'... আমাদের আশার কোনো পরকাল নাই'
16 বছরের গণতান্ত্রিক জীবনে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটা যে কতো ধরণের নাটক দেখলো, তার হিসাব দিতে গেলে মনে হয় মহাকাব্য সাইজ হয়ে যেতে পারে। 16 বছর ধরে টুকরো টুকরো করে জমতে জমতে সেই নাটক একটি মেগাসিরিয়ালে রূপ নিয়েছে। কড়কড়ে কাইমেঙ্রে সমন্বয় সেখানে ঘটে গেছে এবার এসে। এই কাইমেঙ্ েসর্বশেষ সংযোজন ক'দিন আগেও অসুস্থতায় ধুঁকতে থাকা এবং হঠাৎ করে তাগড়া হয়ে ওঠা 'টু ইন ওয়ান' রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
এই ঘোষণা দেশটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে, কতো বিপদের মুখে পড়বে কিংবা এই ঘোষণার মাধ্যমে কতো বাধাহীনভাবে 22 জানুয়ারির নির্বাচনটি হবে অথবা তাতে কতো লাশ পড়বে_ সেই হিসেব দেয়া শুরু হবে কাল থেকে।
বড় বড় মাথাওয়ালারা এখন এ নিয়ে বড়ই ব্যতিব্যস্ত!
বড় মাথাওয়ালাদের এই ব্যতিব্যস্ততা আমরা আগেও দেখেছি। সেই যে যেবার তত্ত্বাবধায়ক নামের ফমর্ুলাটি বাংলাদেশের সংবিধানে যোগ হয়, তখনও এমনি ছিলো। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো আস্থা। কারণ যারা মতায় যান তারা জনগণের আস্থা নিয়েই যান। আবার সেই মতায় যারা বসেন তারা যে দেশের সব ভোটারের ভোট পান, তা নয়।
তারা পান সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট। কাজেই সেই সংখ্যাগরিষ্ঠের পাশাপাশি 'সংখ্যালঘিষ্ঠ' নাগরিকদের আস্থা অর্জনও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অন্যতম অংশ। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আস্থার সেই সংকট এতোটাই চরমে পৌঁছে যে সন্ত্রাসী দুর্বৃত্তদের 5 বছর লুটপাটের সুযোগ করে দিতেই আমরা 90 দিনের জন্য ফেরেশতা বসাতে চাই! কাজেই রাষ্ট্রটিতে কোনোদিনও গণতান্ত্রিক পরিবেশ স্থিতিশীলতা পায়নি, আস্থা অর্জন করার কোনো প্রচেষ্টা না থাকায়। কাজেই আজকের এই সংকট যেভাবে তৈরি হয়েছে, তাতে ইয়াজউদ্দিনের কিছুই যাবে আসবে না। কারণ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সংপ্তি যাত্রাকালে যে জিনিসটি কখনোই জন্ম নেয়নি কিংবা বলা যায় নানা কৌশলে জন্মাতে দেয়া হয়নি সেটিই হলো আস্থা।
এখন জরুরি অবস্থা জারি হয়ে গেছে। মানে লোকদেখানো নির্বাচনটিও হবে না, সংবিধান মতেই। জরুরি অবস্থায় কীভাবে প্রচার-প্রচারণা চলবে? কাজেই রাষ্ট্রটির গণতান্ত্রিক ইতিহাসের অনিবার্য গন্তব্য এখন ইউনিফর্মওয়ালাদের হাতে যাবার আশঙ্কা অথবা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সুতরাং 16 বছরের ইতিহাসে একটি পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সব ধরণের সম্ভাবনা প্রায় নিঃশেষ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।