ভিটামিনের নানা গুণপনার কথা আমরা সবাই জানি । দেহের শ্রীবৃদ্ধির জন্য ভিটামিন যে ভীষণ প্রয়োজনীয় এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার কোন কারণও নেই । সব ভিটামিনই নানা ধরনের খাদ্য থেকে আমরা পাই । বাড়তি প্রয়োজন তখনই ঘটে যখন -
(১) খাদ্যে পুষ্টির অভাব ঘটে ।
(২) ভিটামিন দেহে ঠিকমত গৃহীত ও শোষিত হয় না ।
(৩) দেহে অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হয়-
যেমন অপারেশনের পর ।
void(1);
অনেকেরই অভ্যেস সকাল-বিকেল দুবেলা খাওয়ার পর দুটো ভিটামিন ক্যাপসুল মুখে ফেলা কিংবা বিজ্ঞাপনের চটক দেখে ভিটামিনে ভরপুর এটা ওটা দুধে গুলে খাওয়া । এতে পয়সা নষ্ট ছাড়া অন্য কোনও লাভ হয় না । পেট ভরে ভাত ডাল সবুজ শাকসবজি ও সপ্তাহে ২/৩ দিন মাছ, দুধ খেলেই যথেষ্ট ভিটামিন পাওয়া যায় । দেহে ঘাটতি না পড়লে বাজারি ভিটামিন খাওয়া অনুচিত ।
অতিরিক্ত ভিটামিন কী কী বিপত্তির কারণ হতে পারে দেখা যাক
ভিটামিন এ অতিরিক্ত ব্যবহারে ক্ষুধামন্দা, গা গুলানো বমি বমি ভাব, খসকসে চামড়া, চুলকানি, চুলপড়া, গাঁট ফুলে যাওয়া, ঘুষঘুষে জ্বর, খিটখিটে ভাব, রক্তাল্পতা, লিভার ও পিলে বড় হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, জিভে ঘা, চামড়ায় চাকা চাকা দাগ, মস্তিস্কে চাপ বেড়ে গিয়ে মাথাব্যথা, গর্ভবতী মায়ের বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মদান ইত্যাদি নানা বিপত্তি দেখা দিতে পারে ।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বেশি খেলে চোখমুখে লাল হয়ে যায় (ফ্লেশিং), চুলকানি, ফুসকুড়ি, ফোঁড়া, পেটের গন্ডগোল, পেপটিক আলসার, জন্ডিস, চোখের নানা রোগ দেখা দিতে পারে ।
ভিটামিন বি অতিসিক্ত ব্যবহারে চুল উঠে যায়, পেটে আলসার, রক্তচাপ কম হওয়া ছাড়াও লিভারের ক্ষতি করে ।
ভিটামিন সি অনেকেই সর্দিকাশি হলে রোজ ২/৩টি করে চুষে খান । সত্যিই ভিটামিন সি কোল্ড বা হাচিঁ-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে কি না এ ব্যাপারে ভেষজ বিজ্ঞানীরা একমত নন ।
তবে এ সময় দেহে ভিটামিন সির পরিমান কমে যায় এটা সত্যি । মুখে বা জিভে ঘা হলে বা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে রোজ একটা করে ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া যেতে পারে । অতিরি্ক্ত খেলে পেশাবে অক্সালেটের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং কিডনির ক্ষতি হতে পারে । অতি উচ্চমাত্রায় ব্যবহার করলে গর্ভকস্থ শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে, পেটে ব্যথা হয়, ঘনঘন পায়খানা হয় ।
ভিটামিন ডি অতিরিক্ত প্রয়োগ দেহে ক্যালশিয়ামের আধিক্য ঘটে ।
ফলে দুর্বলতা ও ক্লান্তি, গা বমি বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, বহুমূত্র রোগ, মানসিক অস্থিরতা, গাঁটের যন্ত্রণা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, গর্ভস্থ শিশুর বিপদের সম্ভাবনা আছে, খিদে নষ্ট হয়, পেটে ব্যথা হয়, মাথা ব্যথা করে, কিডনিতে পাথর জমে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
ভিটামিন ই অতিরিক্ত গ্রহনে মাংসপেশির দৃর্বলতা দেখা দেয়, বমি বমি ভাব হয়, ক্লান্তিবোধ হয়, মাথাব্যথা হয় । কারও কারও ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে দেখা গেছে । ভিটামিন কে বেশিমাত্রায় খেলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে জন্ডিস দেখা দিতে পারে, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে।
ভিটামিন টনিকে ভিটামিন ছাড়াও থাকে পশুর লিভারের নির্যাস, হজম ক্ষমতা বাড়ানোর ওষুধ, ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিউরোফসফেটস এবং তামা, ম্যাঙ্গানিজ-সহ নানা খনিজ পদার্থ ।
এদের কে কীভাবে কাজ করে তা আজও প্রমাণিত নয় । আর ওষুধ খেয়ে যে বুদ্ধি বাড়ে না তা তো বুদ্ধিহীনেরাও জানে ।
ভিটামিন টনিক বাদ দিয়ে ডাল, মাছ, ভাত, সবজি বেশী বেশী খাওয়া উচিত সঙ্গে মওসুমি ফল।
[clctd] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।