অন্ধ বিশ্বাসী নই। www.lekhok.com www.lekhok.net প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
যোসেফকে মিসরে নেওয়ার পর তার ক্রয়কারী মালিক যোসেফের কাজকর্ম ও ব্যবহারে ভীষণভাবে আস্থাবন ও বিশ্বসী হয়ে নিজ পরিবার ও সহায় সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব যোসেফের হাতে ছেড়ে দেন। সময়ান্তরে যোসেফ মিসরের ‘ফেরাউন’ শাসকগোষ্ঠীর একজন আস্থাবান ব্যক্তিত্বে পরিচিত হয়ে ফেরাউন রাজ দরবারের উচ্চপদে আসীন হন। যোসেফ মিসরেই সংসার জীবন শুরু করেন। অন্য দিকে কেনানে যখন দীর্ঘকালের খাদ্যভাব ও দুর্ভিক্ষ শুরু হয়, তখন যোসেফের ভ্রাতাগন তাদের সকল কিছু নিয়ে মিসরে চলে আসেন এবং দেখা হয় যোসেফের সাথে।
খারাপ ভাইগন যোসফকে চিনতে পারলেও প্রথমে স্বীকার করেতে চাই নাই।
যোসফের মহানুভাতায় সকল ভাইদের সাথে যোসফের মিলন হয়। যোসফের আন্তরিক চেষ্ঠায় মিসর অধিপাতি ফেরাউন রাজা যোসফের দ্বারা পুরনায় কেনানে পাঠিয়ে দেন। আর তার সকল বাকি আত্মিয়দের মিসরে এনে ‘গোশেনে’ বসতি গড়ে দেন। এই বাবে ইস্রাইল জাতির মিসরে গোড়াপত্তন হয় এবং ফারাউন ও মিসরীয়দের কাছে পরবর্তি সময়ে কখনও হিব্রু জাতি কখনও ইস্রাইল জাতি রুপে দাসত্ব করে শত শত বছর কাটয়ে দেতে বাধ্য হয়।
অবশেষে ঈশ্বরের কৃপায় ইস্রাইল জাতির মাঝে জন্ম নেওয়া অথচ মিসরের অধিপতি ফেরাউন রাজ প্রসাদে আপন জননীর স্তন পান করে রাজ পুত্র রুপে বড়ো হয়ে নিজ জাতিগোষ্ঠির ইস্রাইলদের ৭০০ বছরের দাসত্বের মুক্তিতে ঈশ্বরের প্রতিশরুতি অনুযায়ি কেনান ভুখন্ডে (বর্তমানে ইস্লাইল / প্যালেস্টাইন ফিরতে দেন, তিনিই মোজেস (মূসা)। জুডাইজম ধর্মের (ইহুদি) নতুন প্রবার্তক।
আব্রাহাম এর বংশধর দের মিসরে বসতি পর থেক ৭০০-৮০০ বছরে তা দ্রুত হারে বারতে থাকে। এদের বলা হত হিব্রু বা ইস্রাইল জাতি। ফেরাউন সমাজে তাদের ছিল না কোন মর্যদা।
এরা মিসরে ক্রিতদাস হিসেবে বসবাস করতে থাকত। হিব্রুরা পরিশ্রমী, বুদ্ধি সম্পন্ন হবার কারনে এরা মিসরে আস্তে আস্তে ভাল অবস্থায় চলে আসায় মূল মিসরীয় (ফেরাউন) জাতির মাঝে অস্থিতীর কারন হিসেবে দাড়ায়। তখন ফেরাউন রাজা অতিরিক্ত হিব্রু বৃদ্ধির কারনে সকল হিব্রু জাতি পুরুষ সন্তান জন্ম হবার পর হত্যার বিধান চালু করেন। ঠিক সে সময় ( খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০ শেষ দিকে) হিব্রু জাতিতে জন্ম করেন মোজেস বা মূসা বা মশি । পিতা আমরান আর মাতা জোচিবেদ ঘরে মোজেস এর জন্ম হয়।
মোসেজের বড়োভাই অ্যারন ও বড়ো বোন মিরিয়াম। পিতা মাতা ও বড় ভাইবোন তিন মাস লুকিয়ে রেখে পরে একটি খড়কুটোর ঝুরিতে চাপিয়ে নীল নদের স্রোতে ভাসিয়ে দেয়। মোসেজের ঝুড়িটি গিয়ে ঠেকে নীল নদের জলে ফেরাউন রাজকন্যার স্নানরত ঘাটে। ফেরাউন রাজকন্যা শিশু মোজেস কে তুলে নেন এবং সন্তান রূপে প্রতিপালন করতে থাকেন। এবং প্রতিপালন করার জন্য তারই আসল মাতা জোচিবেদকে নিযুক্ত করেন।
শিশুর নাম রাখা মিসরীয় শব্দ মশি। যার অর্থ হল জন্ম নিল। মোজেস বা মশি ফেরাউন রাজ প্রসাদে আদেরই একজন হয়ে সাধারণ শিক্ষা, কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ, শরীরচর্চা, যুদ্ধাবিদ্যা শিখে অভিজাত ভাবে বড় হতে থাকেন। মোজেস শিক্ষাজীবনেই জানতে পারেন, তিনি হিব্রু জাতি। সে পর থেকে হিব্রুদের প্রতি তার আগ্রহ, মায়া-মমতা বাড়তে থাকে।
একদিন এক হিব্রু দাস শ্রমিকের তার শ্রম সর্দারের দ্বারা চরমভাবে নির্যাতিত হচ্ছিল এবং মারা যায়। তা দেখে মোজেস ক্ষিপ্ত হয়ে সেই সর্দারকে আঘাত কররে সে মারা যায়। তার পর মোজেস ভিত হয়ে ফারাউ রাজপ্রাসাদ থেকে পালিয়ে মিডিয়ান চলে যান। এবং মোজেস মিডিয়ানাইট যাযাবর জাতির জেথরোর ঘরে আশ্রয় নেন। মিডিনাইট জাতির প্রাধানের কন্যা জিপপোরাহ কে মোজেস বিবাহ করেন।
মোজেস তার শশুরের বিরাট পশু সম্পদের দেখাশুনা করতে গিয়ে সিনাই পাহাড় অঞ্চল ঘুরে বেড়াতেন। একদিন পাহারের তলদেশে অরন্য থেকে অগ্নিদাহ দেখতে পেলেন এবং লক্ষ করলেন যে সেই অগ্নিতে কোন খড়কুটা নেই এবং আগুনের নীলাভ আলো সমস্ত জংগলকে আলোকিত করে ফেলেছে।
চলবে…………
সূত্রঃ বিশ্বের ধর্ম পরিচিতি ( ডঃ মোঃ শাজাহান কবির) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।