কানাকে কানা, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না, ইহাতে উহারা কষ্ট পায়
হায়রে আমাদের মিডিয়া! হায় পিলাখানা!! হায়রে সেনাবাহিনীর তদন্ত রিপোর্ট!!! গত ২৫ ও ২৬ ফ্রেরুয়ারী পিলখানায় ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনা নিয়ে আমাদের দেশের মিডিয়া প্রথম দিন যেভাবে রিপোর্ট দিল তাতে সারাদেশের মানুষ স্বভাবতঃই বিডিআর জওয়ানদের প্রতি মমতাবোধ জাগিয়ে সমর্থন আদায় করেছিল। কিন্তু পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারী মিডিয়ার বিপরীত মুখী অবস্থান দেখা গেল। সেনাবাহিনীর নির্যাতন আর বিডিআর-এর প্রতি সীমাহীন বঞ্চনা ঢাকা পড়ে গেল মুহুর্তেই। জানা গেল পিলখানায় লাশ আর লাশ। সেনা অফিসার বাদে সেই লাশ আর লাশ গুলো কাদের জানা গেল না।
ঘটনার সময় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বেঁচে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের সাাৎকারে অনেক তথ্য বের হলো। মেজর শামস নামে একজন বললেন, সকাল সোয়া ৮টার দিকে একটি ছাই রংয়ের পিকআপে করে কয়েকজন বহিরাগত পিলখানায় ঢুকে অস্ত্র সরবরাহ করে যেসব অস্ত্র বিডিআরে ছিল না। তাদের দেয়া অস্ত্র নিয়েই প্রথমে কয়েকজন জওয়ান ও বহিরাগত প্রথম হামলা করে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে পত্রিকায় সেনাবাহিনীর তদন্ত রিপোর্টে এসব তথ্য নেই। তদন্ত রিপোর্টে যেসব তথ্য জানা গেছে তা হলো বিডিআর তাদের অবৈধ কর্মকান্ড চালাতে গিয়ে সেনা অফিসারদের বাধার মুখে সেনা অফিসারদের প্রতি বিরাগভাজন হয়ে এহেন কর্মকান্ড করেছে, কোন বহিরাগত ব্যক্তি এতে জড়িত ছিল না, কোন রাজনৈতিক নেতাদের কেন আমলে আনা হলো না সেটা বোধগম্য নয়।
তাহলে আমরা টিভিতে যে জওয়ানদের বঞ্চনা আর বৈষম্যের কথা সরাসরি জওয়ানদের মুখে শুনেছিলাম, সেগুলো ছিল মিথ্যা। সঙ্গতকারণেই বলা যায় যে যার মতো করে ভাবে। সেনাবাহিনী যে বিডিআর-এর প্রতি কিরুপ বৈরী আচরণ করতো তা ঢাকা পড়ে গেল। ঢাকা পড়ে গেল তাদের বঞ্চনার কথা, তাদের ন্যায্য দাবীর কথা। তাহলে এই তদন্ত রিপোর্টকে নিরপে বলি কি করে?
অন্যদিকে মিডিয়াতে এখন বিদ্রোহী জওয়ান ছাড়াও যে বৃহৎ অংশ বিডিআর নির্দোষ ছিল তা আর প্রচার করা হচ্ছে না।
এখন মনে হয় বিডিআর মানেই খুনী, অপরাধী। উক্ত বিদ্রোহে কত জন বিডিআর মারা গেছে তার সঠিক কোন হিসাব নেই। বর্তমানে বিডিআরদের পরিবার পরিজনের কি অবস্থা তা কোন মিডিয়ায় জানা যাচ্ছে না। ঘটনার পরে এখন পর্যন্ত প্রায় ২২ জন জওয়ান মারা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের নামে যে নির্যাতন তাদের উপর চালানো হয়েছে এবং এতে এদের মৃত্যু হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বলা হচ্ছে বেশীর ভাগই অসুস্থ্য হয়ে অথবা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে।
দীর্ঘ সীমান্ত পাহারায় এরা বিএসএফের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে রাখতো, তারাই হঠাৎ করে হৃদরোগে আক্রান্ত হলো! এতোই দুর্বল এসব সৈনিকেরা?
সেনাবাহিনীর কাছে এর চেয়ে বেশী কিছু আশা করা যায় না। বিদ্রোহে জড়িত ছাড়াও বাকীদের উপরে বর্তমানে সেনাবাহিনী যে অমানুষিক অত্যাচার করছে তাতে মনে হয় এই বাহিনীকে তারা শেষ করে দিবে। সরকার বা বিডিআর কোন প থেকেই জওয়ানদের পরিবারকে কোন আশ্বাস দেয়া হচ্ছে না। সবকিছুর একটা শেষ আছে, কিন্তু মনে হয় পিলখানার ঘটনায় সেনাবাহিনীর কর্মকান্ড শেষ হবে না। সুদুর প্রসারী........সীমাহীন এর কোন শেষ নেই।
দোষী, নির্দোষ কারও পরিবার এখনও শংকামুক্ত নয়, কতদিন অপেক্ষা করা যায়, কতকাল আর এভাবে থাকতে হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।