নতুন স্থাপিতব্য বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার-আইপিপি) আইনি জটিলতার (আরবিট্রেশন) নিষ্পত্তি হবে বৃটিশ আইনে। আর বিচারিক কাজ বাংলাদেশে না হয়ে, হবে যুক্তরাজ্যের আদালতে। চলতি মাসের ১২ তারিখ প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত একটি সার-সংক্ষেপে স্বাক্ষর করেছেন। যদিও বিষয়টিতে আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তি ছিল।
দেশীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির আইনি সমস্যা বৃটিশ আইনে সমাধানের যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে তার বিরোধিতা করেছেন বিদ্যুৎ খাত সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, এখন দেশেই আরবিট্রেশন কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দেশীয় কোম্পানির সঙ্গে কোনো বিষয়ে বিরোধ ঘটলে তার নিষ্পত্তি দেশের আইনেই করা সম্ভব। এর জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার কোন প্রয়োজন পড়ে না। বেসরকারি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষার্থেই সংশ্লিষ্টরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের যুক্তি হচ্ছে নতুন আইপিপিগুলোর জন্য আহ্বানকৃত আরএফপিতে (রিকোয়েস্ট ফর প্রোপজাল) এমনি শর্ত দেয়া ছিল।
অন্যদিকে অনেক আইপিপি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে স্থাপন করা হচ্ছে। তাই বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে আরবিট্রেশনের জন্য বৃটিশ আইন ও স্থান হিসেবে যুক্তরাজ্যকে বেছে নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত সংক্রান্ত আইনজ্ঞ ও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, বহুজাতিক কোম্পনিগুলো আইনি জটিলতার নিষ্পত্তির জন্য সবসময় তৃতীয় কোন দেশের শরণাপন্ন হতে চায়। এটিকে তারা নিরাপদ ভাবে। আমাদের দেশের বেসরকারি কোম্পানিগুলোও হয়তো দেশের চেয়ে বিদেশের মাটিতে বিচারকার্য সম্পাদনকে লাভজনক মনে করছে।
যদিও এখন দেশেই আরবিট্রেশনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আরবিট্রেশনের জন্য বৃটিশ আইন ও যুক্তরাজ্যকে বেছে নেয়ার বিরোধিতা করেছেন খোদ বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, বলা হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হচ্ছে তাই এমন সুযোগ দেয়া উচিত। কিন্তু বিষয়টি যে অযৌক্তিক সম্প্রতি চূড়ান্ত হওয়া আইপিপি'র বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে নজর দিলেই বুঝা যায়। তার মতে, প্রায় ১ হাজার ১৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিবিয়ানা ১ ও ২ এবং মেঘনাঘাট ২ এ তিনটি বৃহৎ আইপিপি স্থাপন করবে যৌথভাবে বাংলাদেশের সামিট ও যুক্তরাষ্ট্রের জিই গ্রুপ।
এ প্রকল্পের জিই'র বিনিয়োগ মাত্র ২০ শতাংশ। এছাড়া সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিতব্য ৫০ থেকে ১শ' মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রায় সব বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আইপিপি) মালিকানা দেশীয় কোম্পানির। তাই বিদেশি বিনিয়োগের অজুহাতে প্রকৃতপক্ষে বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে বাড়তি সুবিধা দিতেই চুক্তিতে এমন ধারা রেখেছে সংশ্লিষ্টরা।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে বিদেশের মাটিতে পূর্বের নানা আইনি লড়াইয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। আর বিদেশে আইনি লড়াইয়ে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়।
এখন যদি দেশীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির জন্যও বিদেশে যেতে হয় তা দেশের তথা জনগণের সম্পদের অপচয় ছাড়া আর কিছুই না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।