গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও নব্বই বছরের কারাদণ্ডের রায়ে হতাশা ও ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। রায় ঘোষণার পর গ্লিটজকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিন প্রজন্মের সাংস্কৃতিককর্মীরা গোলাম আজমের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, “ট্রাইব্যুনাল তাকে দোষী সাব্যস্ত করলেও যে শাস্তি দিয়েছে তা যথাযথ না। এ কারণে আমাদের ভিতরে হতাশা ও ক্ষোভ কাজ করছে। ”
মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, “ট্রাইব্যুনালের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি আমি এ রায়ে হতাশ।
এত প্রমাণ ও দলিল থাকা সত্তে¡ও তার ফাঁসি না হওয়ায় আমি বেশ মর্মপীড়া বোধ করছি। তবে ট্রাইব্যুনালের আইনে আপিলের সুযোগ রয়েছে। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। ”
মুক্তিযোদ্ধা ও চলচ্চিত্র পরিচালক শাহ আলম কিরণ বলেন, “তার বিচার অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি।
এই দেরির কারণে নানামুখী তৎপরতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে তার সহযোগীরা। তাণ্ডব চালিয়েছে নানা সময়ে। এসব তাণ্ডব বন্ধ করার জন্য তার বিচার হওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার ফাঁসির আদেশ দিলে খুশি হতাম। ”
গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ঝুনা চৌধুরী বলেন, “কোনো অবস্থাতেই এ রায় মেনে নেওয়া যায় না।
যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে যে হোতা, সে-ই যদি বার্ধ্যকের অজুহাতে ছাড় পায় তাহলে অন্য অভিযুক্তদের বিরদ্ধে কী রায় আসবে? এটা কোনোমতেই মেনে নেওয়ার মতো রায় হয়নি। ”
জাহানারা ইমাম গঠিত গণআদালতের সংগঠক সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদের ভাতিজি ও অভিনেত্রী ফারাহানা মিঠু বলেন, “আমি মর্মাহত এ রায়ে। কারণ ফাঁসিযোগ্য অপরাধ সত্তে¡ও বয়স বিবেচনা করে তাকে ৯০ বছরের জেল দেওয়া হল। তার প্ররোচনায় কিন্তু একটি কিশোরীকে ধর্ষণের সময় কোনো বিবেচনাবোধ কাজ করেনি অপরাধীদের। কারাগারে তাকে কেমন অবস্থায় রাখা হবে এ নিয়েও আমার প্রশ্ন রয়েছে।
কারণ যার কারণে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হল তাকেই যদি কারাগারে ভিআইপি মর্যাদায় রাখা হয়, তাহলে বিচারের নাটক করার কী দরকার ছিল? ৯২ সালে তো ‘গণআদালত’ তাকে ফাঁসি দিয়েছিল। ”
কণ্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার বলেন, “৪২ বছরের প্রতীক্ষার চরম হতাশাজনক ফলাফল। স্বাধীনতা যুদ্ধের আর সকল মুক্তিযোদ্ধার কাছে আমাদের মুখ দেখানোর উপায় রইল না। ”
গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ও অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, “এটা প্রত্যাশিত রায় হয়নি। আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা একটা হাস্যকর রায়।
অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল তার। উত্থাপিত সব অভিযোগই তো প্রমাণিত হয়েছে। তবু ফাঁসি দেওয়া হল না। আমি খুবই মর্মাহত এ রায়ে। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।