দিতে পারো একশ ফানুস এনে...আজন্ম সালজ্জ সাধ একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই...
পোস্টটি দিতে গিয়ে খানিকক্ষন হাসলাম। বেশ কিছুদিন আগে এক ব্লগার তার জন্মদিন উপলক্ষে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। সেখানে আরেকজন ব্লগার (নাম মনে নেই) একটি জটিল মন্তব্য করেছিলেন যেটা পড়ে হাসতে হাসতে চোখে পানি এসে গিয়েছিল। মন্তব্যটি ছিল এরকম, “এতদিন হয়ে গেলো, এখনো জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য কোন ছাইয়া নিক বা চামচা জোগাড় করতে পারলেন না! নিজের দেয়া লাগে?”
আমার ভাগ্য অতি ভালো। বোকা ছেলে আমার দোস্ত মানুষ।
কিন্তু তারপরেও আশা করিনি আমার জন্মদিন তার মনে থাকবে। শুভ জন্মদিন ত্রিনিত্রি পোস্টটি দেখে তাই আনন্দে দাঁত সব বের হয়ে গেলো!!! যদিও ব্যাপার আসলে ঠিক শুভ না, বয়স বাড়াটা বড়ই অকাজের কথা। কিছু করার আগেই আরেকটা বছর টাটা দিয়ে দিলো, মর্মান্তিক ব্যাপার।
কিন্তু তারপরো বাচ্চাদের মত আমার জন্মদিন ভালো লাগে। প্রথম কারণ, কেক ব্যাপারটি আমার বড়ই পছন্দ।
কারনে অকারনে আমি মানুষকে কেক উপহার দিই। জন্মদিন তো আছেই, মা দিবস থেকে শুরু করে পরীক্ষায় ভালো করা অথবা আজকের সকালটা সুন্দর- এই উছিলাতেও আমি কেক কিনে পাবলিকের বাসায় উপস্থিত হই। কাউকে প্রপোজ করলেও যে আমি কেকের উপর ভাবের বাণী লিখেই করবো সে বিষয়ে তেমন সন্দেহ নেই!
দ্বিতীয় কারণ, উপহার পাইতে কার না ভালো লাগে? কারো গিফট কেনার আগে আমি রীতিমত গবেষনা করি, এবং অনেক সময় নিয়ে কিনি। যে কোন অনুষ্ঠানে গিফট কেনার দায়িত্ব বেশীরভাগ সময়েই আমার। যদি না কিনি, তবে সবাই কি কোথা থেকে কিনবে, সেটা বলে দেয়ার দায়িত্ব আমার।
বাবা-মার প্রথম সন্তান, তাই আল্লাদের সীমা কোনকালেই ছিল না। ইন্টার পর্যন্ত আমার মা সবাইকে দাওয়াত দিয়ে হুলুস্থুল করতো, আর অবশ্যই সবার আনা উপহারগুলো নিয়ে রাতে উপহার খোলার আসর বসতো। ১২ বছর পর্যন্ত প্রতি জন্মদিনে মাথায় একটা মুকুট পরে এক গাদা মানুষের মাঝে ভাব নিয়ে আমি কেক কাটছি – ছবিগুলি দেখলে হাসতে হাসতে চোখে পানি এসে যায়। এর পরে অবশ্য মুকুট নেই, তবে মুকুট ছাড়াই চাকু হাতে সবাই মিলে দাঁত কেলিয়ে পোজের ছবিতে অ্যালবাম ভরা। মেডিকেলে চলে আসার পর ব্যাপার একটু অন্যরকম হলো।
কিন্তু যারা হোস্টেলে থেকেছে, তারা জানে, বন্ধুরা রাত ১২টায় হাউ মাউ করে যে বার্থডে সারপ্রাইজটা দেয়, তার কোন তুলনা নেই!!!
আর তিন নাম্বারটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একদিনের জন্য হলেও আমাকে আমার অনেক প্রিয় মানুষ মনে করে। কয়েক মিনিটের জন্য হলেও তারা ব্যস্ততা থেকে নিজেদের বের করে একটা ফোন দেয় বা এসএমএস করে (বর্তমানে ফেসবুকের আধিক্যের কারনে ফেসবুকে ওয়ালে পোস্ট করে)—সেটাই বা মন্দ কি?
যারা কষ্ট করে ভ্যাজর ভ্যাজর পড়েছেন, তাদের ধন্যবাদ। যারা পড়েননি, তাদেরো ধন্যবাদ। কারণ জন্মদিনে রাগ করতে নেই।
এখন তাড়াতাড়ি খাওয়া শুরু করেন। আপাতত আমি বড়ই আর্থিক সংকটে আছি, তাই ভার্চুয়াল খাওয়া দাওয়া। যেদিন টাকা হবে, সেদিন অবশ্যই হাতে কলমে, মানে মুখে আর দাঁতে খাবেন।
স্থানঃ ব্যাঙ্গালোর
এইটা মারমেইড ক্যাফে, বারিধারা
বসুন্ধরা সিটির সাব জিরো
৩৩, বেইলী রোড
আমার প্রিয়, ক্যাফে ম্যাংগো
আবার ক্যাফে ম্যাংগো
এইডা জাপানিজ খাওয়া। কাঁচা ডিমের এত কি কে জানে!
আমাগো দেশী পান্তা
কাপ্পা কফি শপ
ব্লগার শাহরিয়ার কবির ড্যানির জন্মদিনের কেক!
নান্দোস
পুনশ্চঃ আবার সবাই ভাইবেন না ছবি সব আমার তোলা।
ক্যাফে ম্যাংগো ছাড়া সবই ফুড-ও-গ্রাফী গ্রুপের সৌজন্যে। আমাদের এই আজাইরা গ্রুপটার মূল কথা হচ্ছে, "খাবার নিয়ে তুলকালাম কান্ড বাধাইয়া দেন" ছবিগুলি সব গ্রুপের সদস্যদের তোলা। তাদের অনেক ধন্যবাদ চমৎকার ছবিগুলি শেয়ার করার জন্য।
আরো পুনশ্চঃ পোস্ট দিয়ে দেখলাম ব্লগের সবার প্রিয় কবি গ্যাব্রিয়েল সুমন চমৎকার একটি শুভেচ্ছার পোস্ট দিয়েছেন। তাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।