আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুচ্ছ ঘটনায় একজনের মৃত্যু এবং আরো কিছু তুচ্ছ তথ্য

সভাপতি- বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, সম্পাদক ঢেউ, সভাপতি- জাতীয় সাহিত্য পরিষদ মুন্সীগঞ্জ শাখা গ্রামের বিয়ে বা সুন্নাতে খৎতা অনুষ্ঠানে যাওয়াটা বিড়ম্বনা দায়ক। এখানে নিজেকে অসম্মানিত মনে হয়। আয়োজকরা ১ হাজার জনকে দাওয়াত দেয় খাবার দেয় ৫/৭ বৈঠকে। এতে ১/২শ লোক একসাথে খেতে বসে। কিন্তু খাওয়ার অপেক্ষায় থাকে এর কয়েকগুণ।

একজন খাচ্ছে তার ঘাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে ২/৩ জন। এটা অসভ্যতাই। যাদের গায়ের জোর আছে তারাই দখলে নেয় খাওয়ার টেবিল। অন্যরা থাকে অপেক্ষায়। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে এক সময় খাওয়া ফুরিয়ে যায় অথবা পরিবেশ খাওয়ার আরো অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

এমনি এক সুন্নতে খৎনা অনুষ্ঠানে গত পরশু মারা গেল শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের ইউনুছ ঢালী। প্রথম আলোসহ অধিকাংশ পত্রিকাতেই সঠিক তথ্য আসেনি। ইউনুছ ঢালীর এক আত্মীয় একাই দখল করেছিলেন কয়েকটি আসন। খেতে আসা নুরু কাড়াল এবং মিরাজ কাড়াল এর সাথে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর মধ্যে এগিয়ে আসে মাছবিক্রেতা ইউনুছ ঢালী(৪৭)।

সে হার্টের রোগী। এখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে পায়ের স্যান্ডেল খুলে হাতে নেয়। মিরাজ কাড়াল ও নুরু কাড়াল এ পর্যায়ে ইউনুছ ঢালী ও অন্যদের সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। মিরাজ ও নুরুর কিল ঘুষি ইউনুছ ঢালীর উপর বর্ষিত হয়। তড়িৎই বিষয়টি মিটমাট করা হয়।

ইউনুছ ঢালী একটি চেয়ারে বসা অবস্থায় জানায় তার ভাল লাগছে না। লোকজন তাকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে সে মারা যায়। মারামারিতে জড়িত ছিল মিরাজ ও নুরু। মামলা হয়েছে চার ভাইয়ের নামে।

অন্য দুজন হল আবুল কালাম রিপন কাড়াল এবং শহিদুল ইসলাম কাড়াল। এর মধ্যে রিপন ঐ স্থানে উপস্থিত ছিল না এবং শহিদুল মিমাংশা করে পরিস্থিতি শান্ত করে। চারজন ছাড়াও আরো কয়েকজন অজ্ঞাত নাম দেয়া হয় মামলায়। এতে একজন গ্রেপ্তার হয়। সে শহিদুলের জুতার দোকানের স্টাফ।

তাকে আজ মুন্সীগঞ্জে চালান করে দিয়েছে শ্রীনগরের পুলিশ। মুন্সীগঞ্জের সাংবাদিকগণ শুধু এজাহার দেখে রিপোর্ট লিখেছেন। শ্রীনগরের সাংবাদিকরা অবশ্য মোটামোটি সঠিক তথ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। আমাদের গর্বিত তরুণ সমাজের অবস্থা দেখুন। দুই তরুণ তাদের চেয়ে দ্বিগুণ বয়েসি একজনকে কিলঘুষি মারল।

আমাদের সমাজ দেখুন, যারা মারামারি করেনি তাদের বিরুদ্ধেও খুনের মামলা করে দিয়েছে। আমাদের নেতাদের দেখুন তারা এরি মধ্যে গুফে তেল দিয়েছে- বড় ভাগের আশায়। আমাদের পুলিশ দেখুন, তারা সত্য মিথ্যা মিলিয়ে মামলা রেকর্ড করেছে। এখন এরা পয়শার ধান্ধা করবে। এখন একজন মাছ বিক্রেতা ইউনুছ ঢালী পরিবারের কি হবে? তিনি ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

লোকটিতো মারা গেল? একটি খুন হয়ে গেল, এটাই বড় কথা। আবুল কালাম রিপন কাড়ালদের পরিবারের অবস্থাও ভয়াবহ। সবাই সম্ভবত পলাতক। উপার্জনক্ষম চার ভাই মামলায় ফেঁসে গেলে এই বৃহৎ পরিবারের কি অবস্থা হবে? দুটি পরিবারই কি ধ্বংস হয়ে যাবে? আর নেতা ও পুলিশ গুফে তেল দিবে আর হাতে ঘুষের টাকা গুনবে? আমরা জানি একজন মানুষও এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।