আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তচিন্তার ব্লগার এবং আমার ভয়

প্রায় প্রতি রাতেই অন্তত একবারহলেও নিজের সাথে দেখা হয়ে যায়। তখন নিজের সাথে নিজেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। দ্বিধা, দ্বন্দ, ক্ষোভ, আনন্দ, দুঃখ আর প্রতিবাদে মুখর থাকে সেই ক্ষণ। এসব অনুভূতি প্রকাশ করার মতো কাউকে যখন পাই না। তখন লিখতে বসে যাই।

একালের তরুণ প্রজন্মের ব্লগাররা বোধহয় একটু বেশীই প্রতিবাদী স্বভাবের। অতিরিক্ত মুক্ত চিন্তার প্রভাবে কিনা জানিনা এরা কাওকেই পরোয়া করে না। এরা যেকোনো বিষয়েই প্রতিবাদ করতে পিছপা হয় না। এরা এতোটাই মুক্তচিন্তার যে এরা একই পথের অন্য কোন ব্লগাররের সাথে একটু মতের অমিল হলেই লিখতে বসে যায়। তারা তাদের মুক্ত লেখনীর মাধ্যমে সাথী ব্লগারকে ধুয়ে ফেলে নিমিষেই।

তাদের কর্মকান্ড দেখে মাঝে মাঝে মনে হয় দূরদর্শীতার বড় অভাব। প্রশ্ন জাগে এরা কী সত্যিই তরুণ? নাকি এখনো বাচ্চাই রয়ে গেছে? সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম ফেসবুকে একজন ব্লগার অন্য এক ব্লগারকে উদ্দ্যেশ্য করে লিখছেন। একজন চাইছেন ২৫শে মার্চ সারা বাংলাদেশ অন্ধকার করে কালোরাতের প্রতি সম্মান দেখাতে। অন্যএকজন চাইছেন ২৫ শে মার্চ সারা দেশে মোমবাতি প্রজ্জলন করে সারা দেশ আলোকিত করে সেই অন্ধকার রাতের প্রতি সম্মান জানাতে। দু'টো চিন্তাই খুব সুন্দর।

কারও একটা ভালো লাগবে। কারও অন্যটা। অনেকের আবার দু'টোই ভালো লাগবে। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রথমে সারা দেশ অন্ধকার করে তারপর আলো প্রজ্জলন। খুবই সুন্দর আইডিয়া।

কিন্তু আফসোসের বিষয় যিনি কালোরাতে সব অন্ধকার করে দিতে চাইছেন তিনি কোনভাবেই মোমবাতি প্রজ্জলন মেনে নিতে চাইছেন না। তিনি বলেছেন,"অবশ্যই,অবশ্যই এই রাতে আমরা মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিল কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করছিনা । " আর যিনি আলোর মিছিলের পক্ষে আর কোনো পাল্টা বক্তব্য পাওয়া যায় নি। খুব কষ্টের বিষয় এই যে,আমার মাঝে মাঝেই খুব ভয় হয় একদিন বাংলাদেশের ব্লগাররা খুব একা হয়ে পড়বেন। এমনিতেই এরা সংখ্যায় খুব কম।

তারউপর যদি নিজেদের মধ্যে ঐক্য না থাকে তাহলেতো... সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এই ব্লগাররা একইসাথে শাহবাগে আন্দোলন করছেন। কিন্তু যিনি ঘোষণা দিয়েছেন আলোর মিছিলে যাবেন না তিনি আরও লিখেছেন, "আমরা জনগনের জাগরনে বিশ্বাস করি , ইতিহাসে বিশ্বাস করি । শাহবাগের আন্দোলনে বিশ্বাস করি । আমরা নেতায় বিশ্বাস করি না । " এটা কী করে সম্ভব? নেতায় বিশ্বাস করি না লিখে দেয়াটা কী এতোই সহজ? ইনি কী বাংলাদেশের ইতিহাসের বড় বড় নেতাদের কেও বিশ্বাস করেন না? আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কী নেতৃত্বহীন ছিলো? তাছাড়া একজন নেতা বা মুখপাত্র ছাড়া কী করে এসব জাগরণ/আন্দোলন হয় আমার জানা নেই।

আপনাদের মধ্যে মতের অমিল হতেই পারে। বিষয়টি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে ফেলা ভালো। কেঊই যদি নেতা না মানে তবে এর ফলাফল কিন্তু খুব ভয়ানক হবে। আবার সবাই যদি নিজের দায়িত্ব নিজে নিয়ে নেয় তাহলেও কিন্তু ফলাফল ভয়ানক। আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের লাখ লাখ তরুণ আজ শাহবাগ আন্দোলনে সক্রিয়।

আর আপনারা যদি নিজের মধ্যকার দ্বিমত সারা দেশে ছড়িয়ে দেন তবে দেশের তরুণরাও কিন্তু দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। এরকম অদূরদর্শী কর্মকান্ড আপনাদের কাছ থেকে আশা করা যায় না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.