আমি ওসামা বিন নূর। আমি ভালবাসি নিজে সচেতন হতে এবং অন্যদের সচেতন করতে আর ভালবাসি লেখালেখি, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, শিশুদের কিছু করা, কমিউনিটি সার্ভিস ইত্যাদি। আমি বাস্তবতায় বিশ্বাস করি। মানুষের জন্য এমন কিছু করতে চাই যেন তারা আমাকে নিয়ে অহংকার করতে পারে। আ আমরা চারপাশের নানা সমস্যা সম্ভাবনা লক্ষ করি, আবার অনেকে এড়িয়ে চলি।
অনেকে এসব সমস্যা সমাধানে চিন্তা করেন, সম্ভাবনাকে আরও গতিশীল করার সদিচ্ছা পোষণ করেন। আর এসব সমাজ উন্নয়নের চিন্তা তখনই একজন মানুষের মাথায় চিন্তা চেতনায় অবির্ভাব হয় যখন ব্যক্তির তার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এই ব্যক্তিকে আমরা তখন বলি সচেতন নাগরিক। এ ধরনের সচেতন নাগরিক গড়ার লক্ষ্যে সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ সোসাইটির উদ্যোগে পাহাড়ি সৌন্দর্যে ঘেরা সবুজের চাদরে মোড়ানো বন্দরনগর চট্টগ্রামে আয়োজিত হয় প্রকৃতির মাঝে সামাজিক দায়বদ্ধতা তৈরির প্রশিক্ষণটি। ঢাকা থেকে অংশগ্রহণ করে ৬০ জনের একদল মেধাবী তরুণ-তরুণী যাদের একাংশ আমেরিকান এম্বাসি থেকে বৃত্তি অর্জন করে ল্যাংগুয়েজ প্রফিসিয়েনসি কোর্সটির জন্য।
চট্টগ্রাম থেকে অংশগ্রহণ করে ৩০ জন তরুণ শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারী সবাই তরুণ। একটি রাষ্ট্র বা সমাজের উন্নয়ন অগ্রগতি ও সঠিক পরিবর্তনের জন্য তরুণ যুবদের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি কার্যকর এবং শক্তিশালী। অসচেতনতার অভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ এবং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তারুণ্যের গোড়া থেকেই যেন প্রত্যেককে সচেতন নাগরিক করে গড়ে তোলা যায়-৩ দিনের আয়োজনটি এ বিষয়কে কেন্দ্র করে।
সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে তার সমাধান ও সম্ভাবনাকে নিয়ে ছোট গ্রুপে আলোচনা করা এবং কীভাবে সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায় সেই প্রশিক্ষণটিও। ফয়’স লেক, চট্টগ্রাম আমেরিকান কর্নার এবং হোটেল অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন ধাপে কর্মশালাগুলো পরিচালিত হয়। কর্মশালাগুলো পরিচালনা করেন বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি মো. ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার নাসিদ শাহরিয়ার, সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মো. তৌফিক আহমেদ খান, এক্সিকিউটিভ মেম্বার মো. মারুফ ওয়ালি, বাংলাদেশ ইয়ুথ এনভায়রনমেন্টাল ইনিশিয়েটিভের প্রেসিডেন্ট মো. সামির শিহাবসহ বিভন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী অর্ধশতাধিক তরুণ-তরুণীকে ৬টি গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয় এবং ছোট ছোট গ্রুপে আরও সহজে বিষয়গুলো সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করার জন্য। কর্মশালার বৃত্তে না থেকে নির্দিষ্ট বিরতিতে শিক্ষাভ্রমণে পার্বত্য অঞ্চলের সমুদ্রতীরে সৌন্দর্য অবলোকন করে তারা।
ফয়’স লেকের সব রাইডে হইহুল্লোড় আর সি ওয়ার্ল্ডেও পানির রাজ্যে নিজেদের ডুবিয়েছিল পাহাড়ের মাঝে। তা ছাড়া চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে সাক্ষাত্। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের একমাত্র বাটারফ্লাই পার্কে হাজারো প্রজাপতির সঙ্গে লুকোচুরি খেলা। তাদের অবাক করা জীবনচক্র সম্পর্কে অবগত হওয়া আর প্যাডেল বোটে চড়ে বেড়ানো। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই মেরিন ড্রাইভ রোডে সবার আগমন।
বর্ণনাতীত সৌন্দর্যের একটি স্থান। সাগরের উত্তাল ঢেউ থেকে মেরিন ড্রাইভ রোড রক্ষার্থে তৈরি আইল্যান্ডের ওপর সবাই বসে নিস্তব্ধ হয়ে কোমল বাতাসের ছোঁয়ায় দেখছিল প্রকৃতির জাদু। কর্মশালার শেষ দিন রাতে ফয়’স লেকে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অংশগ্রহণ করে ৬টি গ্রুপ। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রিয় বাংলাদেশকে ফুটিয়ে তুলেছিল প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী। তার পরেই শুরু হয় সনদপত্র বিতরণ এবং অবশেষে অনুভূতি প্রকাশের সেশনে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী নিজেকে পরিবর্তন করে তার বাস্তব জীবনে সমাজ উন্নয়নের প্রতিজ্ঞা করে।
প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী, স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ও সংগঠককে সদনপত্র বিতরণ করা হয়। পুরো আয়োজনটির পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল আমেরিকান দূতাবাস ঢাকা।
picture ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।