নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!! ভারত। হাজার বছর ধরে উপমহাদেশীয় বৈশিস্ট্য ধারন করলেও ১৯৪৭ সালের পর থেকে এটি একটি দেশে পরিণত হয়। আর তারপর থেকে এক বিশেষ ধরনের 'সংকীর্ণমনা' কুটনৈতিক চরিত্র ধারন করে। কংগ্রেস, বিজেপি, বামপন্থী, নানাবিধ জোট; নেহেরু, ইন্দিরা, বাজপেয়ী, মনমোহন নানান জাতের নানান দল ও লোক ভারত শাসনে এসেছে ও বিদায় হয়েছে কিন্তু রাস্ট্রভারতের কূটনীতি পাল্টায়নি।
এ নীতিকে ভদ্রভাষায় এক বাক্যে প্রতিবেশীর পোনমারা কূটনীতি বলাই শ্রেয়:।
চিরশক্র পাকিস্তান, দক্ষিনের শ্রীলংকা, পূবে বাংলাদেশ, উত্তরের কাশ্মীর, নেপাল, ভুটান ও সিকিম কারো পোনই ভারত মারতে বাকি রাখেনি। সুবিধা করতে পারেনি শুধু চীনাদের সাথে। বরং স্বল্পদৈর্ঘ্যের চীনাদের কাছে অরুনাচলে নিজেরাই দৌড়ের উপর আছে। মার খাচ্ছে বাণিজ্যেও।
অন্যদের কথা তোলা থাক নিজেদের ক্ষতের দিকে নজর দেয়া যাক।
কথাবার্তা ছাড়াই ভারত সীমান্তে নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের বাড়ি ঘরে ডাকাতি, গরু ছাগল মাছ ধান লুট তাদের নিত্যনৈমিত্তিক কারবার। এত্তবড় দেশ হওয়া স্বত্তেও ক্ষুদ্র বাংলাদেশের সাথে পায়ে পা বাধিয়ে ঝগড়া করে এখানে ওখানে ২/৪শ একর করে করে জমি জবরদখল করার ধান্ধায় লিপ্ত। সম্ভবত: রাস্ট্রের আয়তন বৃদ্ধির কূটকৌশল হিসেবেই এ কূটনীতি!
অববাহিকার সকল দেশের সম্মতি ছাড়া কমন নদীর উপর যেকোন বাঁধ নির্মান জাতিসংঘের নদীনীতিমালা (যাতে ভারত সিগনেটরীও বটে!)র সুস্পস্ট লংঘন হলেও ভারত এটার থোড়াই কেয়ার করে। তবে নিজেদের আঁতে ঘা লাগাতে চীনের ব্রম্মপুত্র বাঁধ পরিকল্পনার ব্যাপারে কাউকাউ করতে 'লজ্জা' করেনা।
পদ্মা, তিস্তা, গোমতী, মুহুরী সব নদীর উপরই ভারত অলরেডি পাকা বা কাঁচা বাঁধ নির্মান করেছে। বছরের ৯ মাসই এদেশের প্রায় সকল নদী শুকিয়ে মরা জলধারা বা মরুভূমিতে পরিণত হয়।
মুখে মুক্তবাজার হেন তেন এসব বললেও ভারত চরম বদ্ধবাজার পলিসীতে চলে। রাজ্যসরকার, কেন্দ্র, কোয়ালিটী, ডাম্পিং ও নানাবিধ অ-শুল্ক ছলছাতুরীর মাধ্যমে আমদানীকে তারা যতদুর পারে ঠেকিয়ে রাখে। এমনকি রপ্তানীর ক্ষেত্রেও তারা মওকামত নানান আইন জারি করতে কসুর করেনা।
বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়াটরা দিল্লী বা মুম্বাইতে চাকরির কথা কল্পনা করতে না পারলেও লাখের উপর ভারতীয় (বেশীর ভাগ অবৈধভাবে ট্যুরিস্ট ভিসায়) ঢাকা বা চট্টগ্রামে চাকরী করে! এবং বেতনের টাকা স্বদেশে হুন্ডিতে পাঠায়।
দয়া, দাক্ষিণ্য, দান, আথিতেয়তা, সৌজন্যতা এগুলো ভারতীয় কূটনীতিতে পরিত্যাজ্য। হিন্দুদের মজ্জাগত কৃপণতার ছোঁয়া তাদের দেশীয় কূটনীতিতে লাগবেনা তাও কি হয়? মনে পড়ে দক্ষিনান্চলের মারাত্নক ঘুর্নিঝড়ের পর ভারত একটা গ্রাম পূনর্গঠন ও কিছু চাল রপ্তানী (ভিক্ষা না!)র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বছর চারেক আগে। আজও তা আলোর মুখ দেখেনি!!
তবে মৌখিক বেঈমানীর পাশাপাশি কাগজে কলমে বেঈমানিও ভারতের কূটনীতির আরেক বৈশিস্ট্য। বেরুবাড়ি বনাম তিনবিঘা তার জ্বলন্ত প্রমান।
সবমিলিয়ে এটাই ভারত, সো ফার। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।