয়ামাত্রই ভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের ছাত্ররা ভীড় জমাতে থাকে নদীর পাশে। রাতে অনীকের এবং ভোরবেলায় খায়রুলের মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এখন পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে শোকের ছায়া।
এই দুজনের মৃত্যুর সাথে সাথে বেশ কিছু ঘটনা ঘটায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সাধারণ ছাত্ররা।
প্রথমত, গতকাল ঘটনা ঘটার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু প্রক্টর অনেক দেরীতে ঘটনাস্থলে পৌছান। তিনি কোন ডুবুরীর ব্যবস্থা করেননি।
বলতে গেলে তিনি বিষয়টা সিরিয়াসলি নেননি। ছাত্ররাই নিজেরা ডুবুরীর ব্যবস্থা করে লাশ উদ্ধার করে। প্রশাসনের এ অনিয়ম চোখে পড়ে সবার।
সবচেয়ে দু:খজনক ঘটনাটি ঘটে ভোরে একটি লাশ যখন নদী থেকে তোলা হয় তখন। ফারুক নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন শিক্ষক মুখে সিগারেট নিয়ে নদীর পাড়ে ছিলেন।
লাশ তোলার সময় তিনি লাশের এক হাত দূরত্বে ছিলেন এবং তার মুখ থেকে নির্গত ধোয়া মৃতদেহের মুখে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ রকম গা ছাড়া আচরণে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে ছাত্রছাত্রীরা। তারা লাগাতার অবরোধের ডাক দেয়। উত্তম পুরুষে না বলে প্রথম পুরুষেই বলি।
আমরা তিন দফা দাবী পেশ করি কর্তপক্ষের কাছে।
১) প্রক্টরের পদত্যাগ
২) ফারুক সারের মিডিয়ার সামনে ক্ষমা প্রার্থনা।
(বেশ কয়েক মাস আগেই সিলেটের এক পত্রিকায় ফারুক স্যারকে দুর্নীতিবাজ বলায় স্যার প্রতীকি অনশন করেছিলেন ক্যাম্পাসে। আমরাও সাথে ছিলাম। আজ সেই স্যারের কাছ থেকে এই ব্যাবহার আমরা আশা করিনি।
)
৩) ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনীদের গ্রেফতার করতে না পারলে লাগাতার ধর্মঘট।
সবসময়ের মতই এ ঘটনাকে কাজে লাগাতে তৎপড় হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠন। কিন্তু আমাদের আপ্রাণ চেষ্টার ফলে আন্দোলন এখনো সাধারণ ছাত্রদের হাতেই আছে এবং থাকবে। আমার দুই ভাইয়ের হত্যার বিচারের দাবীকে কাজে লাগিয়ে কেউ ব্যবসা করবে তা আমি হতে দেবোনা।
আমরা সাধারণ ছাত্ররা কোন এলাকাবাসীর ক্ষতি চাইনা।
আমরা চাই দোষীদের বিচার। কিন্তু পলিটিক্যাল কর্মীরা ভাংচুর শুরু করে দেয়। এদেরকে আমরা থামাই। কেউ যাতে ফায়দা না লুটে সে ব্যাপারে আমরা লক্ষ্য রাখছি।
তবে এখন একটা মজার এবং একইসাথে দু:খের ব্যাপার শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
নীচের ছবিতে যাকে দেখছেন তিনি ছাত্রশিবিরের একজন কর্মী। আমরা যখন ভার্সিটির গেটে অবস্থান নেই এবং শ্লোগান দেই তখন এই ব্যক্তি চিৎকার করে কি বলছিলো জানেন?
“আমি ছাত্র হত্যার বিচার চাইনা। আমি জাফর ইকবালের ফাসী চাই। ”
তার এই কথায় সবাই ক্ষেপে উঠে। তাকে পরে সরিয়ে নেয়া হয় এবং ডিপ্লোম্যাটিক্যালী কথা বলে আমরা নিশ্চিত হই যে সে শিবিরের কর্মী এবং জামাতে ইসলামীর সদস্য।
এবং ছাত্র মারা গেলে তার কিছু আসে যায় না। সে চায় জাফর ইকবালের ফাসী।
আমি সাধারণ এবং নিরপেক্ষ ছাত্র। এই মন মানসিকতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং শিবিরে কর্মীদের কাছে জবাব চাই।
আমাদের অবরোধের মুখে ভিসি স্যার আসেন(উনি গতকাল ছিলেন না সিলেটে।
) এবং আমাদের দাবী মেনে নেন। আগামী তিন দিন ক্যাম্পাসে শোক এবং বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উনার কথার প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা সাময়িকভাবে অবরোধ তুলে নিয়েছি এবং উনাকে বলেছি যে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আসামী ধরা না পড়লে আন্দোলন আরো বিশাল আকার ধারণ করবে।
আরো হতাশাজনক ব্যাপার হল যে, কিছু সিলেটি সাংবাদিক চেষ্টা করছিলেন স্থানীয় এলাকবাসীকে আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে। তবুও আমরা শিক্ষিত বলে উনার গায়ে হাত না তুলে বের করে দিয়েছি।
আমাদের সাধারণ ছাত্রদের একটাই দাবী । আমাদের দুই ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই। দেশের সবার কাছে সহযোগীতা কামনা করছি। কারণ এমন ঘটনা আপনার ভাইটার সাথেও হতে পারতো।
[আমি মানসিকভাবে অনেক ভেঙে পড়েছি।
তাই লেখাটা এলোমেলো হয়ে গেছে। ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।