জাগো মানুষ আজ জাগো, ভেবনা তুমি বাঙালী কি বাংলাদেশী....কেটে যাবে রোদ ভাঙ্গবে আঁধার, আমি দেখব মাগো তোমার মুখের হাসি এ যেন বাংলাদেশে আছি। উহ, কি প্রচন্ড গরম! গত কয়েক দিনে তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠেছে এখানে! ফলে, মানুষজন কাপড়-চোপড় খুলে রাস্তায়।
রোজা-রমজানের দিনে এ কি বিপত্তি! রাস্তায় বেরুলে চোখ মাটির দিকে সেঁটে রাখতে হয়। আশে-পাশে তাকালেই রোজা মাকরুহ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দেশের মেয়ে-ছেলেদের এমনিতেই গরম লাগে বেশি।
হু হু শীতেও এইখানকার মেয়েরা হাফ প্যান্ট পড়ে ঘুরে বেড়ায়। আর, এই গরমে কি অবস্থা তাদের একবার চিন্তা করে দেখুন। তাই, রাস্তায় বেরুলে 'ইয়া মাবুদ, ইয়া মাবুদ' বলা ছাড়া গতি নাই।
আমি এখনো বিয়ে করিনি। তাই, এহেন পরিবেশে নিজের জৈবিক প্রবৃ্ত্তিকে বশবর্তী করে রাখতে অনেক কলা-কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়।
সব সময়ই যে পারি, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো না। তবে, চেষ্টার ত্রুটি করি না। কিন্তু, তবুও ভুলে উপর মিসটেইক হয়ে যায় মাঝে মাঝে। সেই কারণেই, এর থেকে বাঁচার উপায় নিয়েই আকাশ-পাতাল চিন্তা করছিলাম গত গতকাল রাতে। চিন্তার রাজ্যে হারিয়ে গিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারিনি।
আর, সেই ঘুমের মাঝেই আমার এই মহাবিপত্তির সমাধান নিজের মানসপটে ভেসে উঠলো। 'ইউরেকা', 'ইউরেকা' বলে চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম। তাকিয়ে দেখি, আমার পাশের রুমের বাংলাদেশী ভাইটি ভীত চোখে আমার রুমে উঁকি-ঝুকি মারছেন।
এই বাংলাদেশী ভাইটি সম্পর্কে একটু বলে নেওয়া প্রয়োজন আগে। সুপুরুষ এই তরুণ ভাইটি বয়সে তরুণ, দেখতেও বেশ।
সিনেমার নায়কদের মত গড়ন। তাই, হর-হামেশাই রাস্তা-ঘাটে এখানকার মেয়েদের চোখে পড়ে যান। কিন্তু, তিনি সেই দিকে পাত্তা দেননা কখনও। ইসলামী ঘড়ানার মানুষ কিনা! কিন্তু, এই ভাইটিই রাতে এক্কেবারে কাবু হয়ে যান। উনি বুঝি জ্বীন দেখতে পান।
'উনা'-রা আমাদের এই বাঙালী বাবুকে প্রায়ই এসে 'হাই' 'হ্যালো' করে যান। আমাদের বাসাতেও বুঝি মাঝে মাঝে 'উনা'-দের আনা-গোনা হয়। আমি এ নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে মাঝে মাঝে ভয় দেখানোরও চেষ্টা করি। এ নিয়ে অনেক মজার কাহিনী রয়েছে। সুযোগ হলে আরেকদিন বলবোক্ষণ।
যাহোক, ভাইটি বুঝতে চেষ্টা করছিলেন কি হয়েছে। আমি তার দিকে উৎফুল্ল স্বরে তাকিয়ে বললাম- ''পেয়ে গেছি। উপায় পেয়ে গেছি। এইটা প্রয়োগ করতে পারলে হয়তো আগের মতো রাস্তায় বেরুলে রোজা মাকরুহ হওয়ার আর থাকবে না। ''
আমি কি বলছি বুঝতে না পেরে উনি আমার দিকে চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে থাকলেন।
উনার মুখ দেখে মনে হলো, আমার কাধেঁ 'উনা'-রা চেপে বসেছেন কিনা এ নিয়ে হয়তো ভাবনা-চিন্তা'র ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমাঝে।
আমি আর রহস্য বাড়ালাম না। বললাম- ''বাংলাদেশের তালপাতার হাতপাখার কথা মনে আছে? ঐ যে গরম কালে বাস-ট্রেন স্টেশনে বিক্রি করতে দেখা যায় হকারদের, সে-ই হাতপাখার কথা বলছি। বাংলাদেশ থেকে ইমপোর্ট করে এখানে আনতে পারলে মন্দ হয়না। বিদেশী মেয়েগুলোর হাতে হাতে ধরিয়ে দেওয়া যেতো তাহলে।
এই গরমে বেচারীরা হাত-পাখার বাতাসে একটু শান্তি পেতো। সাথে সাথে আমরাও চোখের 'অপব্যবহার' হতে রক্ষা পেতাম। মাঝে টু-পাইস ইনকাম। খারাপ না আইডিয়াটা। কি বলেন?''
বুঝতে পেরে উনিও বেশ উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন।
যাক বাবা, এটা আবার কোন ভূত-ঘটিত কোন ব্যাপার নয়।
ঘাড় নেড়ে বললেন- ''আইডিয়টা বেশ তো। তাহলে, শুরু করছেন কবে?''
আমি মাথা চুলকে বললাম- ''দেখি, কবে শুরু করা যায়। বাংলাদেশে একবার খোঁজ নিতে হবে। ''
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।