ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন নিয়ে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপে প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জয়ী হতে পারে বলে আভাস মিলছে। বিজেপি জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হবেন হিন্দু জাতীয়তাবাদী কট্টরপন্থী নেতা ও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে? বিশেষ করে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ পাকিস্তান ও চীনের প্রতি তাঁর নীতি কী হবে—এসব নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
মোদি অবশ্য নির্বাচনী প্রচারণায় দেওয়া বিভিন্ন ভাষণে পররাষ্ট্রনীতিতে কট্টর হওয়ার আভাস দিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই বড় প্রতিবেশীর প্রতি আক্রমণাত্মক কথাও বলেছেন তিনি।
চীনকে সতর্ক করে মোদি বলেছেন, চীনকে ‘সম্প্রসারণবাদী নীতি’ থেকে সরে আসতে হবে। আর ভারতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার জন্য বরাবরই পাকিস্তানকে দায়ী করছেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে গত মাসে নির্বাচনী সমাবেশে মোদি বলেন, ‘আমি এই মাটির নামে শপথ নিচ্ছি, এই দেশকে অবশ্যই রক্ষা করব। ’ চীন ওই অঞ্চলকে নিজের দাবি করে আসছে।
অবশ্য নিজের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সুস্পষ্টভাবে কখনোই কিছু বলেননি মোদি।
তবে বিজেপির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করেন তিনি। বাজপেয়ির আমলে ১৯৯৮ সালে কয়েক দফায় পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা চালায় ভারত।
ভারত, পাকিস্তান ও চীন—তিন দেশই পারমাণবিক শক্তিধর। ভারত ইতিমধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধ করেছে। চীনের সঙ্গে ১৯৬২ সালে বিচ্ছিন্ন লড়াই হয়েছে।
২০০১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে আরেকটি যুদ্ধের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ভারত। এর পর থেকে নয়াদিল্লির পররাষ্ট্রনীতি কিছুটা শান্ত বলা যায়।
ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ৬৭ বছরের মধ্যে ৫০ বছরই ক্ষমতায় ছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস। মোদি কংগ্রেসের পররাষ্ট্রনীতিকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য দুর্বল বলে মনে করেন। যদিও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যেই ভারত এক হাজার ২৭০ কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে।
মোদির ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগী বলছেন, মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি আরও শক্তিশালী ও গঠনমূলক হবে, যা আঞ্চলিক উত্তেজনা না বাড়িয়ে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনকে গুরুত্ব দেবে। বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন নেতা বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হবে অর্থনীতিতে গতিশীল ধারা সৃষ্টি করা। পররাষ্ট্রনীতির পুরো ধারণাই হবে দেশের অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা, যাতে অন্য দেশের সঙ্গে সমঝোতার সময় নিজের স্বার্থের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেওয়া যায়। ’
মোদির একজন উপদেষ্টা না প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোদির পররাষ্ট্রনীতি হবে অনেক বেশি জাতীয়তাবাদী ভাবাদর্শের। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদের মতো বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।
সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক রাজিব ডোগরা বলেন, অভ্যন্তরীণ চাপ ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার জন্যই বিজেপির পররাষ্ট্রনীতি আগের চেয়ে কঠোর হতে পারে বলেই মনে হচ্ছে। রয়টার্স।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।