A LITTLE MAN FROM SARAIL আরিফুল ইসলাম সুমন, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
সরকার প্রতিবন্ধী শিশুদের স্বাবলম্বী করতে নিয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। শিক্ষা ক্ষেত্রে দিয়েছে উল্লেখযোগ্য সুযোগ সুবিধা। তাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য গ্রহণ করছে বিভিন্ন প্রকল্প। কিন্তু সরাইলের চালচিত্র ভিন্ন। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিবন্ধী শিশু।
তারা অধিকাংশই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক শিশু কাগজে-কলমে ভর্তি থাকলেও নানান প্রতিকুলতায় তারা স্কুলের শিক্ষাদান থেকে রয়েছে দূরে। অভিভাবকদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের অবহেলা-গাফিলতি, সঠিক তদারকির অভাব ও নেতিবাচক মানসিকতার কারণেই এমনটি ঘটছে। এলাকার বেশীরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে অবজ্ঞার চোখে দেখছে। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্বেও এখানকার প্রতিবন্ধী শিশুরা সম্পদে পরিণত হতে পারছে না।
দিন দিন তারা হচ্ছে দেশের বোঝা। শিক্ষা থেকে দূরে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক’জন প্রতিবন্ধী শিশুর অসহায় পিতা-মাতা।
ওদিকে সম্প্রতি উপজেলার বেশকিছু প্রাইমারী স্কুল ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকরা কাগজে কলমে বিদ্যালয়ের খাতায় প্রতিবন্ধী শিশুদের ভর্তি দেখালেও বাস্তবে তাদের উপস্থিতি অতিনগন্য। এ ব্যাপারে শিক্ষকদেরও তেমন কোনো আগ্রহ নেই। স্কুলে না আসলেও এসব শিশুর খোঁজ-খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না অনেক শিক্ষক।
কালীকচ্ছ উত্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি খাতায় দুই জন প্রতিবন্ধী শিশুর নাম রয়েছে। এর মধ্যে ৫ম শ্রেণীতে পড়–য়া তাছলিমা আক্তার মাঝে মধ্যে স্কুলে এলেও শিশু নাঈমা আক্তার আসে না। কারণ জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রৌশনআরা বেগম জানান, শিশুটির বাড়ি মনিরবাগ গ্রামে। সড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। সড়কে বেপরোয়া গতিতে চলাচলকারী যানবাহন দেখে শিশুরা ভয় পায়! তাই সে স্কুলে আসছে না।
দক্ষিণ কালীকচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা নান্টু চন্দ্র দাস। তার মেঝো কন্যা রিমা দাস (১৩) প্রতিবন্ধী। সে বাবা-মাকে ডাকতে পারে। অন্যের কথাবার্তা শুনে উত্তরও দেয়। ছোট বোন বৈশাখী দাসের (১১) বই খাতা নিয়ে পড়ালেখার চেষ্টা করে।
পিতা নান্টু দাসের প্রবল ইচ্ছে ছিল মেয়েকে লেখাপড়া শিখানোর। যাতে বড় হয়ে নিজে কিছু একটা করতে পারে। সূর্যকান্দি গ্রামের হাফিজ মিয়ার পুত্র ছাদেক (১৪)। তার ডান হাত নেই। লেখাপড়ার ইচ্ছে প্রবল।
একই গ্রামের আলমগীর মিয়ার শিশু কন্যা প্রতিবন্ধী। শিশুটিকে গ্রামের স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে বিমূখ হয়ে ফিরতে হয়েছে। শিক্ষকরা নানান সমস্যা তুলে ধরেন শিশুটির পিতার কাছে। নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আবু সাক্কার মোতাইদের কন্যা সাইতা আক্তার (১০)। প্রতিবন্ধী শিশুটির লেখাপড়া করার ইচ্ছে রয়েছে।
অভাবের সংসার। তাই পরিবারের লোকজন জোগান দিতে পারছেন না। অভিভাবকরা জানায়, তারা এসব শিশুদের ভবিষত জীবন নিয়ে দুশ্চচিন্তায় রয়েছেন। তারা এসব শিশুদের কারিগরী শিক্ষা দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছে সরাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমতা কর্মকার জানিয়েছেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর সংখ্যা ২শ’ ২৮ জন। এদের মধ্যে ১শ’ ৬৬ জন শিশু বিভিন্ন প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি রয়েছেন।
বাকি ৬২ জন শিশু অধিক মাত্রায় প্রতিবন্ধী। তাদের তালিকা ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলার সকল প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকদের বলা আছে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানে আন্তরিক ভূমিকা পালন করতে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।