স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সরকারের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন জনের রয়েছে বিভিন্ন মত। তবে সাধারণ জনগণের রয়েছে একেবারেই ভিন্নমত। আপনি একজন ব্যবসায়ীকে প্রশ্ন করেন যিনি এরশাদ সরকারের আমলেও ব্যবসা করেছেন- ভাই আপনি এরশাদ, খালেদা, হাসিনা কোন সরকারের আমলে ভালভাবে ব্যবসা করতে পেরেছেন? ৮০% ব্যবসায়ী মত দিবেন- এরশাদের আমলে ব্যবসার অবস্থা ভাল ছিল। একজন রিক্সাওয়ালাকে যদি প্রশ্ন করেন- আপনি কোন আমলে ভাল ছিলেন? তিনিও ঐ মত পোষন করবেন। একজন দিনমজুরকে প্রশ্ন করলেও একই মত পোষন করবেন।
বলবেন এরশাদের আমলেই সবকিছু স্বস্তায় পাওয়া যেত। ঢাকা শহরের কথা চিন্তা করুন। যাকেই প্রশ্ন করবেন- কোন সরকারের আমলে ঢাকা শহরের উন্নয়ন বেশি হয়েছে? উত্তর ঐ এরশাদ সরকারের আমলে। আজকে দেশে দুর্নীতি, বিদ্যুৎ ও সন্ত্রাশ হচ্ছে প্রধান সমস্যা। একজন সাধারণ নাগরীককে যদি প্রশ্ন করেন- কোন সরকারের আমলে দুর্নীতি কম ছিল? উত্তর আসবে- এরশাদ সরকারের আমলে।
যদি প্রশ্ন করেন- কোন সরকারের আমলে বিদ্যুৎ সমস্যা কম ছিল? উত্তর ঐ একই। সন্ত্রাসের ক্ষেত্রেও একই উত্তর। তাই যদি হয় তাহলে, এরশাদকে শৈরাচার বলা হয় কেন? কেন শৈরাচার উৎখাতে এত রক্ত ঝড়ল? কেন গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিতে হল ডা. মিলন, নূর হোসেনসহ আরো কতজনকে? আমরা কি এই গণতন্ত্র চেয়েছিলাম?
গত ১৫ জুলাই শনিবার চট্টগ্রামে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামীলীগ, বিএনপির অনেক নেতা সহ অন্যান্য বুদ্ধিজীবিগণ মত দিয়েছেন- এরশাদের রাজনীতি, জামাতের রাজনীতি, বিএনপির রাজনীতি আর আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আজ আর কোন পাথর্ক্য নাই। আওয়ামীলীগের নেতাগণই বলছেন- আওয়ামীলীগই আজ নিজেদেরকে এরশাদ, জামাত, বিএনপির রাজনীতির সমকাতারে নিয়ে এসেছে। তাহলে আমরা এখন কোন গণতন্ত্রে আছি? সাধারণ জনগণের জন্য গণতন্ত্র আসলে কি? সাধারণ জনগণের আসল ভাবনা- গণতনন্ত্র বুঝিনা সুখে আছি কিনা! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুতের মেগাওয়াটের হিসাব তারা বুঝেনা, তারা দেখতে চায় সুইচ টিপলে বাতি জ্বলে কিনা।
আগের সরকার বারটা বাঝিয়ে গেছে এটি এখন পুরাতন রেকর্ড।
তাহলে জনগণ কি পেল? সংবিধানের ১৫শ সংশোধনীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জনগণের গণতন্ত্র জনগণকে ফিরিয়ে দিলাম। এই গণতনন্ত্রের সুফল হিসাবে জনগণ একের পর এক হরতাল আর সহিংসতায় অতিষ্ট। ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন। বুদ্ধিজীবিগণ টু টুয়েন্টির আশংকা ব্যাক্ত করছেন।
তাহলে কিসের গণতন্ত্র জনগণ পেল? এক নেত্রী সংবিধানের ব্যবচ্ছেদ করছেন আর এক নেত্রী ঐ সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন। এটা কোন ধরণের গণতন্ত্র? আমরা কি এমন গণতন্ত্রই জাতীয় নেত্রীদের কাছে আশা করি?
আমরা সেই দেশের গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছি, যেই দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের ঢোল নিজেই বাজান। সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরতে নিজেকেই কলম হাতে নিতে হয়। সেই দেশের গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছি, যেই দেশের বিরোধীদলীয় নেত্রী মাথা ব্যাথা হলে মাথাই কেটে ফেলে দেন। সংবিধান নিয়ে সমস্যা সংবিধানই ছুড়ে ফেলে দেন।
সেই দেশের গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছি, যেই দেশের চাটুকার নেতা এরশাদ আওয়ামীলীগ বিএনপির কাদা ছোড়াছুড়ির সুযোগে হাততালি দেন আর ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।