হেফাজতে ইসলামের ৫ মের কর্মসূচি চলাকালীন তাণ্ডবের ঘটনায় প্রাথমিক হিসাবে বায়তুল মোকাররম মার্কেট ও সংশ্লিষ্ট হকারদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকার।
বাসসের খবরে বলা হয়, বায়তুল মোকাররম দোকান মালিক সমিতির ২৫টি সোনার দোকানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরে ক্ষতি প্রায় ১৫ কোটি এবং প্রায় পৌনে ৩০০ হকারের দোকান পুড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকা।
আজ শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
বায়তুল মোকাররম ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি এবং মুসল্লি কমিটির সভাপতি মো. আতিয়ার রহমান মিয়া জানান, হেফাজতে ইসলামের নামে জামায়াত-বিএনপির কর্মীরা মার্কেটের বিভিন্ন দোকানপাট ভাঙচুর, এসি-জেনারেটরসহ সব ধরনের বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ক্ষতিসাধন করেছে। তারা যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা নজিরবিহীন।
প্রাথমিকভাবে ২৫টি সোনার দোকানে অগ্নিসংযোগে ক্ষতি ১৫ কোটি টাকা এবং ২৮৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত হকারকে ধরে প্রায় তিন কোটিসহ মোট ১৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির হিসাব ইসলামিক ফাউন্ডেশনে জমা দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ ধর্মের লেবাসধারী সেদিনের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে আতিয়ার রহমান বলেন, সেদিনের হামলাকারীদের অনেকেই পল্টন এলাকার জামায়াত-বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তারা হেফাজতের ব্যানারে ধ্বংসযজ্ঞে অংশ নেয়।
এখন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো মামলা করতে না পারে, সে জন্য ওই চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। তিনি ব্যবসায়ীদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
আতিয়ার রহমান আরও বলেন, ৫ মে হেফাজতের ব্যানারে কপালে কাপড় বেঁধে বাধা দেওয়া সত্ত্বেও জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা পবিত্র কোরআন শরিফসহ শত শত ধর্মগ্রন্থ, জায়নামাজ ও আতর-টুপির দোকান আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও মুসল্লি কমিটির উপদেষ্টা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মিছবাহুর রহমান চৌধুরী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলামের নামে কীভাবে নিরীহ মানুষের শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফসহ হাজার হাজার ইসলামি কিতাব আগুনে পোড়ানো হলো, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবার কথা নয়। হেফাজতে ইসলাম প্রকৃতই কোন ইসলামি দল নয়, এরা দেশ ও মানবতার শত্রু জালিমের দোসর।
’
সংবাদ সম্মেলন থেকে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে বায়তুল মোকাররম এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, হেফাজতদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদের চারপাশ ও মার্কেটের দ্রুত মেরামত, ১০ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করে পুনর্বাসন করা এবং ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে সংঘটিত নারকীয় তাণ্ডবের জন্য দায়ী হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপির সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য চার দফা দাবিও পেশ করা হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।