আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্ত্রী হত্যার ১৯ দিন পর শালিকার মন গলাতে তাবিজ-কবজ করতে এসে কোটচাঁদপুর শ্বশুরবাড়িতে দুলাভাই ধরাশায়ী

সংসার আমার ভাল লাগে না ...সংসার হইলো বিষের কলশি ,আমি হইলাম দিওয়ানা... স্ত্রীকে পছন্দ না হওয়ায় এবং স্ত্রীর ছোট বোনকে ভালো লাগার কারণে স্ত্রীর শরীরে কীটনাশক পুশ করি। কিছুক্ষণ পরে সে বিষক্রিয়ায় ছটফট করতে থাকলে আমি তার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করি। ’ এভাবেই শ শ মানুষের সামনে নিজ স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করলো ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাপুর গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম। স্ত্রী মারা যাওয়ার ১৯ দিন পর গত শুক্রবার রাতে কোটচাঁদপুর উপজেলার পারলাট গ্রামে শ্যালিকা ও শ্বশুর-শাশুড়ির মন গলানোর জন্য তাবিজ-কবজ করতে এসে হাতেনাতে ধরা খেয়ে তার অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করে শরিফুল। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, গত ৪ মাস আগে কোটচাঁদপুর উপজেলার পারলাট গ্রামের ওহিদুল ইসলামের মেয়ে আয়শা খাতুনের সাথে মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাপুর গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলামের (২২) পারিবারিকভাবে দেখাশনার মাধ্যমে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসে বেশ কয়েকবার শরিফুল। এরই মধ্যে শরিফুলের চোখ পড়ে স্ত্রীর ছোট বোন আসমার ওপর। স্ত্রী হত্যাকারী পাষণ্ড শরিফুল জানায়, তার স্ত্রী আয়শাকে প্রথমে ভালো লাগলেও পরে ভালো লাগতো না। সেজন্য সে স্ত্রীর ছোট বোন আসমাকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার পরিকল্পনা করে।

কিন্তু স্ত্রী বেঁচে থাকলে সে আশা তার পূরণ হওয়ার নয় বুঝতে পেরে বিয়ের ৪ মাসের মাথায় গত ৫ জুন রাতে নিজ বাড়িতে ভিটামিন ইনজেকশন বলে স্ত্রী আয়শার শরীরে শরিফুল নিজে মর্টার নামক কীটনাশক পুশ করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর বিষক্রিয়ায় আয়শা ছটফট করতে থাকলে নিজ ঘরের খাটের ওপর স্বামী শরিফুল স্ত্রী আয়শার মুখের ওপর বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। হত্যা নিশ্চিত করে রাতেই বাড়ির অন্যান্য সদস্যকে জানায়, আয়শা কেমন যেনো করছে। এ সময় সকলে শরিফুলের ঘরে ছুটে যেয়ে দেখতে পায় আয়শা মারা গেছে। আয়শা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার চালানো হয়।

কিন্তু আয়শার পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলেও তেমন প্রমাণ তাদের হাতে না থাকায় সবকিছু মেনে নিয়ে আয়শার দাফন সম্পন্ন করা হয়। আয়শা মারা যাওয়ার ১৯ দিন পর গত শুক্রবার বিকেলে শরিফুল আসে শ্বশুর বাড়িতে। রাতে ঘরের দরজার সামনে মাটি খুঁড়ে তাবিজ রাখতে গেলে শাশুড়ির হাতে ধরা পড়ে। ওই রাতেই বিষয়টি পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হয়ে গেলে সকলে শরিফুলকে ডেকে তাবিজ পুঁতে রাখার কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, আসমাকে তার খুব ভালো লাগে। তাকে বিয়ে করতে চায়।

সে জন্য আসমাসহ শ্বশুর ও শাশুড়ির মন গলানোর জন্য সে যশোর কলারোয়ার এক কবিরাজের কাছ থেকে ৩শ টাকার বিনিময়ে এ তাবিজ আনার কথা স্বীকার করে। এ কথা শোনার পর আয়শার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হলে তাকে কোনোরকম মারধর ছাড়াই জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্ত্রী আয়শা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টির বিশদ বিবরণ দেয়। রাতে শরিফুলকে ঘরে আটকে রাখে এলাকাবাসী। সকালে এ খবর চারপাশে ছড়িয়ে পড়লে শ শ মানুষ এসে শরিফুলের মুখ থেকে তার পাপের কথা শুনে ধিক্কার জানায় তাকে। সকালে এলাকার নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম ও আয়শার পিতা ওহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন মহেশপুর থানায় এ ঘটনা অবহিত করে মামলা করতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেয়।

কোনো উপায় না পেয়ে ফিরে এসে শেষ পর্যন্ত কোটচাঁদপুর থানা পুলিশের হাতে শরিফুলকে তুলে দেয় তারা। এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার ওসি আকরাম হোসেন বলেন, এ হত্যার ঘটনাটি যেহেতু মহেশপুর থানা এলাকায়, সেহেতু মামলাটি মহেশপুর থানায় হওয়ার কথা। এখন যদি মহেশপুর থানা এ মামলা না নেয় তাহলে এ আসামিকে ৫৪ ধারায় চালান দেয়া ছাড়া আমার কিছুই করার থাকবে না। ঘটনাটি ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার জানতে পেরে মহেশপুর থানাকে মামলা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী মহেশপুর থানার ওসির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.