আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নোবেল জয়ী নাট্যকার হ্যারল্ড পিন্টার এর নোবেল বক্তৃতা থেকে..... (১)



[Harold Pinter: জন্ম ১৯৩০ সাল, লণ্ডন শহরের হ্যাকনিতে। ১৯৫০ এর দশকে ডেভিড ব্যারন ছদ্মনামে মঞ্চে অভিনয় শুরু করলেও ধীরে ধীরে তিনি নাট্যকার, চিত্রনাট্যলেখক ও পরিচালক হিসাবে সাড়া জাগিয়ে তোলেন। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে তাঁর লেখা অধিকাংশ নাটকই মূলত রাজনৈতিক হয়ে ওঠে। ২০০৫ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। পাওয়ার কারণ- "তিনি তাঁর নাটকে মানুষের প্রাত্যহিক সাদামাটা বকবকানির আড়ালে লুকিয়া থাকা গোপন অশনি সংকেত উন্মোচন করেন এবং নিগৃহীতদের বদ্ধ দুয়ার ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে পড়েন"।

পিন্টারের নোবেল বক্তৃতার চুম্বক অংশ এখানে তুলে দেয়া হয়েছে। অনুবাদ করেছেন- লুনা রুশদী] ........ ........... আমাদের ঘিরে থাকে মিথ্যার পর্দা, তার মধ্যেই বসবাস আমাদের। এখানকার প্রতিটি মানুষ জানেন যে, ইরাক আক্রমণের বৈধতা স্বরূপ বলা হয়েছিলো সাদ্দাম হোসেনের দখলে রয়েছে বিপজ্জনক গণবিদ্ধংসী অস্ত্রশস্ত্র, যার কোন কোনটা প্রয়োগ করার ৪৫ মিনিটের মধ্যে শুরু হবে ধংসযজ্ঞ। আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছিল যে এটাই সত্য। কিন্ত এটা সত্য ছিল না।

আমাদের বলা হয়েছিল ইরাক আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত আর ২০০১ এ নিউইয়র্কে ঘটে যাওয়া সেপ্টেম্বর ১১ এর নৃশংসতায় তারাও শামিল ছিল। আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছিল যে এটা সত্য। কিন্তু এটাও সত্য ছিল না। আমাদের বলা হয়েছিল ইরাক সাড়া পৃথিবীর নিরাপত্তার প্রতি হুমকি স্বরূপ এবং নিশ্চিত করা হয়েছিল এর সত্যতা সম্পর্কে। সত্য ছিল না এটাও।

সত্য পুরোপুরিই অন্য বিষয়। সত্য হল আমেরিকা পৃথিবীতে তার ভূমিকা বলতে কি বোঝে আর কি রূপে তার প্রয়োগ করে। তবে বর্তমানে ফেরার আগে আমি অদূর অতীতের দিকে একবার তাকাতে চাই, অর্থাত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির দিকে দৃষ্টি ফেলতে চাই। এ সময়টার সতর্ক অনুসন্ধান আমাদের অবশ্য কর্তব্য বলে আমি মনে করি। সবাই জানেন যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সোভেয়েত ইউনিয়ন আর সারা পূর্ব ইউরোপজুড়ে কি ঘটেছিল।

পদ্ধতিগত নির্দয়তা, নৃশংসতা আর একক সত্তার দমন। এ সবকিছুই যাচাই এবং দলিলকৃত। কিন্তু আমার আপত্তি হলো একই সময়ে আমেরিকার অপরাধগুলির রেকর্ড হয়েছে খুব ভাসাভাসাভাবে, দলিল, সত্যতা স্বীকার এমনকি অপরাধ হিসাবে এগুলিকে মেনে নেয়া তো দূরের কথা। আমি মনে করি এটা বলতেই হবে যে পৃথিবী এখন যেখানে দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে সত্যের গাঢ় সম্পর্ক রয়েছে। পৃথিবীজুড়ে আমেরিকার কার্যকলাপে এটা পরিস্কার যে, যা খুশি করার মত ক্ষমতা তার আছে।

............... (চলবে)


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.