সহীহ বোখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন : 'আল্লাহর শপথ সে মুমিন-বিশ্বাসী নয়, আল্লাহর শপথ সে মুমিন-বিশ্বাসী নয়'। আরজ করা হলো : ইয়া রাসূলাল্লাহ! কে সেই ব্যক্তি? রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন : 'যার ক্ষতিকর আচরণ থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। ' মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, 'যার ক্ষতিকর আচরণ থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয় সে জান্নাতে যাবে না। ' বোখারী, মুসলিম, তিরমিযী ও নাসায়ীতে বর্ণিত আছে, রাসূল (স.)-এর সমীপে জানতে চাওয়া হলো : কোন্ পাপ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে জঘন্য হিসেবে গণ্য? রাসূল (স.) তখন তিনটি অভ্যাসের কথা উল্লেখ করেছেন : '(১) কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা, অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। (২) তোমার খাদ্যে ভাগ বসাবে এই ভেবে তোমার সন্তানকে মেরে ফেলা, (৩) তোমার পড়শীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।
' বোখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আর এক হাদিসে আছে, 'যে লোক আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন স্বীয় প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। '
প্রতিবেশী তিন ধরনের হতে পারে : প্রথমত. মুসলমান আত্মীয় প্রতিবেশী। এ প্রতিবেশীর তিনটি অধিকার প্রাপ্য। একটি মুসলমান বলে, একটি আত্মীয় বলে, আর একটি প্রতিবেশী হিসেবে। দ্বিতীয়ত. মুসলমান কিন্তু আত্মীয় নয় এমন প্রতিবেশী।
এ প্রতিবেশীর দুটি অধিকার প্রাপ্য। একটি প্রতিবেশী বলে, অন্যটি মুসলমান হিসেবে। তৃতীয়ত. প্রতিবেশী, কিন্তু মুসলমান নয় বরং বিধর্মী। এর কেবলমাত্র প্রতিবেশী হিসেবে একটি অধিকার প্রাপ্য। আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফে বর্ণিত এক হাদিসে আছে হজরত ইবনে ওমর (রা.)-এর এক ইহুদি প্রতিবেশী ছিল।
তার বাড়িতে যখনই কোনো ছাগল জবেহ করা হতো তখনই তিনি বলতেন, 'আমাদের ইহুদি পড়শীকে কিছুটা গোশত দিয়ে এস। ' হজরত ইবনে ওমর কর্তৃক বর্ণিত, কেয়ামতের দিন গরিব প্রতিবেশী বিত্তবান প্রতিবেশীকে জড়িয়ে ধরে বলবে, 'ইয়া পরওয়ারদেগার, একে জিজ্ঞাসা করুন, কেন সে আমায় সহযোগিতা করেনি। আমার জন্য কেন দরজা বন্ধ করে রেখেছিল?'
সব প্রতিবেশীরই কর্তব্য হচ্ছে_ অপর প্রতিবেশীর অন্যায় বেদনাদায়ক ব্যবহার যথাসম্ভব সহ্য করে নেওয়া। কারণ, তা হবে তার প্রতি এহসান করার শামিল। হজরত আবু হোয়ায়রা (রা.) কর্তৃক বায়হাকী বর্ণনা করেন, একবার এক লোক রাসূল (স.)-এর দরবারে এসে আরজ করল : 'ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে এমন একটি আমল বাতলে দিন, যা পালন করলে আমি বেহেশতে যেতে পারব।
' রাসূলুল্লাহ (স.) এরশাদ করলেন : 'পরোপকারী হও। ' সে নিবেদন করল : কী করে আমি বুঝতে পারব, আমি পরোপকারী হয়েছি? রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন, 'তোমার প্রতিবেশীর কাছে প্রশ্ন করে জেনে নাও, যদি সে বলে তুমি পরোপকারী, তাহলে তুমি পরোপকারী। আর যদি সে বলে তুমি অন্যায়কারী, তবে তুমি, অন্যায়কারী। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।