আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হায়রে শাহবাগ, কি ছিলি, কি হইলি

...ঘুম সকল রোগের মহৌষধ... ...কয়েকটা কথা, দয়া করে পড়বেন... শাহবাগের আন্দলন শুরু হয়েছিল অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা নিএ, অনেকদিনের ব্যর্থ ক্রোধ পুঞ্জিভুত হতে হতে একসময় ন্যায্য পাওনা না পেয়ে জনতার নিশাল এবং স্বতঃস্ফূর্ত বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এবং আশা করা যাচ্ছিল এই আন্দোলন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ জনতার আন্দোলন হিসেবেই থাকবে। সরকার দলীয় কিছু সুজগ সন্ধানি নেতা মঞ্চে উঠতে গেলে তাদের বোতল ছুড়ে মেরে তাড়ানোর ইতিহাসও প্রথম আমি শাহবাগের কাছ থেকেই দেখেছি। অসংখ্য তরুন তরুণী রিকশাচালক ও দেশের সরবস্তরের মানুশের যে বিপুল উদ্দিপনা আর দাবি আদায়ের যে কঠোর মনভাব তা আজ অনেকদিন বাঙালি জাতি দেখেনি। কিন্তু... এখানে বাংলাদেশের একটা পরিস্থিতি বলতে চাই, যেকোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে যখন কোন ধরনের লেবার আন্দোলন হয় তখন কিছুদিন মালিক পক্ষ চুপ থাকে।

স্রমিকেরা নানা ধরনের আল্টিমেটাম বেধে দেয়। মালিক পক্ষ বসে বসে কিছু মজা দেখে। এক সময় দেখা যায় ওই শ্রমিক দল থেকে এক একজন নেতা বের হয়, তার মুখের কথাই সব। কিছুদিন পরে মালিক পক্ষের সাথে ওই নেতার পর্দার অন্তরালে কিছু চুক্তি হয়, মালিক পক্ষ ঘোষণা দেয় "সব দাবি মেনে নিলাম, তাল গাছ এখন তোমাদেরই, তবে কিনা দাবি দাওয়া মানতে কিছুদিনের সময় প্রয়োজন, ওই সময়টা দয়া করে আমাদের দাও। নেতা সাহেব সুন্দর মত সেই টিয়া পাখির বুলি শ্রমিকদের শোনায়, "ধৈর্য ধর বাবা, হবে সব হবে, কিন্তু আস্তে আস্তে।

" সেই বুলিতে আশ্বস্ত হয়ে শ্রমিকরা আবার কাজ শুরু করে। মালিক পক্ষও তাদের "Good Will" দেখানর জন্য বেতন ১০০০ টাকার জায়গায় ৫০ টাকা বাড়িয়ে দেয়। কোন শ্রমিক তাতে খুশি হয় না। কিন্তু তাদের নিজেদের কাজ আছে, সংসার আছে, দিনের পর দিন আন্দোলনে পরে থাকলে তাদের পেট ভরবে না, তারা চুপ হয়ে যায়, আবার আগের মত কাজ শুরু করে। না করেই বা উপায় কি? অইদিকে মালিকপক্ষ সব নেতৃস্থানীয় সকল নেতাকে নিজের পকেটে ভরে নিজের ওয়াদার কথা ভুলে স্বার্থ হাসিলের জন্য উঠে পড়ে লাগে।

যেসকল শ্রমিক এই সমাধানে এক চুল পরিমান ও খুশি হয়নি, তারা আর কিছু বলে না, আর বলেই বা লাভ কি? নেতারা আছেন, উনারা সব বুঝেন, মাঝখান দিয়ে আরেকটা ক্যাচাল কে লাগাবে শুনি? মালিকপক্ষ তখন ইচ্ছামত নাচায় ওই নেতাদের, তাদের দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করায়, আর দাবি করে সকল শ্রমিক তাদের পক্ষে আছে, সকল সমর্থন এখন তাদেরই। অন্য সাধারন মানুশ এর প্রতিবাদ করলে ওই ব্যাটা বিশৃঙ্খলাসৃষ্টিকারী বদমাইশ। তাই কোন শ্রমিক আর সাধারন জনগন কিছু বলার সাহস পায় না। আস্তে আস্তে তাদের ওই নেতারা সারা মাঠে সেই মালিক পক্ষের গুনগান গাইতে থাকে এবং উনাদের ৫০ টাকা বেতন বাড়ানোকে এত চমৎকার করে হাইলাইট করে যে উনাদের গার্মেন্টসে যে কিছুদিন আগেই ২০০জন পুড়ে মারা গেছে এইটা কারো খেয়াল থাকে না। তবুও মনের ভুলে ওই কথা কেউ তুললেই "আপনি যখন বেতন আদায় করতে যান তখন কি আগুন এর জন্য কয়টা সিকিউরিটি ডোর লাগান হইসে এই প্রশ্ন করেন?" ইত্যাদি প্রশ্ন করে দাবড়ে জনতার মুখ বন্ধ করে দেয়।

এভাবে করে এক ঢিলে কয়েকশ পাখি মেরে ফেলে মালিক পক্ষ, ১. সামান্য কনা পরিমান চাহিদা পুরন করে শ্রমিক আন্দোলনকে পুরোপুরি নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়, ২. নিজে স্বার্থ ষোল আনা হাসিল করে, ৩. বিরোধী যেকোনো মতামত কে বিশৃঙ্খলা আখ্যা দিয়ে নিজে সকল স্বার্থ ব্যাকডোর দিয়ে হাসিল করে নেয়। ৪. সাধারন শ্রমিকরা যারা অনেক আশা নিয়ে আন্দোলনে গেছিল তাদের মুখ চিরতরে বন্ধ করে দেয়, ৫. নিরপেক্ষ জনগন মিনমিন করে কিছু বলার চেষ্টা করলে দাবড়ানি দিয়ে চুপ করিয়ে রাখে। ৬. জনগনের নৈতিক সমরথন যে তাদেরই দিকে তা বারবার নানা তিভি চ্যানেলে ফলাও করে বর্ণনা করতে থাকে (যদিও মানুষ জানে আসল কাহিনি কি) ৭. নিজের যেকোনো দোষ যেকোনো উপায়ে অন্য পক্ষে চাপানর চেষ্টা করে, এবং সফলও হয়। . . . . এর সাথে শাহবাগ আন্দলনের কোন সম্পরক খুজে পেলে তা অনভিপ্রেত এবং কাকতালীয় মাত্র। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.