মিলে মিশে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ! মিশরের জাতীয় নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুড এগিয়ে আছে। অনেকদিনের দূর্ভোগ-দুর্দশা পোহানোর পর আজ হাসান আল বান্নার এই দলটি আল্লাহর ইচ্ছায় সফলতার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিজয়ের এই মুহূর্তেও তারা জনগণের স্বাধীন ইচ্ছার প্রতি সচেতন, ইতিমধ্যেই তারা ঘোষণা দিয়েছে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের উপর জোর করে ইসলামী আইন চাপানো হবে না। এটা তো এ কথারই প্রতিফলন যে ধর্মের ব্যাপারে কোন জোরাজুরি নেই। তাদের কাছ থেকে আমাদের দেশের ইসলামী দলগুলোর অনেক কিছু শেখার আছে।
[আমি এই পোস্ট যে লেখাটি থেকে লিখছি সেটা মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রাক্তন নেতা মুস্তফা মাশহুর কর্তৃক লিখিত পাঁচ খন্ডের ‘The laws of Da’wa (Islamic missionary activity)’-র পঞ্চম খন্ড ‘Jihad is the way’-র উপর লেখা একটা আর্টিকেল থেকে। যেটা লিখেছেন Itamar Marcus এবং Nan Jacques Zilberdik। মূলতঃ এখানে তারা বইটির মূল উপপাদ্য বিষয় তুলে ধরেছেন।
মুস্তফা মাশহুর ১৯৯৬ সাল থেকে তার মৃত্যুকাল ২০০২ সাল পর্যন্ত মুসলিম ব্রাদারহুডের অফিসিয়াল নেতা ছিলেন।
আমি এখানে কোন আক্ষরিক অনুবাদ বা ভাবানুবাদ করছি না।
কেবল আর্টিকেল থেকে কিছু কথা এখানে নিজের ভাষায় সংক্ষেপে লিখছি।
মূল আর্টিকেলটি আগ্রহীরা এই লিঙ্কে ] গিয়ে পড়ে দেখতে পারেন। আমার আগ্রহ মূলতঃ মূল বইটি সম্পূর্ণ পড়া, কিন্তু সেটা আমার কাছে নেই।
এই বইতে মুসলিম ব্রাদারহুডের আদর্শসমূহের মূল ধারণাগুলো দেয়া হয়েছে যেমন, তাদের ইসলামী রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্য, ইসলামের মাধ্যমে সারাবিশ্বে প্রভাব বিস্তার করা, সশস্ত্র জিহাদের সামষ্টিক এবং ব্যক্তিগত ধর্মীয় দায়িত্ব এবং জিহাদের সঠিক ও উপযুক্ত সময় সঠিকভাবে নির্ধারণ ইত্যাদি। বইটিতে মুসলিমদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ লাভের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি এবং উপযুক্ত সময় ব্যতীত জিহাদের ব্যাপারে যেন তাড়াহুড়ো করা না হয়।
মুসলিম ব্রাদারহুডের উদ্দেশ্যঃ
মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব
মুসলিম উম্মাহর পক্ষে সম্ভব তার ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা, এবং আল্লাহ যে পথ বাতলে দিয়েছেন সে পথের উপর অধিষ্ঠিত হওয়া, এবং সবচেয়ে উন্নত জাতি হিসেবে মানবতার পথপ্রদর্শক হওয়া। মুসলিমদের নিজেদের অবস্থান বুঝতে পারা উচিত, এবং শত্রুরা তাদের পতন আশা করা সত্ত্বেও মুসলিমদের পক্ষে বিশ্বের নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে যে জিহাদের প্রস্তুতি নেয়া মানে আল্লাহর শত্রুদের অপমান বা আক্রমণ করা নয়। বরং জিহাদের উদ্দেশ্য হলো ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, ধর্মকে শক্তিশালী করা এবং সারাবিশ্বে তা ছড়িয়ে দেয়া। আর আল্লাহর পথে জিহাদ কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলভিত্তিক জিহাদ নয়, মুসলিমদের ভূমি একটাই আর তা হলো পুরো বিশ্বটাই।
কোন কোন অঞ্চলে ইতিমধ্যে জিহাদ শুরু হয়েছে, কেউ কেউ জয়ের পথে এগিয়েও যাচ্ছে, অন্যান্য অঞ্চলেও ইসলামকে মুক্ত করতে হবে, মুসলিমদের ভূমি পুনরুদ্ধার করতে হবে, মোদ্দাকথা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
পদ্ধতিঃ জিহাদ – অবশ্যকরণীয় ধর্মীয় দায়িত্ব (ফরজ)
সশস্ত্র জিহাদ, যখন কেউ ইসলামী জাতির উপর আঘাত হানে তাদের বিরুদ্ধে। মুসলিম যুবকদের অবশ্যই মুসলিম বিশ্বের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে যেমন ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরিত্রিয়া, ফিলিপিন সম্যক ধারণা থাকতে হবে। এগুলো কোন আঞ্চলিক বা জাতিগত বিষয় নয়, বিশ্বাস এবং ধর্মীয় বিষয়। এখানে আলোচনা বা শত্রুর ইসলামি ভূমি অধিকার স্বীকৃতির কোন উপায় নেই, সরাসরি জিহাদ।
[এখানে লেখকের সাথে আমার কিছু ভিন্নমত আছে বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে, লেখাটা কেবল লেখকের বক্তব্য হিসেবে পড়তে হবে]
যৌবনের আবেগের বশবর্তী হয়ে অতি উতসাহী অপরিণত চিন্তাভাবনার কোন কাজ করা উচিত নয় যাতে করে সেটা ইসলামী আন্দোলনের উপকার করার চেয়ে লংটার্ম ক্ষতিই করবে।
সময়জ্ঞানঃ তাড়াহুড়ো না করা, সতর্কভাবে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেয়া
আবেগের বশবর্তী হয়ে এমন কোন অপরিণামদর্শী, পরিকল্পনাবিহীন কাজ করা উচিত নয় যা বাস্তবতাবর্জিত, এমনকি অনেকসময়ে সেটা ইসলামী কার্যক্রমকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। আল্লাহর শত্রুরা যেকোন আক্রমণের জবাব তাতক্ষণিকভাবে দিতেই হবে এমন কোন কথা নেই, যখন সামর্থ্য হবে, উপযুক্ত পারিপার্শ্বিক অবস্থার সৃষ্টি হবে তখনই কেবল সেটা দেয়া উচিত। নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে, যুদ্ধের কলাকৌশল ভালভাবে রপ্ত করতে হবে, আইন কানুন বা আচরণবিধি ভালভাবে জানতে হবে। জিহাদ হবে শুধু আল্লাহর জন্যই, আর কোন কিছুর জন্য নয়।
প্রত্যেক মুসলিমের জন্যই জিহাদের প্রস্তুতি নেয়া, জিহাদের নিজেকে নিয়োজিত রাখা, সবসময়ে নিজেকে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ রাখা ফরজ।
ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যঃ শাহাদাত
Allah is our goal, the Prophet is our leader, the Quran is our constitution, the Jihad is our way, and the death for Allah is our most exalted wish.
এই লাইনটা ইংরেজিতে রাখতেই কেন জানি ভাল লাগলো।
বিশ্বাসের শক্তির সাথে সাথে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের শক্তির কোন বিকল্প নেই। জিহাদের ব্যাপারে মুসলিম ব্রাদারহুডের দৃষ্টিভঙ্গী কি এ নিয়ে নানান প্রশ্ন করা হয়, যেমনঃ জিহাদ মানে কি অমুসলিমদের ভয় দেখিয়ে জোর করে মুসলিম বানানো? পূর্ব-পশ্চিমে যারা তোমাদের থেকে ক্ষমতাবান এবং শক্তিশালী তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর নামে লড়তে চাও? জিহাদের নামে মুসলিম যুবকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছ, তাদের শত্রুর মুখের সামনে পাঠিয়ে দিচ্ছ? আবার অনেক আবেগপ্রবণ যুবকের অভিযোগ, মুসলিম ব্রাদারহুড আজ অস্ত্র হাত থেকে ফেলে দিয়েছে, তারা ধীরে চল নীতি গ্রহণ করেছে, সশস্ত্র জিহাদকে নিরুতসাহিত করছে? এমনকি কেউ কেউ এমনও বলছে, তোমরা কি যুবকদের দৈহিক আর মানসিক শক্তি দুর্বল করে দিচ্ছ, তাদের জিহাদ করার স্পৃহা নষ্ট করে দিচ্ছ? কতদিন তোমরা জিহাদ ছাড়া কেবল দাওয়াত আর শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে থাকবে, এদিকে শত্রুপক্ষ বারে বারে আক্রমণ করে যাচ্ছে? আর তোমরা তাতে বাঁধা না দিয়ে কেবল আত্মসমর্পণ করে যাচ্ছ?
এসব উত্থাপিত নানা প্রশ্নের জবাব দিতেই এই বই লেখা হয়েছে।
ইসলাম ধর্ম কেবল মাত্র প্রভু-দাসত্বের সম্পর্ক নয় যে কেবল মাত্র ইবাদতবন্দেগী করেই সময় পার করবে।
আর কারো প্রতি কোন নজর দিবে না। না, ইসলাম এরকম ধর্ম নয়। ইসলাম একটি সম্পূর্ণ জীবন বিধান যেখানে মানবজীবনের প্রতিটি অধ্যায়, প্রতিটি ক্ষেত্রকে বিবেচনায় আনা হয়েছে, এখানে মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সব বিষয়ের প্রতিই আলোকপাত করা হয়েছে। মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র এবং বৃহত বিষয়াদির প্রতি নজর দেয়া হয়েছে।
এটা হলো এক জাতি, এক সমাজ, এক কেবলার, এক বইএর ধর্ম।
এটা সারা মুসলিম জাহানকে একটা শরীরে পরিণত করেছে, যার কোন একটা অংশ আঘাতপ্রাপ্ত হলেই ব্যাথা অনুভব হবে। তখন শরীরের বাকী অংশগুলো এই ব্যাথা উপশমের প্রক্রিয়ায় অংশ নিবে।
তাহলে এটা কি সম্ভব এ ধর্মের অনুসারীদের পক্ষে নিজের ধর্মের সব নিয়ম-কানুন ঠিকভাবে পালন করে অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাসে আঘাত না হেনে, তাদেরকে তাদের ধর্ম পালন করতে বাঁধা না দিয়ে সহাবস্থান করা?
জিহাদের ক্ষেত্রে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রশ্ন!!
কোরআনে বিভিন্ন আয়াতে জিহাদের গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে শহীদের মৃত্যুই সবচেয়ে বড় সম্মানের। যারা জিহাদকে নানা উসিলায় এড়িয়ে যাবে, তাদের জন্য কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারী দেয়া আছে।
আল্লাহতাআলা মুসলিমদের জন্য জিহাদ ফরজ করেছেন আগ্রাসনের জন্যে নয়, ব্যক্তিগত লাভের জন্যও নয়, শুধুমাত্র ইসলাম প্রচার কাজের সহায়তার জন্য, শান্তি স্থাপনের জন্য, মুসলিমদের মহৎ লক্ষ্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য, মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য।
হাসান আল-বান্নার মতে জিহাদের ব্যাপারে আল্লাহতাআলা মুসলিমদের নির্দেশ দিয়েছেন যথাসম্ভব ক্ষমাশীল হতে। তারা যখন যুদ্ধ করবে তখন যেন আগ বাড়িয়ে আঘাত করা না হয়, কোন ক্ষতি করা না হয়, কাউকে হত্যা করা না হয়, চুরি না করা হয়, সম্পদ যেন নষ্ট না করা হয়, কারণ যোদ্ধাদের মধ্যে মুসলিম যোদ্ধারা হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট। তারা হবে শান্তিপ্রিয়, তারা নারীদের আক্রমণ করবে না, শিশু-বৃদ্ধ কারো কোন ক্ষতি করবে না। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদেরও কোন ক্ষতি করবে না।
মুসলিমদের কাজ হচ্ছে পৃথিবীর যাবতীয় অন্ধকার দূর করে আলোর পথ উন্মুক্ত করা।
জিহাদের মূল উদ্দেশ্য হবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। মুসলিমদেরকে অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করা, আর সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়, তাই জিহাদের জন্য প্রস্তুতির প্রয়োজন।
আল্লাহর পথে জিহাদকারীর মৃত্যুকে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত করা হয়েছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে এমন কোন তাড়াহুড়ো করা ঠিক না যা থেকে ইসলামী দাওয়াতের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সোজা কথা, কোন জিহাদকারী মুসলিমের অপরিপক্ক কথা বা আচরণ যেন অন্য কোন জিহাদকারীকে বা কোন জিহাদী দলকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে।
মুসলিম ব্রাদারহুড যখন তার যুবকর্মীদের উপযুক্ত সময়ে জিহাদে পাঠায় তখন ধ্বংসাত্মক কাজের জন্য পাঠায় না, বরং সঠিক সময়ে জিহাদ নিজেই ধ্বংসের বিপরীত একটা কাজ। এটা জরুরী নয় যে শত্রুপক্ষের দেয়া প্রত্যেকটা আঘাতেরই পাল্টা জবাব দিতে হবে মুসলিমদের, বরং উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করতে হবে।
জিহাদ শুধু অপমানের প্রতিশোধ নিতে নয়, বরং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে তার মূল লক্ষ্য। ইসলামকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেয়াই হবে আসল উদ্দেশ্য।
আর আল্লাহই জিহাদকারীদের উত্তম সাহায্যকারী।
যুবকদের করণীয়ঃ
প্রথমে আমাদেরকে ইসলাম ধর্মের প্রকৃতি ভাল করে বুঝতে হবে, জিহাদের অবস্থান ভাল করে বুঝতে হবে, ইসলামে এর স্থান কোথায় তা বুঝতে হবে।
যুবকদের উদ্দেশ্যে হাসান আল বান্না বলেছিলেন, প্রথমে নিজের উপর বিশ্বাস আনতে হবে, তাহলে নিজের অবস্থানটা পরিষ্কার বোঝা যাবে, নিবিড়ভাবে অনুধাবন করতে হবে যে যুবকেরাই আগামী দিনের বিশ্বের নেতা, যদিও শত্রুরা চাইবে বারে বারে যুবকদের পতন!
যুবকদের এ কথা বলতে চাই যে, সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পন্থায় আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে হয়। যেটা ইসলামী প্রচার কার্যের পরবর্তী অধ্যায়। মুসলিম যুবকদের জানতে হবে পৃথিবীর কোন নির্দিষ্ট জায়গায় জিহাদের জন্য নয়, মুসলিমদের ভূমি হলো সারা বিশ্ব।
কিছু কিছু জায়গায় ইতিমধ্যে ইসলামী ভূমি পুনরুদ্ধার হয়েছে, ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ভবিষ্যতে অন্যান্য সকল অঞ্চলেই আল্লাহর দাওয়াত পৌঁছে যাবে।
মুসলিমদেরকে জানতে হবে ইসলামি বিশ্বের তথা ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরিত্রিয়া, ফিলিপিনের সমস্যাগুলো। এটা কোন আঞ্চলিক বা জাতিগত ইস্যু নয়, বিশ্বাস এবং ধর্মীয় ইস্যু। আল্লাহর শত্রুসংখ্যা অনেক। তাই সত্য বনাম মিথ্যার এই যুদ্ধে যথেষ্ট সময় এবং প্রচেষ্টার দরকার আছে।
নিজের ধর্মে পূর্ণবিশ্বাস রাখতে হবে, নিজের পথকে বিশ্বাস করতে হবে, নিজের সমাজকে (মুসলিম ব্রাদারহুড) বিশ্বাস করতে হবে, সত্যের উপর সর্বদা অটল থাকতে হবে।
যেসব মুসলিম শত্রু কর্তৃক নিপীড়িত, তাদের দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা বেদনা অনুভব করতে হবে, হয়তো সে অনুভব তোমাদেরকে জিহাদে উদ্ধুদ্ধ করতে পারে।
হে বিশ্বাসীগণ, আমি কি তোমাদেরকে দোজখের শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পাবার উপায় বলে দেব? বিশ্বাস আনো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি, লড়াই করো কেবল আল্লাহর জন্য, নিজেদের সম্পদ এবং লোকদের নিয়ে, সেটাই তোমাদের জন্য উত্তম। জেনে রেখো, তিনি তোমাদের সকল গোনাহ মাফ করে দিতে পারেন, এবং তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারণ করে দিতে পারেন যার বাগানে সুশোভিত, যার নিচ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হচ্ছে। [সূরা ৬১, ১০-১৩ আয়াত]
নিজেদের অজ্ঞতা এবং দুর্বলতার ব্যাপারে সতর্ক থেকো।
যে ব্যাপারগুলো সর্বদা মাথায় রাখতে হবে,
প্রথমতঃ
আল্লাহর সাথে লাভজনক বিনিময় করো।
সূরা তওবা, আয়াত ১১১ঃ আল্লাহতাআলা জান্নাতের বিনিময়ে বিশ্বাসীদের এবং তাদের সম্পদ ক্রয় করে থাকে। তারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে......
[অনেকে এই আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে ইসলামী দল বা কর্মীদের ধর্মব্যবসায়ী বলে থাকে। ]
দ্বিতীয়তঃ
সফল কেনা-বেচার জন্য বিশ্বাসীদের গুণাবলী অবশ্যই নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে হবে।
তৃতীয়তঃ
উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ এবং শহীদি মৃত্যু।
উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর কথাকে সবার উপরে স্থান দান।
চতুর্থতঃ
শুধু মুখ দিয়ে নয়, অন্তর দিয়ে শহীদি মৃত্যু কামনা করতে হবে, এবং তার জন্যে সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হবে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে শহীদি মৃত্যু কামনা করে, আল্লাহ তাকে সে মর্যাদা দেন, যদি তার বিছানাতেও মৃত্যু হয়।
পঞ্চমতঃ
জিহাদের জন্য যখনই ডাক আসবে তখনই সাড়া দিতে হবে, তা পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক না কেন।
...যতক্ষণ যোদ্ধা থাকবে, অবশ্যই প্রতিটি অনুরোধের প্রতি শ্রদ্ধা রাখবে।
যে কাজ তোমার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যে কোন মুহুর্তে যে কোন সময়ে সে কাজে অবিচল থাকবে। কোন ব্যক্তিগত কাজে নিজেকে নিবৃত করবে না। অনেক সময়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে যুবকেরা নিজে থেকে কিছু কাজ করে ফেলে যেটা পুরো একশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। যেমন, কিছু লোক মেরে ফেলা, বোমা মারা, ইত্যাদি কাজ যা আসলে পুরো ব্যাপারটাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে।
[ব্লগীয় পরিমন্ডলে বলা যায়, গালিগালাজ করা, ফোনে বা ই-মেইলে হুমকি ধমকি দেয়া, একযোগে কয়েকজন ব্লগার মিলে সাইবার হামলা চালানো, ব্যক্তি আক্রমণ করা ইত্যাদি।
]
এখানে একটা উদাহরণ প্রযোজ্য, মক্কা বিজয়ের আগে পর্যন্ত কেউ কখনো আবু লাহাব, আবু জেহেলের বাড়ি আক্রমণ করেনি, কাবা ঘর থেকে মূর্তিগুলো সরায়নি। কারণ এতে করে ইসলামের মূল লক্ষ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেত।
...যুদ্ধের কলাকৌশল, নিয়ম কানুন ভালভাবে জানতে হবে, নিজেদের সীমানা বুঝতে হবে। কখনোই কোন মুসলিম যোদ্ধা কোন কিছু ধ্বংস করে না, তারা কখনোই আগে আঘাত করে না, মালামালের ক্ষয়ক্ষতি করে না, লাশ বিকৃতি করে না।
... এটা মনে রাখতে হবে যুদ্ধে জয় হলেই যে সেটা দক্ষতার জন্যে হয়েছে তা কিন্তু নয়, আল্লাহতাআলা চেয়েছেন বলেই হয়েছে।
দশতমঃ
নিজের পরিবারকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে, তাদেরকেও জিহাদের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। যাতে করে তারা তোমাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে না ফেলে।
এগারতমঃ
সবসময়ে আল্লাহর কাছে শহীদি মৃত্যুর জন্য দোয়া করবে। আমাদের মানুষদের খুব একটা সীমাবদ্ধতা এটাই যে আমরা দুনিয়াকে অনেক ভালবাসি, আর মৃত্যুকে অপছন্দ করি। তাই সবসময়ে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া দরকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।