হায়রে দেশ হায়রে জনসংখ্যা : কিছু সক্রিয় ভাবনা
সেই শিশুকাল থেকে শুনে আসছি বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। একজন মানুষ কত বছর যাবৎ একই চেহারা নিয়ে
থাকতে পারে তা একটি গবেষনার বিষয়। কিন্তু আমরা একটি দেশ/ জাতি হিসেবে বেশ কয়েক দশক একই উন্নয়নশীল
চেহারা নিয়ে টিকে আছি। কিন্তু উন্নয়ন তো ঐ জনসংখ্যা বাড়ানো এবং অভাব বাড়ানো ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না।
বাংলাদেশ প্রতি বছর বিশ্বের অগ্রসরমান জাতি থেকে কয়েক বছরের পিছনে সরে যাচ্ছে।
আর আমাদের স্বাবলম্বী হওয়ার
বাসনা অপূর্ণতার দিকে পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলেছে। ভুল নায়কের হাতে নিজেদের ও দেশের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আমরা
কোন এক অলৌকিক মহানুভবের অপেক্ষায় আছি যিনি তার জাদুর কাটি দিয়ে আমদের জাগিয়ে তুলবেন, সবাইকে
একত্রিত করে আমাদের দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সেই মহানায়কও আসেন না আর আমাদের দুর্ভোগও
শেষ হয় না।
জন্ম নিয়ন্ত্রন নিয়ে প্রচুর হৈচৈ হলেও এক্ষেত্রে সাফল্য বলা যায় আসেইনি। ১৯৭১ এ আমাদের জনসংখ্যা ছিল ৭.৫ কোটি
আর এখন তা ১৫ কোটির উপরে।
এই ৩৫ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে। একমাত্র কিছু মধ্যবিত্ত এ ব্যাপারে সচেষ্ট।
আর গরীবরা তো এটাকে এখনো হারাম জানে এবং অনেক ক্ষেত্রেই এই বিশ্বাস নিয়ে চলে মুখ দিয়েছেন যিনি আহার
দিবেন তিনি। তিনি বলতে এরা যে আল্লাহকে বোঝান তা নিয়ে কারো কোন দ্বন্দ নেই। দ্বন্দ আছে এখানে তিনি সচারাচর
এই দায়িত্ব পালন করেন না।
যাদের দু’জনের ভাত জোগাড় করার সামর্থ্য নেই তারা যখন একের পর এক সন্তান উৎপাদন
করে চলে তখন দেশের অবস্থাও তাদের মত হাড় জিরজিরে হয়ে যায়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন এখনো জনসংখ্যা সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে না। আপাতদৃষ্টিতে কোন সমাধান নেই। কারণ সমাধান
থাকলে তা আমাদের সুচতুর পলিটিশিয়ানরা নিশ্চয় বের করে ফেলতেন এবং যেনতেন উপায়ে এর বাহবা নিতেন। তাহলে
উপায় কি ? এর উত্তরে বলা স্বল্প মেয়াদী কোন উপায় নেই।
যেকোন উন্নয়নের পুর্বশর্ত হচ্ছে শিক্ষা আর শিক্ষা অর্জনের
কোন শর্টকাট রাস্তা নেই। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা আওতায় সবাইকে শিক্ষিত করতে হবে আর তা ধনী-গরীব, ছেলে-মেয়ে
নির্বিশেষে। প্রয়োজনে ১০ বছরের জন্য সন্তান জন্ম দেয়া নিষিদ্ধ করতে হবে। এই ১০ বছরে দেশের অধিকাংশ মানুষকে
শিক্ষিত করে ফেলতে হবে। এরপর এদের কর্মসংস্থান করতে হবে।
আর বর্তমানে প্রচলিত কর্মসূচী সহায়ক উপায় হিসেবে কাজ করতে পারে। যেমন সরকার রেডিও টেলিভিশনে অনেক
অনুষ্ঠান করছে, এন.জি.ও কাজ করছে। আসল কথা হলো এসবই হচ্ছে মুষ্ঠিমেয় কিছু লোককে কেন্দ্র করে। বলা যেতে
পারে তাদের নিয়ে যারা এসব ব্যাপারে সচেতন। আবার সচেতন ব্যক্তিরাও যে এ ব্যাপারে সচেতন তা নয়।
কারন এখনো
একটি পুত্র বা কন্যা সন্তানের জন্য অনেকেই একের পর এক বাচ্চা জন্ম দিয়ে চলেছে। অবস্থা এমন যে বাচ্চা জন্ম দেয়া
ছাড়া এদের আর কোন কাজ নেই। একটি মেয়ে যদি সারা বছর তার বাচ্চা নিয়ে থাকে তাহলে তো আর তার শরীর ও
মনের বিশেষ কিছু থাকে না। আর নারীবাদীরা এসব নিয়ে কথা বলেন না। কেন জানি মনে হয় তারাও এসব ব্যাপারকে
বোধ হয় সেই পুরোনো দিনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের মতই ধারনা পোষন করেন।
যে হুমায়ূন আহমেদ পরিবার পরিকল্পনা
নিয়ে ব্যাপক নাটক তৈরি করছেন তার সন্তান সংখ্যা কত ? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য তিনি চার সন্তানের জনক। ওহ ভুল হয়ে
গেল সমপ্রতি তিনি আরেকটা সন্তানের পিতা হয়েছেন। যেখানে বলা হচ্ছে ছেলে হোক মেয়ে হোক সর্বোচ্চ দু’টি সন্তানই
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।