আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

.....স্বপ্নীল (পর্ব - ১)

জীবন বদলায়, রূপকথা বদলায় না...... - আবীর!!! শহীদ মিনারের সামনে মাঝরাস্তায় গাড়িদুটো হার্ডব্রেক করে দাঁড়িয়ে পড়ে। রিমির ডাকে হুঁশ হয় আবীরের। ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিল ও। একটুর জন্য বেঁচে গেছে। সেখানেই দাঁড়িয়ে রিমির দিকে তাকিয়ে বোকা বোকা একটা হাসি দেয় আবীর।

তা দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে যায় রিমির। রাস্তা পার হয়ে আসার পর তাই আচ্ছাতরফে ঝাড়তে থাকে ওকে। - মানুষ এতো কেয়ারলেস হয়? আরেকটু হলেই তো মরতিস। - তুই আছিস না! তোকে রেখে মরি কেমনে, বল? - হাহ। (মুখ ভেংচি কাটে রিমি) তোর মত কেয়ারলেস ছেলে যে কি ডাক্তার হবে আল্লাহ মাবূদ জানে! দেখা যাবে অপারেশনের সময় রোগীর পেটে ছুরি, কাঁচি সব রেখে চলে আসবি।

- হাহাহাহা। সেটা একেবারে খারাপ বলিস নাই। তবে মরে গেলে আর সে রিস্ক থাকবেনা। - আবার ফাজলামি? - আচ্ছা বাবা স্যরি। ভুল হয়ে গেছে ম্যাম।

এবার বলেন, জরুরী তলব কিসের? কাজ না থাকলে তো আমার কথা ভুলেও মনে পড়ে না। - তোমার তো খুব মনে পড়ে!!! - পড়েই তো। না হলে বলার সাথে সাথে এভাবে ছুটে আসি??? (প্রশ্ন নিয়ে তাকায় রিমি) - চল। কোথাও গিয়ে বসি। তারপর শোনা যাবে তোর কথা।

স্লো মিউজিকের একটা গান বাজছে। আলো আঁধারীর রহস্যেঘেরা কফি কর্নারের এক পাশে রিমি আর আবীর বসে আছে। - বল এবার। কি বলবি? - বেশকিছুদিন ধরে না আমার কাছে একটা ফোন আসছে। ছেলেটার নাম স্বপ্নীল।

আমার সম্পর্কে সে প্রায় সবকিছুই জানে। এমনকি হলে আমার রুম নম্বরটাও তার জানা। সব কথাই বলে শুধু তার সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করলে জবাব দেয় না, এড়িয়ে যায়। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তার একটা করে চিঠি পাই। সত্যি বলতে কি??? আমি রীতিমত তার চিঠির ফ্যান হয়ে গেছি।

এতো সুন্দর করে যে আমাকে কেউ চিঠি লিখতে পারে, আমি কখনোই ভাবিনি। - বাহ। তাহলে তো হয়েই গেল। সমস্যাটা কি? - সমস্যা কি মানে?? একটা অজানা-অচেনা ছেলে আমাকে প্রতিদিন ফোন করে, আমার সম্পর্কে সব জানে, এটা কোন চিন্তার ব্যাপার না??? - হুমম, বুঝলাম। তা চিঠির উপর কোন নাম-ঠিকানা থাকেনা? - না।

- চিঠিগুলো এনেছিস? দেখি? - এই নে । (চিঠিগুলো আবীরের হাতে দেয় রিমি। ) - হুমম। হাতের লেখা চিনতে পারিস? মনে তো হচ্ছে তোর পরিচিত কেউ? নইলে এতো কিছু জানবে কেমনে? - আমারও তাই মনে হয়। কিন্তু কে হতে পারে বুঝতে পারছি না।

আচ্ছা চল উঠি এখন। নইলে হলের গেট আবার বন্ধ করে দিবে। - হুমম। চল। কফি-কর্নার থেকে বের হয়ে পাশাপাশি হাঁটতে থাকে ওরা দুজন।

- কিরে চুপ করে আছিস যে? - কি বলবো? - তোর গার্লফ্রেন্ডের কি খবর? - হুমম...ভালোই। - এমন কাঠখোট্টা ভাবে জবাব দিচ্ছিস যে? কিছু হয়েছে নাকি? - কি আবার হবে? - কুছ তো হ্যায়...কি হয়েছে তাড়াতাড়ি বল। - কিছুই হয়নি। ও ওর মতো আছে, আর আমি আমার মতো। - মানে? - সুচি অনেক ভালো একটা মেয়ে রে।

অনেক ভেবে দেখলাম ও আসলে ঠিক আমার জন্য না। ওকে বুঝিয়ে বললাম সেটা। প্রথম প্রথম কিছুটা কষ্ট পাবে জানি, কিন্তু একটাসময় আসবে যখন সব ঠিক হয়ে যাবে। সুচিও বুঝতে পারবে। - এতোকিছু হয়ে গেলো, অথচ তুই আমাকে জানানোর প্রয়োজনও বোধ করলি না? - তুই রেগে যাচ্ছিস কেন? - রাগবো না??? আমাকে তুই বন্ধুই ভাবিস না।

তাই কখনো আমাকে তোর কোন সমস্যার কথা বলিস না। অথচ আমার সমস্যার কথা শুনলে ঠিকই ছুটে আসিস। কেন আবীর? আমি তো তোর বন্ধুত্ব চেয়েছিলাম, মহত্ত্ব দেখতে চাইনি। আমার বন্ধুত্বটাকে এক্সেপ্ট করতে কোথায় বাধলো তোর? - রিমি!!!! - প্লিজ। আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না।

তুই যা এখন। রিমি কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়...। যতক্ষন দেখা যায়...আবীর নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে ওর দিকে। একটা সময় রিমি পুরোপুরি চোখের আড়ালে চলে যায়। অনেক কিছুই বলার ছিল, কিন্তু কিছুই বলা হয় না আবীরের।

রাতের নির্জনতাকে সংগী করেই উদ্দেশ্যহীনভাবে হেঁটে চলে ও... .....স্বপ্নীল (পর্ব - ২) .....স্বপ্নীল (শেষ পর্ব ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।