আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্ররাজনীতি নিয়ে নাটক লেখা কি অন্যায়?? টিভি চ্যানেলগুল রাজনীতি নিয়ে টকশো করতে পারে। নাটক বানাতে ভয় কিসের? একজন সহসী পরিচালকের অপেক্ষায়!

সব কথা বলা যাবে, সত্যটা বলা যাবে না। অরাজনৈতিক রম্যনাটক উল্লাস (মানিক, জাহের সাথে রুমমেট দু’ছাত্র খাটে বসে তাস খেলছে। আলতাফ রুমে প্রবেশ করে। আলতাফ ছাত্রনেতা। জাহের মানিক তার ডান-বাম হাত।

জাহের স্টেটকাট কথা বলার মানুষ। তার পকেটে অস্ত্র থাকে সবমময়। মানিক তেল মারা ছাড়া কথা বলতে পারে না। আলতাফরা একটু ঝামেলা মধ্যে আছে। কারণ তাদের নেতা সেল্টারদাতা জুলমত এখন জেলে।

যাকে আলতাফ বড়গলায় বড় ভাই ডাকে। তবে আশার কথা জুলমত ভাইয়ের জামিন হয়েছে। আলতাফ জুতা খুলেছে। ) আলতাফঃ উকিলের পিছে দৌড়াইতে দৌড়াইতে আমার জান শ্যাষ। সাথে জুতার তলাও এক ইঞ্চি শ্যাষ।

জাহেরঃ বস, জুলমত ভাইয়ে কোন খবর আছে? আলতাফঃ ভাল খবর আছে! জুলমত ভাইর জামিন হইছে। জাহেরঃ সত্যি! আমরা কখন ফুলের ফুলের মালা নিয়ে যাুিছ। আলতাফঃ এখানে সমস্যাটা বলতে পারিস আবার আমাদের ভাগ্যের দোষ। জুলমত ভাইয়ের জামিন হইল। জর্জ বেলে সই করবেন।

তখন হঠাৎ জর্জঅসুস্থ হয়ে পড়লেন। হার্ড এ্যাটাক তো আর খবর দিয়ে আসে না। পরে তিনি এক সপ্তাহরে ছুটি নিয়েছেন। আগামী রবি বার ইনশাল্লাহ্ জুলমত ভাইকে আমরা জেলগেট থেকে নিয়ে আসতে পারবো। জাহেরঃ কত তারিখ? আলতাফঃ ১৫ তারিখ।

সকাল দশটায় সবাই ফুলের মালা নিয়ে আমরা জেলগেট থেকে তাকে নিয়ে আসতে পারব। সবাই আনন্দ মিছিল করতে করতে চলে আসব ক্যাম্পাসে। মানিকঃ কত তারিখ? আলতাফঃ ১৫ তারিখ, ক্যান কি হইছে? জাহেরঃ ১৫ তারিখে আমাদের পরীক্ষার ডেট পড়ছে। আলতাফঃ ডেট পড়ছে। ডেট পাল্টাইবো।

মানিকঃ নতুন চেয়াম্যান খুব কড়া। মাদ্রাজ থেকে পি, এইচ, ডি করা। তামিল তামিল ভাব। ছাত্রছাত্রীর কথা পত্তা দেন না। খুব রাগি।

আলাতফ ঃ ডেট না পাল্টায়া যাইবো কই। আমার ক্যাম্পাসে আমার কথার উপর কোন কথা নাই। আমার কথাই হইল সিদ্ধান্ত। জাহেরঃ দেখেন পরীক্ষার ডেট বদলাতে পারেন কিনা। আলতাফ তার হাত ঝাঁকিয়ে বলে।

আলতাফঃ ঐ ব্যাট বলদের মতো কথা কবি না। এই আমি আলতাফ যদি পরীক্ষার ডেট পাল্টাইতে না পারি তাহলে হাতে চুড়ি দিয়া ক্যাম্পাসে ঘুরবো। বলে রাখলাম। দৃশ্যান্তর (স্যার তার রুমে বসে টেলিফোনে কথা বলছেন। আলতাফ এসে ঢুকবে।

) আলতাফঃ স্যার, আসলামুআলাইকুম। স্যারঃ ওয়ালাইকুম। জাহেরঃ স্যার আমাদের আলতাফ ভাই। আমাদের ডিপার্টমেন্টে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। স্যারঃ ও।

আমি তৃতীয় বর্ষের এনালাইটিক্যাল ক্যামেষ্টি পড়াই। তোমাকে কোন দিন ক্লাশে দেখি নাই। আলতাফঃ স্যার আমি কিছুদিন সংঘঠনের কাজে বিজি ছিলাম। এই কয়দিন ক্লাশে আসতে পারি নাই। স্যারঃ ও, এখন বিজি শেষ হয়েছে।

জানো পরীক্ষার ডেট পড়েছে। আলতাফঃ স্যার আমাদের দলের জনপ্রিয় নেতা জুলমত ভাই গ্রেফতার হইছেন নিশ্চই শুনেছেন? স্যারঃ পত্রিকায় তার ছবি দেখেছি। আলতাফঃ স্যার জুলমত ভাই আমাকে অত্যান্ত øেহ করেন। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তার চরিত্র হরণের জন্য বিরোধীদলের লোকেরা ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে দিয়েছে।

স্যারঃ আমি কি করতে পারি? আলতাফঃ স্যার আপনাকে কিছু করতে হবে না। জুলমত ভাইয়ের জামিন হয়েছে। স্যারঃ ভালো। গ্রেফতার যখন হয়েছেন। জামিন তো হবেই।

আলতাফঃ এখন আমরা যারা তার পেছনে রাজনীতি করি। সে কারগার থেকে বের হলো। দেখল আমরা কেউ জেল গেটে নেই। তাহলে তার মনে কষ্ট হবে না। স্যারঃ হবে।

হওয়াটাই স্বাভাবিক। আলতাফঃএখন আমারা যারা এই লাইনে রাতদিন শ্রম দেই তাদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। স্যারঃ তাতো কিছুটা হবেই। আলতাফঃ স্যার তাইলে বুঝতে পারছেন। এখন আমাদের উচিত না জুলমত ভাইকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়া।

স্যারঃ উচিত। আলতাফঃ এখন স্যার সমস্যা হলো আমাদের ১৫তারিখে কোয়ান্টাম রসায়ন পরীক্ষা। এখন পরীক্ষাটা ডেট চেঞ্জ করা উচিত না। স্যারঃ কোন যুক্তিতে? আলতাফঃ আমাদের নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়ার যুক্তিতে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই দাবি কি অযৌক্তিক? স্যারঃ আমি যদি বলি তোমার নেতাকে একদিন পিছিয়ে জেল থেকে বের হতে? তোমাদের পরীক্ষার জন্য দেশপ্রেমিক নেতা একদিন জেলে না হয় থাকলই।

পরের দিন বের হলো তোমরা তাকে ফুলের মালা পরিয়ে একটা শো-ডাউন করলা। আলতাফঃ এইডা স্যার আপনি বুঝে বলছেন, না নাবুঝে বলছেন আমি বুঝতে পারছি না। স্যারঃ আমি ঠান্ডা মাথায় বলেছি। পরীক্ষা পেছানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আলতাফঃ একটু বিবেচন করে দেখুন।

স্যারঃ আমি আবার বলছি পরীক্ষা পেছানো সম্ভব না। এখন যাও গিয়ে পড়তে বসো। পড়ার জন্য এখানে ভর্তি হয়েছো। কোন নেতার গলায় ফুলের মালা পরানোর জন্য নয়। আলতাফঃ স্যার আমাদের পরীক্ষায় এটেন্ট করা সম্ভব না।

স্যারঃ যাও ভালো ভাবে পড়াশুনা করো। সুন্দর ক্যারিয়ার গড়। এই দলবাজি বাদ দাও! আলতাফঃ স্যার, এখন কি পরীক্ষা পেছানো হুেছ না। স্যারঃ না। আলতাফঃ এর পরিণাম কিন্তু ভালো হবে না।

স্যারঃ তুমি ভুলে যেও না আমিও একদিন তোমার মত ছাত্র ছিলাম। আমি তোমার স্টেজ পার হয়ে এখানে এসেছি এবং এই চেয়ারে বসেছি। এখন তুমি আসো। আলতাফ রাগে ফুলতে ফুলতে বেরিয়ে যায়। (আলতাফ মানিক জাহেরকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।

দেয়ালে নোটিশ বোর্ড টানানো। নোটিশ বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থেকে বোর্ডটা ছুড়ে ফেলে দেয়। ) দৃশ্যান্তর যুথি রাস্তা দিয়ে হেটে যায়। আলতাফ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। যুথি চলে যাওয়ার পর মোবাইল বের করে মানিককে ফোন দেয়।

আলতাফঃ তোরা কোথায়? মানিকঃ ভাই, বকুল তলায় আছি। আসা লাগবো? আলতাফঃ তোগো কাজ না থাকলে একটু আয়। মানিকঃ কাজ থাকলেই কি। আপনি ডাকছেন এইটাই আমাগো এখন বড় কাজ। আসছি।

(আলতাফ মোবাইল পকেটে রেখে পায়চারি করে। ) দৃশ্যান্তর (আলতাফ মানিক ও জাহেরকে ধরে একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে যাবে। ) আলতাফঃ আুছা তোরা আমার বন্ধু না? জাহেরঃ অবশ্যই। আলতাফঃ তবে আমি কিন্তু তোদের আমার বন্ধু মনে করিনা। আমি মনে করি ভাই।

নিজের মায়ের পেটের ভাই। জাহেরঃ সেইটা আলতাফ ভাই আপনার মুখে বলতে হইবো না। আপনি না থকলে আমরা দুইজন এই ক্যাম্পাসে বুকের ছাতি ফুলাইয়া হাটতে পারতাম? পারতাম না। মানিকঃ প্রতিপক্ষরা আমাগো বুকের ছাতি ভাইঙ্গা হলা বাইর কইরা ফালাইতো। আলতাফ ঃ এখন আমার একটা উপকার করতে হইবো।

মানিকঃ বলেন, আপনার জন্য শইলের সব রক্ত দিয়া ফালামু। এইডা আমার ওয়াদা। আলতাফঃ রক্ত দিতে হইব না। আমি বেচে থাকতে তোদের গা থেকে একফোটা রক্ত মাটিতে পড়তে দিব না। মানিকঃ আলতাফ ভাই এখন কি করতে হইবো শুধু অর্ডার দেন।

আলতাফঃ আমার একটা মেয়েকে ভালোলাগে। জাহেরঃ কি বললেন? আলতাফঃ একটা মেয়েকে দেখে মনের মধ্যে কেমন জানি লাগল, আমি তোদের বুঝাতে পারবো না। মানিকঃ বুঝানের দরকার নাই। বুঝতে পারছি। জাহেরঃ কোন সাবজেক্টে পড়ে? আলতাফঃ মনে হয় নতুন ভর্তি হইছে।

আগে কোনদিন ক্যাম্পাসে দেখি নাই। মানিকঃ এখন একটা মাইক্রোবাস ভাড়া করেন? আলতাফঃ কি জন্য? মানিকঃ ঐ মেয়েকে তুলে নিতে হবে না। আলতাফঃ আগে এসব চিন্তা বাদ দে। মানিকঃ কি করতে হবে শুধু বলেন? আলতাফঃ মাথা গরম করিস না। মানিকঃ আপনার মাথা ঘুইড়া গেছে শুনার পর আমার মাথা ঠিক নাই।

আমার মাথাও ঘুরতাছে। আলতাফঃ শোন নারীর ব্যাপারে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। আমাদের সংঘঠনেক একটা মেয়ে আছেনা। ঐ তোরা মাঝে মাঝে মিছিলে আসে। মানিকঃ পাপিয়া।

আলতাফঃ পাপিয়া একটু বলে দেখ। ও মেয়ে মানুষ। মেয়ে মানুষে মেয়ে মানুষের সাথে সহজে মিশতে পারে। ওকে বল আমার জন্য এই কাজটা করে দিতে। মানিকঃ আপনে কোন চিন্তা করবেন না।

এখন সব চিন্তা আমাদের। আমরা পাপিয়ার কাছে যাুিছ। দৃশ্যান্তর (জাহের মানিক বসে আছে। পাপিয়া এসে দাড়ায়। ) পাপিয়াঃ কি রে হঠাৎ স্মরণ! মিছিলে মেয়ে লাগবে? জাহেরঃ আগে বস।

(পাপিয়া বসে। ) জাহেরঃ তোকে একটা কাজ করে দিতে হবে। পাপিয়াঃ আমার কাছে তো তোদের একই কাজ। মিছিল হবে সামনে পাচঁজন মেয়ে লাগবে। মেয়েরা মিছিলের সামনে থাকলে ক্যামেরায় মিছিল সুন্দর লাগে।

মানিকঃ তুই না মাঝে মাঝে দিলে চোট দিয়ে কথা বলিস। দিলে কষ্ট পাই। পাপিয়াঃ হইছে! মানিকঃ আমরা আজ অন্য কাজে এসেছি। আলতাফ ভাইয়ের উপকার করতে হবে। পাপিয়াঃ আলতাফ তো সবার উপকার করে বেড়ায়।

আমি আবার ওর কি উপকার করব। মানিকঃ আলতাফ না আলতাফ ভাই বল। পাপিয়াঃ আমি কি এখন মঞ্চে আছি যে আলতাফ ভাইইইই বলে পাম দিতে হবে। মানিকঃ তবে আলতাফ ভাইয়ের এখন একটা সম্মানি লোক এটা তোকে স্বীকার করতেই হবে। পাপিয়াঃ তুই কি চামচামি ছাড়া কথা বলতে পারিস না।

জাহেরঃ আলতাফ ভাইয়ের একটা মেয়েকে পছন্দ হয়েছে। পাপিয়াঃ আমাকে কি করতে হবে? মানিকঃ মেয়েটিকে চুলে ধরে আলতাফ ভাইয়ের সাথে প্রেম করতে রাজী করতে হবে। পাপিয়াঃ আমি কি অন্যনেত্রীদের মত চুলাচুলি করি? জাহেরঃ না, তোকে ঐ মেয়েটির সাথে আলতাফ ভাইকে সরাসরি মানে মুখমুখি এডজাস্ট করে দিতে হবে। পাপিয়াঃ সে মেয়েটিকে বিয়ে করবে এই তো? জাহের ঃ ঠিক ধরেছিস। সে মেয়েটিকে বিবাহ করবে।

পাপিয়াঃ তাহলে তোরা মেয়ের বাবাÑমার কাছে আলতাফের বাবা মাকে যেতে বল। জাহেরঃ তুই এতো কথা প্যাচাস ক্যান? তুই মেয়ের সাথে আলতাফ ভাইয়ের সাথে একটা ব্যাবস্থা করবি। কি ভাবে করছ তোর ব্যাপার। পাপিয়াঃ আমি জেনেশুনে একটা মেয়েকে আলতাফের মত একটা একটা ছেলের সাথে কেন পরিচয় করে দিবো? জাহেরঃ কারণ আমরা তোকে বলেছি। আমরা তোর সহযোদ্ধা? একই সংগঠন করি? পাপিয়াঃ আুছা যা জানাবো।

দৃশ্যান্তর (যুথি দাড়িয়ে আসাদের সাথে গল্প করছে। পাপিয়া তাকে ডেকে একটু দূরে নিয়ে যাবে। ) পাপিয়াঃ তুমি অনেক সুন্দরী মেয়ে, তোমার নাম কি? যুথিঃ যুথি। পাপিয়াঃ তুমি কোন বিষয়ে পড়ো? যুথিঃ ফিজিক্সে। পাপিয়াঃ আমি কেমিস্টিতে পড়ি।

ফিজিক্সে আমার অনেক ফ্রেন্ড আছে। তোমার যদি কোন নোটের দরকার হয় বলবা। আমি সংগ্রহ করে দিব। যুথিঃ আুছা আপু বলবো। পাপিয়াঃ তোমার গ্রামের বাড়ি কোথায়? যুথিঃ বরিশাল।

পাপিয়াঃ বরিশালের একটি ছেলে আছে। আলতাফ, তুমি চেন? যুথিঃ কোন আলতাফ? পাপিয়াঃ আমাদের ক্যাম্পাসের ছাত্রনেতা। যুথিঃ আপু আমি নতুন। এখনো অনেককে চিনি না। পাপিয়াঃ আুছা রাজনীতিবিদ ছেলেদের তোমার কেমন লাগে? যুথিঃ একদম ফালতু মনে হয়।

ওদের আমি দু'চোখে সহ্য করতে পারি না। পাপিয়াঃ আসলে তুমি পাত্তি নেতাদের দেখেছো। বড় নেতাদের অনেক ক্ষমতা। টাকা ক্ষমতার সম্মান মিলে রাজনীতিবিদ। তুমি বিশ্বাস করবে না আলতাফ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অবস্থায় ঢাকা শহরে একটা ফ্ল্যাট কিনে ফেলেছে।

যুথিঃ তবুও আপু আমি রাজনীতি করে এমন ছেলেদের একদম সহ্য করতে পারি না। পাপিয়া ঃ তুমি ভেবে দেখ। এখন কিছু বলার দরকার নেই। যুথিঃ আপু আমাদের ক্লাশের সময় হয়েছে। আমি আজ ক্লাশে যাই।

পাপিয়াঃ আুছা যাও। (যুথি কিছু দূর গিয়ে আবার ফিরে এসে পেছন থেকে পাপিয়াকে ডাকবে। ) যুথিঃ আপু! পাপিয়াঃ কিছু বলবে? যুথিঃ আপু আপনি কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম। পাপিয়াঃ বল, আমি মনে কিছু করব না। যুথিঃ আপু, আমি একটা ছেলেকে পছন্দ করি।

পাপিয়াঃ ও, ছেলেটি কি এখানে পড়ে? যুথিঃ জ্বি, আমাদের ডিপার্টমেন্টেই পড়ে। পাপিয়াঃ ঐ ছেলেটা, ঐ যে লম্বা। যার সাথে দাড়িয়ে কথা বলছিলে। যুথিঃ জ্বি, আপু। পাপিয়াঃ ও।

যুথিঃ তাহলে আমি আসি আপু। পাপিয়াঃ আুছা যাও। (যুথি চলে যাবে। পাপিয়াও ফিরে আসবে। ) দৃশ্যান্তর (পাপিয়া হেটে আসে।

মানিক জাহের ওর অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে। ) জাহেরঃ খবর কি? যুথিঃ হবে না। জাহেরঃ হবে না মানে? যুথিঃ সে একজনকে ভালোবাসে। মানিকঃ সুন্দলী মেয়েদের নিয়ে এই এক সমস্যা। সবাই হুক লাগানো থাকে।

জাহেরঃ হুক লাগানো দেখে কি হইছে? আগে কলেজে পড়ছে কলেজে একটা প্রেম করছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে এখনে নতুন প্রেম করবো। পাপিয়াঃ এখন তোদের কথায় ঐ মেয়েকে আলতাফের সাথে প্রেম করতে হবে? মানিকঃ আবশ্যই। আমাদের কথায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ করতে হলে আলতাফ ভাইয়ের সাথে প্রেম করতে হবে।

পাপিয়াঃ শোন, মেয়েদের মন ক্যাম্পাস না। অস্ত্র নিয়ে হাঁক ডাক দিয়ে ক্যাম্পাস দখল করা যায় কিন্তু মেয়েদের মন পাওয়া যায় না। মানিকঃ বিখ্যাত মনীষী আলবার্ট আরবার্ট মিসকক বলেছেনÑযেই জন ক্যাম্পাস দখল করতে জানে সেইজন নরীর মামুলী মনও দখল করতে জানে। পাপিয়াঃ তোর তৈরি করা মনীষী এই কথা বলে নাই যারা বর্তমানে ক্যাম্পাস দখল করে রেখেছে ভবিষ্যতে তারা প্যাদানী খেয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত হবে। মানিকঃ তুই যদি মেয়ে না হয়ে ছেলে হলে তাইলে রে মামা তুই দিনে দুই বেলা আমাদের হাতে ডলা খাতি।

আমাদের সংগঠন করলেও বাচতি না। পাপিয়াঃ তোদের ভাগ্য ভালো আমি ছেলে হই নাই। আমি ছেলে হইলে তোগো গ্রুপের সবগুলারে ধরে ধরে তুলোধুনো করতাম। (জাহের থমথমে গলায় বলে। ) জাহেরঃ এখন যা।

পাপিয়া চলে যাবে। দৃশ্যান্তর (মানিক জাহের রুমে বসে আছে। আলতাফ আসবে। ) আলতাফঃ কিরে পাপিয়া কি বলল? মানিকঃ বস, এইটা মেয়েদের কাজ না। আলতাফঃ তাহলে ও কিছু করে নাই।

জাহেরঃ পাপিয়া ঐ মেয়ের সাথে কথা বলেছে। এখানে একটু সমস্যা হয়েছে। আলতাফঃ কি সমস্যা? জাহেরঃ যুথি এক ছেলেকে ভালোবাসে। আলতাফঃ কোন ছেলে? জাহেরঃ ওর সাথে একই সাবজেক্টে পড়ে। আলতাফঃ এই কথা আমাকে শুনতে হলে তোরা আছিস কেন? জাহেরঃ আজ ঐ পোলারে ক্যাম্পাসে খুঁজেছি।

পাই নাই। মানিকঃ ওরে মেরে তক্তা বানিয়ে সেই তক্তা দিয়া বেঞ্চি বানাব। আপনি আর যুথি সেই বেঞ্চিতে বসে বাদাম খাইবেন। আলতাফঃ বেশি কিছু করার দরকার নাই। জানছ তো জুলমত ভাই জেলে।

প্রথমে হাফডোজ দিবি তারপর কাজ না হলে ফুল ডোজ। মানিকঃ এই বিষয় নিয়া চিন্তা করলে আমরা আছি কি জন্য। আলতাফঃ আুছা আমি আমার রুমে যাই। (আলতাফ চলে যাবে। জাহের মানিক মন খারাপ করে বসে থাকবে।

) দৃশ্যান্তর (আসাদ হাটবে। মানিক জাহের সাথে দু’জন ছেলে সহ পেছন থেকে ডাকবে। ) জাহেরঃ তোমার নাম কি? আসাদ ঃ আসাদ। জাহেরঃ তোর নামে তো অনেক অভিযোগ আসছে। আসাদঃ কেন কি হইছে? জাহেরঃ তুই মেয়েদের মোবাইলে ডিষ্টাব করছ কেন? আসাদঃ কে বলছে? জাহেরঃ আবার কয় কে বলছে।

তোর ফোন দেহি। (আসাদের হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয়। ফোন বুক চেক করে। ) জাহেরঃ যুথি কে? আসাদঃ আমার গার্ল ফ্রেন্ড! মানিকঃ যুথি তোর নামে বিচার দিছি। আসাদঃ কি বলেন ভাই।

(ওর ঘার ধরে নিচু করে পিঠের উপর কয়টা ঘুষি মারে। ) মানিকঃ দুইদিন ধইর‌্যা ক্যাম্পাসে আইছে। আবার বড় ভাইদের মুখে মুখে তর্ক করে। আবার কয় কি বলেন ভাই। (আসাদকে হালকা পাতলা ধোলাই দিবে।

) জাহেরঃ শোন তোরে যদি আর যুথির সাথে দেখি, মামা তোর আমরা কোড়ানি দিয়া নারিকেল কি ভাবে কোড়ায় দেখছস? মানিকঃ একদম কোড়ায়া ফালাইম। আসাদঃ মনে রাখবেন আমি সিদ্দিক ভাইয়ের ছোট ভাই। জাহেরঃ ঐ ব্যাটা সিদ্দিক কে। ঐ এই ক্যাম্পাসে সিদ্দিক কে? (সিদ্দিকে নাম বলায় আরেক দফা মার খাবে। মেরে ফেলে চলে যাবে।

) জাহেরঃ শালায় আবার সিদ্দিকের কথা কয়। মানিকঃ সিদ্দিকের এই ক্যাম্পাসে খাওয়া আছে? জাহেরঃ রাস্তার পাশে রাখলে কুত্তায় জিগায় না হের পরিচয় দেয়। মানিকঃ দিছি ভালো করছে। আমাদের সেক্রেটারির পরিচয় দিয়ে দ্বিতীয় দফায় মাইরটা খাইল। আইজ ওর কপালে দুই দফা মাইর ছিল।

দৃশ্যান্তর (যুথি একা দাড়িয়ে বার বার ফোনে চেষ্টা করবে। ওপাশ থেকে মোবাইল বন্ধ থাকবে। পাপিয়া যুথিকে ডাকবে। ) পাপিয়াঃ যুথি, একা? তোমার বয় ফ্রেন্ড কোথায়? যুথিঃ জানিনা আপু। ওর মোবাইল বন্ধ।

কোন খোঁজ নেই। পাপিয়াঃ ছেলেরা এমনই হয়। দেখ কোন মেয়ের সাথে বসে গল্প করছে। যুথিঃ ওতো কখনো এমন করে না। পাপিয়াঃ তোমার বয়স কম।

ছেলেদের চিনতে পার নাই। ঐ জাতির প্রতি আমার কোন বিশ্বাস নাই। যুথিঃ হতে পারে। পাপিয়াঃ চল তোমাকে আলতাফ ভাইয়ের সাথে পরিচয় করে দেই। যুথিঃ না, আপু আজ ভালো লাগছে না।

পাপিয়াঃ আরে চলো। নেতার সাথে পরিচয় থাকলে অনেক সুবিধা। হলে সিট থেকে শুরু করে কত যে বেনিফিটেট হবে তুমি চিন্তাই করতে পারবে না। যুথিঃ আরেক দিন যাব। পাপিয়াঃ আরে চলো তো।

এভাবে একা দাড়িয়ে থাকলে মন আরো খারাপ লাগবে। (পাপিয়া যুথিকে ধরে নিয়ে যাবে। ) দৃশ্যান্তর (আলতাফ জাহের মানিকের সাথে দাড়িয়ে কথা বলছে। দূর থেকে দেখবে পাপিয়া যুথি এই দিকেই আসছে। মানিক জাহেরকে নিয়ে সরে যাবে।

) পাপিয়াঃ আলতাফ ভাই কেমন আছেন? আলতাফঃ ভালো তুমি ভালো। পাপিয়াঃ জ্বি, ভালো। আমার ছোট বোনকে নিয়ে আসলাম আপনার সাথে পরিচয় করে দিতে। যুথিঃ স্লামুআলাইকুম। আলতাফঃ ওয়ালাইম আস্সলাম।

আলতাফঃ তোমার নাম কি? যুথিঃ যুথি। আলতাফঃ শোন যুথি ঢাকা শহরের যেখানে তোমার কোন সমস্যা হবে আমাকে ফোন দিবা। আমি সাথে সাথে হাজির হবো। পাপিয়াঃ আুছা তোরা কথা বল। আমি একটু নিউমার্কেটে যাবো।

পাপিয়া বিদায় নিবে। যুথিঃ আপনার গ্রামে বাড়ি কি বরিশাল? আলতাফঃ বরিশাল, কে বলেছে? যুথিঃ পাপিয়া আপু বলল। আলতাফঃ বরিশালেই। যুথিঃ আপনার বাড়ি বরিশালে আমার বাড়িও বরিশালে। আলতাফঃ তুমি আমার দেশের মেয়ে।

তোমার পাশে থাকা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। (জাহের এসে সালাম দিয়ে চলে যাবে। ) জাহেরঃ আসলামুআলাইকুম। আলতাফ ভাই ভালো আছেন? আলতাফঃ জ্বি, ভালো। জাহেরঃ ভাই আমাদের দিকে একটু নজর দিয়েন।

আলতাফঃ তোমার কোন সমস্যা থাকলে বিকালে আমার সাথে দেখা করবা। জাহেরঃআুছা যাই। (জাহের চলে যাবে। ) যুথিঃ আপনার কতো সম্মান। সবাই এসে সালাম দিয়ে যায়।

আলতাফঃ তুমি যদি আমার সাথে থাকো দেখবে তোমাকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই সালাম দিবে। তুমি যদি চাও তুমিও সালাম পাইবা। যুথিঃ সত্যি! আলতাফঃ অবশ্যই। আমার সাথে থাকলে আমার সাথে চললে তুমি আমার সম হইবা ? তুমি বুঝনা... (মানিক আসবে। ) মানিকঃ আসলামু আলাইকুম আলতাফ ভাই।

আলতাফঃ ওয়ালাইকুম। মানিকঃ ভাই ভালো আছেন? আলতাফঃ ভালো। (যুথির দিকে তাকিয়ে। ) মানিকঃ ভাবী ভালো আছেন। আলতাফঃ ভাবী না, আমার চোট বোন ফাস্ট ইয়ারে পড়ে।

মানিকঃ আমি ভাবছিলাম ভাবী। আপনাদের দু’জনকে যে কত মানাইছে। বিশ্বাস করেন যে কেউ দেখলে বলবো... আলতাফঃ আুছা তোমার কোন কথা থাকে তাহলে বিকালে দেখা করো। মানিকঃ আুছা ভাই যাই। (মানিক চলে যাবে।

) যুথিঃ আপনার পাশে থাকা তো দেখছি রীতিমত বিপদজনক। আলতাফঃ আমি পাঁচ বছর ধরে ক্যাম্পাসে আছি। কোন মেয়ের সাথে কথা বলি নাই। আজ প্রথম কোন মেয়ের সাথে ওরা আমাকে দেখেছে তাই হয়তো ভাবছে..। তুমি মাইন্ড করছো? যুথিঃ না, একটু করেছি।

আলতাফঃ তুমি বললে ঐ ছেলেকে ধরে এনে কান ধরে ওঠবস করাবো। যুথিঃ থাক, থাক, তা করতে হবে না। আলতাফঃ তুমি না বললে না। তোমার কথার উপর কথা নাই। যুথিঃ আজ তাহলে আসি।

আলতাফঃ ওকে। (যুথি চলে যাবে। পেছন থেকে মানিক জাহের আসবে। ) মানিকঃ বস মিষ্টি কখন খাওয়াইবেন। আলতাফঃ আগে প্রেমটা হোক।

তারপর খাওয়াব। মানিকঃ হোক কিসের হয়া গেছে। আলতাফঃ আুছা চল মিষ্টি খাওয়াব। মানিকঃ পাপিয়াকে একটা ফোন দেই। আলতাফঃ দে।

(মানিক পাপিয়াকে ফোন করে। ) দৃশ্যান্তর (সিদ্দিক মধ্যবয়স্ক ছাত্র নেতা। তার দু’সন্তান আছে। বড় সন্তান ক্লাশ নাইনে পড়ে। আসাদ তার ছোট ভাইয়ের মত।

তার মনে ইুছা আসাদের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আধিপত্ত্ব বিস্তার করা। তার পরিচয় দেওয়ার পরেও আলতাফের লোকেরা আসাদকে মেরেছে এটা তিনি সহজ ভাবে নিুেছন না। আলতাফকে তার বাড়িতে ডেকে এনেছেন। সিদ্দিকের পাশে আসাদ বসেছে। আলতাফ প্রবেশ করে।

) আলতাফঃ সিদ্দিক ভাই আমাকে স্মরণ করছেন? সিদ্দিকঃ তোমরা এখন আর বড় ভাইয়ের কাছে আসো? আমারাও তো পলিটিক্স করি। এখনও উপরের নেতাদের কাছে গিয়ে পড়ে থাকি। আর তোমরা আমাদের দেখেও না দেখার মতো চলে যাও। আলতাফঃ সিদ্দিক ভাই আপনি এই অপবাদটা আমাকে দিতে পারেন না। সিদ্দিকঃ সেদিন আমি তোমাদের ক্যাম্পাসে গেলাম।

তোমার খোঁজ নাই। সবাই বলে তুমি ক্যান্টিনে। আমি তোমাকে ফোন করলাম। তুমি বল তুমি বাহিরে আছ। আলতাফঃ জানেন তো সভাপতি এখন জেলে।

আমি দৌড়ের উপর থাকি। সিদ্দিকঃ সভাপতি জেলে তাই বলে সংগঠনে কাজ থেমে থাকবো? সভাপতি গ্রেফতার। আমি সাধারণ সম্পাদক। আমি কি সংগঠনের জন্য যোগ্য না। আলতাফঃ সিদ্দিক ভাই আপনি জেলে থাকলে আমি তদবির করতাম না? বলেন করতাম না? সিদ্দিকঃ হয়তো করতা।

তবে সভাপতির জন্য যেমন জান-পরাণ দিয়া খাটো আমার বেলায় মনে হয় এতোটা করতা না। আলতাফঃ সভাপতি হইল আমাদের দেশের লোক। তার হাত ধরে আমি রাজনীতিতে আসছি। তার জন্য আমার একটু অতিরিক্ত ভালোবাস থাকাটা কি অন্যায়? সিদ্দিকঃ এইতো তুমি কথার লাইনে কথা বলছো। সভাপতি তার দেশি ছেলেকে হাত ধরে রাজনীতিতে এনেছেন।

এখন আমার ইুছা করে না আমার দেশি একটা ছেলে রাজনীতিতে আসুক। আলতাফঃ অবশ্যই চাইতে পারেন। সিদ্দিকঃ সেটা তুমি দিয়েছো? আলতাফঃ আমি? সিদ্দিকঃ আমার ছোট ভাই ক্যাম্পাসে আমার পরিচয় দেওয়ার পরে অপদস্থ হয় কি ভাবে? আলতাফঃ আপনার কোন ছোট ভাইকে মেরেছে? সিদ্দিকঃ আসাদ। আলতাফঃ আসাদ আপনার ছোট ভাই সেটা সে না বললে আমরা চিনবো কি ভাবে। সভাপতির কারণে নবীন বরণ আটকে আছে।

নবীণ বরণ হলে সবাই ওকে চিনত। সিদ্দিকঃ সভাপতি জেলে এই কথা তোমাদের মাথায় থাকে! মাথায় থাকলে আমার পরিচয় দেওয়া পরেও ওর গায়ে হাত তুলতে না। আলতাফঃ ভাই আমি একটু দৌড়ের উপর। এখন যদি এমন দু’একটা বিুিছন্ন ঘটনার জন্য আমাকে এসে জবাবদিহি করতে হয় সেটা আমার জন্য সত্যি দুঃখজনক। সিদ্দিকঃ দেখ তোমার সাথে যেই দু’টি ছেলে সব সময় থাকে ওরা তো ওকে মেরেছে।

তাই তোমাকে ডাকলাম। আলতাফঃ আমি যতদূর শুনেছি এই ছেলে একটা মেয়েকে ফোনে বিরক্ত করে। মেয়ে এসে বিচার দিয়েছে। তাই ওকে সাবধান করা হল। এখানে ভর্তি হয়েছে পড়াশুনা করবে।

কি দরকার মেয়েদের বিরক্ত করার। সিদ্দিকঃ এটা তুমি ভালো বলেছো। ও যদি কোন মেয়েকে বিরক্ত করে সেটার জন্য অবশ্যই উপযুক্ত বিচার করতে হবে। এমন কি তুমিও কোন মেয়েকে বিরক্ত করলে সাংগঠনিক ভাবে তোমার বিরুদ্ধ ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে। আলতাফঃ আমি এতোদিন ধরে এই ক্যাম্পাসে।

আমার বিরুদ্ধে মেয়েলি কোন অভিযোগ আছে? সিদ্দিকঃ ছিল না, চাইও না আসুক। তোমাদের সভাপতি জেলে। মনে রাখবে এখন তুমি তদবির করো। তুমি জেলে গেলে কে তদবির করবে? তখন আবার আমাকেই করতে হবে। আলতাফঃ সেটা আপনার মনের ব্যাপার।

সিদ্দিকঃ সংগঠনে মন বলে কিছু নেই। এখানে কাজ চলে কিছু রুলস অনুসারে। এখন তোমাকে আসাদের সাথে পরিচয় করে দিলাম। ও কোন ভুল করলে আমার কাছে সোজা বিচার দিবা। আমি তোমাদের ডেকে তোমাদের সামনে বিচার করবো।

আলতাফঃ আপনার ছোট ভাই। আমারও ছোট ভাই। এখন ওর সকল দায়িত্ব আমার। সিদ্দিকঃ আুছা তোমরা দু’জন আমার সামনে হ্যান্ডশ্যাক করো। দেখি মিলমহব্বত দেখলেও সওয়াব আছে।

(আলতাফ আসাদের কাঁধে হাত রেখে বলবে। ) আলতাফঃ শোন তোমার কোন সমস্যা হলে ক্যাম্পাসে আমার নাম বলবা। সোজা বুক ফুলিয়ে বলবা আমি আলতাফ ভাইয়ের ছোট ভাই। তারপর কেউ কিছু বললে আমি তোমার সামনে বিচার করব। আসাদঃ ঠিক আছে ভাইয়া।

আলতাফঃ সিদ্দিক ভাই। আজ তাহলে আসি। সিদ্দিকঃ চা খেয়ে যাও। এই এখানে চা দে। আলতাফঃ থাক আরেক দিন আসব।

আর ভাবীকে আমার সালাম জানাইবেন। (আলতাফ বেরিয়ে যায়। ) দৃশ্যান্তর (জাহের নোটিশ বোর্ডের দিকে তাকাবে। দেখবে সেই পুরাতন নোটিশ নতুন করে লাগানো। পরীক্ষার তারিখ ১৫ তারিখেই হুেছ।

) জাহেরঃ ভাই, দেখছেন কত সাহস। আবার একই নোটিশ টানাইছে। আলতাফঃ আমাকে স্যার চিনতে পারে নাই। তারে চিনানো ব্যাবস্থা করতে হবে। জাহেরঃ কি করবেন? আলতাফঃ চল কথা বলে দেখি কি করা যায়।

জাহেরঃ আমি নোটিশ ছিড়ে ফেলব? আলতাফঃ এখন থাক। কথা বলে আসি। আমরা ছিড়বো কেন স্যারই ছেড়ার ব্যাবস্থা করবেন। (আলতাফ জাহেরকে নিয়ে স্যারের রুমে যাবে। ) দৃশ্যান্তর (স্যার তার টেবিলে।

পত্রিকা পড়ছেন। আলতাফ গিয়ে পাশে বসবে। ) আলতাফঃ স্যার ওখানে আবার নোটিশ লাগিয়েছে কে? স্যারঃ আমি লাগিয়েছি। আলতাফঃ স্যার আপনাকে বলেছি ১৫তারিখে আমাদের প্রিয় নেতা জুলমত ভাই মুক্তি পাুেছ তাকে আমরা জেল গেট থেকে শুভেুছা জানাতে যাব। স্যারঃ আমি তোমাকে যেতে নিষেধ করেছি।

তুমি যাও। একজনের জন্য তো সবার পরীক্ষা পেছানো সম্ভব না। আলতাফঃ স্যার আপনি কি কথাগুলো বুঝে বলছেন? স্যারঃ এই দেশের অনেক ছাত্রনেতা আছেন তাদের সন্তানেরা স্কুল কলেজের ছাত্র। তুমি দুই এক ইয়ার ড্রপড দিলে মহাভারত অসুদ্ধ হয়ে যাবে না। আর তোমরা যারা ছাত্ররাজনীতি করো তাদের পাঁচ ছয় ইয়ার ড্রপ দেওয়া ঐতিয্য হয়ে দাড়িছে।

জাহেরঃ স্যার শুধু আলতাফ ভাই কেন। আমরা সবাই যাব। স্যারঃ সবাই বলতে তোমরা দু’জনকে বুঝাুছ? জাহেরঃ সবাই বলতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই। স্যারঃ দেখ বাবারা তোমরা গোল্লা যাবার যাও। পুরো জাতিকে গোল্লা নিবা না? আলতাফঃ স্যার আপনি অবুঝের মত কথা বলবেন না।

স্যারঃ যদি একজন ছাত্রও পরীক্ষা দেয় তাহলে আমি পরীক্ষা নিব। আলতাফঃ আমি না চাইলে একটা ছাত্রও পরীক্ষা দিতে পারবে না। আপনিও পরীক্ষা নিতে পারেন না। স্যারঃ দেখা যাক। আমি পরীক্ষা নিতে পারি কিনা।

আলতাফঃ দেখা যাবে। (আলতাফ বেরিয়ে যেতে উদ্যত হবে। স্যার আবার পেছন থেবে ডাকবেন। ) স্যারঃ শোন। আলতাফঃ বলেন।

স্যারঃ তোমরা নেতারা হলে হাতে গুনা কয়েক জন। বিশ্ববিদ্যালরের মোট ছাত্রের তুলনায় তোমাদের সংখ্যা নগন্য। আলতাফঃ তবে স্যার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পরিচালনার দায়িত্ব আমার। আমি যেদিকে নিব তারা সেই দিকেই যাবে। স্যারঃ তুমি নিজেই গোল্লায় গেছো।

তুমি তাদের আর কোথায় নিবে। আলতাফঃ গোল্লায়। (আলতাফ বেরিয়ে যায়। ) দৃশ্যান্তর (আলতাফ বের হয়ে নোটিশ বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থেকে বলবে। ) আলতাফঃ ছিড়ে ফেল! জাহের গিয়ে নোটিশ ছিড়ে ফেলবে।

দৃশ্যান্তর (আলতাফ রাগে ফুলতে ফুলতে এসে বারান্ধায় দাড়াবে। পাশ দিয়ে আসাদ যুথিকে নিয়ে যাবে। ওরা আলতাফকে দেখে এগিয়ে আসবে। জাহের চামে কেটে পড়বে। ) আসাদঃ আলতাফ ভাই ভালো আছেন? আলতাফঃ ভালো।

আসাদঃ ভাই আমার ক্লাসমেট যুথি। যুথিঃ তোমাকে পরিচয় করে দিতে হবে না। আমি আগেই তার সাথে পরিচয় হয়েছে। আসাদঃ আলতাফ ভাইয়ে সাথে তোমার পরিচয় হলো কখন? যুথিঃ আলতাফ ভাই আমার ক্যাম্পাসের দরদী ছাত্রনেতা, তার সাথে পরিচিত হব না এতটা বোকা তুমি আমাকে ভাবলে কি ভাবে। আলতাফঃ আুছা তোমরা ক্লাশে যাও।

এখানে এসেছো পড়াশুনা করতে। আগে পড়াশুনাকে অবশ্যই গুরুত্ত্ব দিবা কেন? যুথিঃ জ্বি, ভাইয়া! আলতাফঃ আুছা তোমরা ক্লাশে যাও। আমার একটু জরুরি কাজ আছে। (আলতাফ চলে যাবে। যুথি ওর দিকে তাকিয়ে মুখ বাঁকা করে হাসবে।

) দৃশ্যান্তর (আলতাফ চলে আসে। জাহের মানিক ওর জন্য অপেক্ষা ছিল। ) জাহেরঃ বস কি কইল। আলতাফঃ কি আর কইব। মানিকঃ আমনেরে একটু পাট লয়া দেখাইল।

আলতাফঃ বাজে কথা বলবি না। মানিকঃ বস, আমনে দাড়ান। আরেকটা ডলা দিয়া আসি। ওরে ডলায় টানে। আলতাফঃ থাক এখন ডলাডলি করা ঠিক হবে না।

বড়ভাই জেলে। সিদ্দিক শালায় আবার আমাকে সেদিন বাসায় নিয়া ফাপড় দিছে। জাহেরঃ সিদ্দিক ক্যাম্পাসের কে? আলতাফঃ এই ছেলে তার দেশি ভাই। তাকে আমার হাতে তুলে দিছে। জাহেরঃ তাই বলে আপনার মনের মানুষেরে নিয়া আপনার সামনে দিয়া ঘুরবো।

মানিকঃ ভাইয়ের রক্ত শীতল হয়া গেছে। জাহেরঃ রক্ত শীতল হইলেই গর্তে গিয়া শীতনিদ্রা যাইতে হইবো? আলতাফঃ শোন, আমি আছি কত টেনশনের মধ্যে। এখন নতুন পেইন নেওয়ার সময় না। মাথা ঠান্ডা রাখ। রাতে মিটিং আছে।

(আলতাফ চলে যাবে। ) মানিকঃ বসে গেছে ড্যাম হয়া। আমি হইলে খোদার কসম ওরে বাঁশডলা দিতাম। দৃশ্যান্তর (রুদ্ধদ্বার বৈঠক। সবাই কাছাকাছি বসা।

) আলতাফঃ শোন, আমরা একটা বড় সমস্যার মধ্যে আছি। তোমরা হয়ত বিষয়টা কতটা গভীরে ভেবেছ জানি না। এখন আমরা অস্থিতের সংকটে আছি। আমাদের নেতা জেলে। তিনি জেলে থাকলে স্বভাবতই আমরা একটু দূর্বল থাকব।

সুখবর হলো তার জামিন হয়েছে। এখন আমরা জেল গেট থেকে তাকে ছাত্ররা গিয়ে মালা পরিয়ে নিয়ে আসব। এখন তিনি জেল থেকে বের হয়ে দেখলেন আমরা কেউ নাই। তাহলে তিনি মনে ক্ষুন্ন হবেন। তার মতো একজন নেতাকে মনক্ষন্ন করে আমরা রাজনীতির ফিল্ডে টিকতে পারবো না।

এক ছাত্রঃ বড় ভাই বুঝবে না আমাদের পরীক্ষা। আলতাফঃ তারা অনুপস্থিতিতে যদি আমরা সমান্য পরীক্ষাটা পিছাতে না পারি তাহলে আমাদের প্রতি তার আ¯া’ থাকবে, বল থাকবে? এক ছাত্রঃ সেটা ঠিক বলেছেন। আলতাফঃ এখন আমাদরে স্যারকে একটা শিক্ষা দিতে হবে। মানিকঃ রাজশাহীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের মতো তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেই। আলতাফঃ তারে যদি দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেই তাহলে তাকে শিক্ষা দেওয়া হবে না।

আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে। এক ছাত্রঃ আমরা তো বুঝতে পারছিনা কি করতে হবে। আলতাফঃ দিনের আলোতে ক্যাম্পাসে একটা লাশ ফেলতে হবে। একটা লাশ ফেলা মানে বিশ্ববিদ্যালয় অনিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ। জাহেরঃ লাশ ফেলতে হলে আমার মাথায় একটা আইডিয়া আসছে।

আলতাফঃ বল। জাহেরঃ আমরা আসদেরে লাশ ফালামু। এক ঢিলে দুই পাখি। ক্যাম্পাস বন্ধ। আর আপনার পথের কাঁটা সরে গেল।

আলতাফঃ চমৎকার আইডিয়া। আসাদ মরলে তোদের জন্যও ভালো। ও সিদ্দিকের দেশি, সিদ্দিক ওকে নেতা বানাইতে চায়। আসাদ নেতা হলে তোদের কি হবে। জাহেরঃ আলতাফ ভাই, আর সুযোগ দেওয়া যায় না।

আলতাফঃ তাহলে কাল সকালে ক্যান্টিনে গিয়ে কাজটা সেরে চলে আসবি। এক ছাত্রঃ ওকে বস। আলতাফঃ রাতের মধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে ফেল। মানিকঃ আপনি গিয়ে ঠান্ডা মাথায় ঘুম দেন। দৃশ্যান্তর (আসাদ নাস্তা খাবে।

মেহেদি মানিক ওদের দু’জন সহকারি ছাত্র নিয়ে সামনে দাড়াবে। ) জাহেরঃ পানি খা। আসাদঃ আপনারা? জাহেরঃ পানি খা। সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে থাকবে। জাহেরঃ ঐ পানি খা।

(জাহের হিংস্র চোখের দিকে তাকিয়ে আসাদ পানি খাবে। ও কোমড় থেকে পিস্তল বের করে গুলি করবে। গুলির শব্দ হবে। পানির গ্লাশ পড়ে যাবে। গুলির শব্দে ছোটছুটি শুরু হবে।

জাহের মানিক গুলি করতে করতে বেরিয়ে যাবে। ) দৃশ্যান্তর (আলতাফ পায়চারি করে। বার বার মোবাইলের দিকে তাকায়। হঠাৎ ফোন বাজে। ) আলতাফঃ কি খবর কি? জাহেরঃ একটু সমস্যা হইছে।

আলতাফঃ অপারেশন সাকসেসফুল। জাহেরঃ হ, আসাদকে কাছ থেকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেছি। আলতাফঃ মরবে তো? জাহেরঃ অবশ্যই। পাঁচটা গুলি করেছি। আলতাফঃ গুড।

সমস্যা কি? জাহেরঃ বের হওয়ার সময় ক্যান্টিনের মধ্যে হই-হল্লা শুরু হলো। তখন এলোপাথালি গুলি চালাইছি। আলতাফঃ আমাদের কারো গায়ে গুলি লাগে নায় তো? জাহেরঃ না। আলতাফঃ তাহলে কোন সমস্যা নাই। আমি জুলমত ভাইয়ের বাসায়, তোরা চলে আয়।

(আলতাফ ফোন রেখে দেয়। ) দৃশ্যান্তর (আলতাফ বসে টিভি দেখছে। মানিক জাহের ঘরে ঢুকে। ) জাহেরঃ ভাই খবরে কিছু বলেছে? আলতাফঃ এখনো টিভিতে কিছু প্রচার হয়নি। দু’ঘন্টা হয়ে গেল একনো কিছু জানালো না।

মানিকঃ ভাই সাংবাদিকরা এখন পুরা দৌড়ের উপর আছে। ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা মেডিকেল। টিভিতে খবর শুরু হবে। খবর ঃ আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবাদমান দুইগ্রুপ ছাত্রের মধ্যে সংঘর্ষে জের ধরে তিন ছাত্র নিহত। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আর ছাত্রছাত্রীদের আজ রাত আটটার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পূর্বনিধারিত সকল পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যায় খোলার পরে পরীক্ষার ডেট জানানো হবে। আলতাফ রিমোট দিয়ে টিভি বন্ধ করবে। সবাই উল্লাসে ফেটে পড়ে।

আলতাফঃ সোহেল! সোহেল!! (একটা ছেলে আসবে। ) আলতাফঃ যা মিষ্টি নিয়ে আয়। দৃশ্যান্তর জেল গেটে ওরা সবাই অপেক্ষা করছে। হাতে ফুলের মালা। মিষ্টির প্যাকেট কারো হাতে।

ঘড়ী দেখে। একটু পরে গেট দিয়ে মাথা বের করে জুলমত। তাকে দেখে এগিয়ে যায়। ফুলের মালা গলায় দেয়। আন্দন্দ উল্লাস করতে করতে তারা এগিয়ে চলে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.