জেলার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কাছে মেঘনা নদীতে মর্মান্তিক লঞ্চ দুর্ঘটনায় ২৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১২, মহিলা ১০ ও শিশু ৬ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছে অর্ধশতাধিক যাত্রী ।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ১টার দিকে ভৈরব থেকে সুনামগঞ্জ উপজেলার সাসনা যাবার পথে এমভি বিপাশা নামক অতিরিক্ত যাত্রী ও মার বোঝাই লঞ্চটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুরে মেঘনা নদীতে ডুবন্ত একটি ট্রলারে ধাক্কা লাগে। এরপরই বিপাশা লঞ্চটি ডুবে যায়।
লঞ্চটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল । এর মধ্যে ২৭ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে । যাত্রীদের অনেকে সাতরিয়ে তীরে উঠেন ।
বৃহস্পতিবার সকালে চারটি লাশ পানিতে ভেসে উঠলে স্থানীয় জেলেরা সেগুলো উদ্ধার করে ।
এদিকে ঘটনার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় ফায়ার বিগ্রেডের স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাসমর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের ডুবুরি দল উদ্ধার কাজে নামে।
বিকেল পর্যন্ত ২৭টি লাশ উদ্ধার হয়।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হচ্ছে, নরসিংদী রায়পুরার শ্যামা বিবি (৭০), তার নাতি আবু কাউসার (১৫), জাহেরা খাতুন (৫০), নাদিম(৪), সুনামগঞ্জের মোঃ সজীব (১৫), রেজভী (২০), কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের এলাচি বেগম (৫০), আঙ্গুরা বেগম(২৮) ও তার মেয়ে তানজিনা (১), নগেন্দ্র(৩০), ভৈরবের সীমা (১২), ইটনার জয়া খাতুন (৫০), পূর্বগাঁয়ের শামা খাতুন (৩০), নেত্রকোনা জেলার কালিয়ামুড়ির বাবু (৩৫), লঞ্চের ইঞ্জিনচালক কালাম (২৪)। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি ।
লঞ্চ দূঘটনার খবর পেয়ে আশপাশ এলাকার হাজার হাজার মানুষ মেঘনা তীরে ভিড় করে । স্বজনদের খোঁজে দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ এসেছে এখানে ।
লাশ শনাক্তের পর স্বজনহারাদের আহাজারিতে এক বেদনাবিধূর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলছে । এদিকে সকালে উদ্ধার কাজ দেরি হওয়ায় ক্ষোভের সৃস্টি হয় । এতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। এছাড়া র্যাব ৯-এর একটি দল ঘটনাস্থলে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল মান্নান, পুলিশ সুপার জামিল আহমেদ, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকউদ্দিন ঠাকুর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিনসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে যান এবং উদ্ধারকাজ তদারকি করেন । এদিকে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম সন্ধ্যা নাগাদও ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি।
লঞ্চ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের আনোয়ার হোসেন জানান, বুধবার রাত ১২টায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি বিপাশা নামক যাত্রীবাহি লঞ্চটি সুনামগঞ্জের সাসনার উদ্যেশে ছেড়ে যায়। রাত আনুমানিক দেড়টায় সরাইল উপজেলার রাজাপুরের কাছে মেঘনা নদীতে ডুবে থাকা একটি কার্গো জাহাজের সাথে ধাক্কা খেয়ে বিকট শব্দে তাৎক্ষণিক লঞ্চটি পানির নিছে তলিয়ে যায়। এ সময় লঞ্চের উপরে থাকা অর্ধশতাধিক যাত্রী লাফিয়ে তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
তখন অধিকাংশ যাত্রীই ঘুমে ছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।