আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হারানো স্মৃতি ফেরাবে যন্ত্র!!!

আলঝেইমারের মতো স্মৃতিভ্রষ্টতাসহ অনেক রোগেই মানুষ স্মৃতি হারিয়ে ফেলতে পারে। কখনো তা স্বল্প সময়ের জন্য, আবার কখনো দীর্ঘ সময়ের জন্য। কিন্তু সেই হারানো স্মৃতি ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় বিজ্ঞানীরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। তাঁরা মস্তিষ্কে এমন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র সফলভাবে স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন, যা হারানো স্মৃতি ফিরিয়ে আনবে। এর পাশাপাশি তা স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সহায়তা করবে।

বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর এর পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। মানুষের ক্ষেত্রে বিষয়টি সফল হলে আলঝেইমারের মতো স্মৃতিভ্রষ্টতাসহ মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় বৈপ্লবিক অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই গবেষণার কাজটি করেছেন। এতে নেতৃত্ব দেন ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম এ ডেডাওলার। নিউরাল ইঞ্জিনিয়ারিং সাময়িকীর গত শুক্রবারের সংখ্যায় তাদের গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়।

গবেষণাগারে কিছু ইঁদুরকে প্রথমে একটি পাত্র থেকে পানি খেতে দেওয়া হয়। ওই পাত্রে দুটি দণ্ড আছে। এর একটি দণ্ডের ওপর চাপ দিতে পারলে পাত্র থেকে পানি পাওয়া যায়। এটি দু-চারবার করতে করতে ইঁদুরগুলো বুঝে ফেলে পানি খেতে হলে কোন দণ্ডটি চাপ দিতে হবে। এরপর ওষুধের মাধ্যমে ইঁদুরের স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে দেওয়া হয়।

তারপর ইঁদুরের মস্তিষ্কে একটি সূক্ষ্ম ইলেকট্রনিক যন্ত্র বসিয়ে সুইচ চালু করে দেওয়া হয়। এতে যন্ত্রটি মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাসের দুটি বড় অংশকে উদ্দীপিত করে, মস্তিষ্কে স্মৃতি সংরক্ষণে প্রধান ভূমিকা পালন করে এই হিপ্পোক্যাম্পাস। তখন ইঁদুরগুলোর আবার মনে পড়ে যায়, পানি খেতে হলে পাত্রের কোন দণ্ডটি চাপ দিতে হবে। অর্থাৎ ইঁদুরগুলো আগের স্মৃতি ফিরে পায়। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থিওডর বার্গার বলেন, সুইচ চালু করলেই ইঁদুরগুলো স্মৃতি ফিরে পায়।

আবার সুইচ বন্ধ করলে তারা ভুলে যায়। গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ইঁদুরগুলো যখন স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে তখন ওই যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কে স্নায়বিক উদ্দীপনা দেওয়ার পর দেখা গেছে, তাদের স্মৃতিশক্তি অনেক বেড়ে গেছে। অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো ঘটনার ৬০ শতাংশ স্থায়ীভাবে মনে রাখতে পারত এবং বাকি ৪০ শতাংশ একটু পরে ভুলে যেত। কিন্তু স্নায়বিক উদ্দীপনা দেওয়ার পর তারা ভুলে যাচ্ছে মাত্র ১০ শতাংশ। বাকিটা তাদের মস্তিষ্কে সংরক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো পর্যন্ত গবেষণাগারে ইঁদুরের পর্যায়েই রয়েছে, মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, মানুষের ক্ষেত্রেও এটি কাজ করবে। আর যদি তা-ই হয়, তাহলে আলঝেইমারের মতো মানুষের স্মৃতিভ্রষ্টতা রোগসহ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও অন্যান্য আঘাতজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনার চিকিৎসায় এটা হবে যুগান্তকারী এক অধ্যায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.