আমার লেখাপড়া এখনও শেষ হয় নাই। কিন্তু আমার বাবা-মা আমাকে এখনই বেকার বানাইয়া দিল।
বাসায় আসছি ৫দিন হল।
ঘুম থেকে সকাল ৫:৩০টায় উঠতে হয়।
কোন ৭টা হলে, কথার গঞ্জনা শুরু হয়।
অমুকের ছেলে অমুক করল, সেটা করল, কষ্ট করে মানুষ হয়েছে।
আর আমি সুখে মানুষ হয়েছি, সুখেই আছি তাই কিছু করছি না।
সব মুখ বুজে শুনে যাই। বুকের ভিতর আর্তনাদ করে, কিন্ত বলতে পারি না। এই আর্তনাদ প্রকাশ করা মহাপাপ।
এখানে আমার বাবা-মার কোন দোষ নাই।
বাবা-মার কি দোষ দিব, দোষ তো এ সমাজের।
কারো ছেলে S.S.C পাশ করে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে বিয়ে-শাদী করে সুখে আছে। আর কেউ H.S.C পাশ করে কেরাণী, মেয়েরা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা হচ্ছে।
আর সেইসব কৃতি সন্তানদের বাবা-মা তাদের সন্তানদের কৃতি গল্প আমার বাবা-মার সামনে করে।
গল্প শেষে বলে, “ভাই/ ভাবী/ আপা আপনার ছেলের কি খবর? আর কতদিন লাগবে? আমার বোনের ছেলে পড়াশেষ করে ৮০হাজার টাকার বেতনের চাকুরি করছে। আর কয়দিন পর বিদেশ যাবে। ”
এসব শোনার পর আমার বাবা-মার মন কি ভালো থাকে??
আক্ষেপ নিয়ে তো বলবে।
ছোটবেলায় ক্লাশের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম বলে, লেখাপড়া নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতাম।
ছোটবেলায় সবাই আদর করত।
কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই আদর অনাদরে রুপ নিয়েছে।
আর এদিকে আরেক ঝামেলা। প্রেম করলে আরেক বিপদ।
প্রেমিকার বিয়ে আসে। প্রেমিকার চিন্তা থাকেনা, যতসব চিন্তা প্রেমিকের।
মোবাইল করে বলে-“আজকে আমাকে দেখতে আসছিল, ছেলে মাসে ১লক্ষ ২০হাজার টাকা আয় করে। ” সময়মত লেখাপড়া শেষ হয় না, অসময়ে প্রেমিকার বিয়ে। এসব কি আর ভাল লাগে।
মাঝে মাঝে বলে,- “চল বিয়ে করি। ”
আরে বিয়ে করে কি খাওয়ামু তোরে? নিজেই তো বাবার হোটেলে গালি খেয়ে পেট ভরাই।
টিউশনি করে কি সংসার হয়।
যাক এই সব কথা।
পড়া শেষে যে, চাকুরির নিশ্চয়তা আছে? সেটা নাই। মামা-খালু থাকা লাগবে।
বাবা-মা, প্রেমিকা, সমাজ এই বেকারের দিকে তাকিয়ে, তখন বেকারদের যন্ত্রণা কে বুঝবে? কে তাদের আশা দিবে, কে তাদের ভরসা দিবে????
কেউ কোথাও নেই।
শূন্য চারিদিক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।