আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস এবং অপরাধ থেকে দায়মুক্তির সংস্কৃতি

শাহরিয়ার কবি------- মইন-ফখরুদ্দীনদের সামরিক তত্ত্বাবধায়কদের জামানায় রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের বস্ন্যাকমেইল করার প্রধান অস্ত্র ছিল_নিয়মিত আয়কর না দেয়া। বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতা, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা যারা এই সরকারকে সমর্থন করেছিল এনবিআর বা দুদক যদি অনুসন্ধান করে তাহলে আয়কর দেয়া হয়নি এমন প্রচুর অর্থ ও সম্পদের সন্ধান তারা পাবেন। এনবিআর অবশ্য গ্রামীণ ব্যাংক ও ইউনূসের আয়কর ফাঁকির ভগ্নাংশ সম্পর্কে ইতোমধ্যে জেনেছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন। ১২ এপ্রিল (২০১১) কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৮৫ সাল থেকে যে কর অব্যাহতি পেয়েছে, তা অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দেওয়া হয়েছে এবং এতে সরকারের সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৫১৪ কোটি সাড়ে ২৭ লাখ টাকা। কর অব্যাহতির অর্থ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রসত্ম গ্রামীণ পুনর্বাসনকাজে ব্যয় করার কথা থাকলেও ব্যাংক কতর্ৃপক্ষ শর্ত ভঙ্গ করে সেই টাকা লাভজনক সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামপ্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্যের পাশাপাশি আরও জানানো হয়েছে, বিভিন্ন ব্যাংকে ড. ইউনূসের নিজস্ব ৫৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে জমা রয়েছে। ইউনূস বিদেশ থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ অর্থ আয় করার দাবি করে তা রেমিট্যান্স হিসেবে কর অব্যাহতি নিয়েছেন। কিন্তু এনবিআর বলেছে, তাঁর আয় আর প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয় এক চরিত্রের নয়। তাই এই আয়ের ওপরও কর অব্যাহতি নেওয়া আইনানুগ হয়নি। 'গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়াটিকে 'যথাযথ ও আইনানুগ হয়নি' মনত্মব্য করে এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'রম্নলস অব বিজনেস অনুসারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ ধরনের আদেশ জারি করতে পারে না।

কেবল অভ্যনত্মরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ ধরনের আদেশ জারি করতে পারে। ' ১৯৯৮ থেকে ২০১০ সকাল পর্যনত্ম গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৮৫-৮৬ করবর্ষে গ্রামীণ ব্যাংককে সর্বপ্রথম ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৮০৩ টাকা কর অব্যাহতি দেয়া হয়। সর্বশেষ ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৫৫ কোটি ৪৪ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা কর ছাড় দেয়া হয়। ব্যাংকটিকে সর্বাধিক কর অব্যাহতি দেয়া হয় দেশে জরম্নরি অবস্থা চলাকালে।

২০০৭-০৮ অর্থবছরে (ইউনূসসুহৃদ মইন-ফখরম্নদ্দীনদের জামানায়) ব্যাংকটি ১৬০ কোটি ৩৪ লাখ এক হাজার ৯৯৩ টাকা কর রেয়াত পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ৪৪ ধারা অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর অব্যাহতি দেয়ার কোনো অধিকার নেই। এই কর অব্যাহতি যে শর্তে দেয়া হয়েছিল তাও লঙ্ঘন করে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন গ্রামীণ ব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়, 'গ্রামীণ ব্যাংকের আয়কর অব্যাহতি সংক্রানত্ম এসআরও নং-৩৬/আইন/২০০৩ এবং এসআরও নং-৯৩/আইন/২০০০ থেকে দেখা যায়, অব্যাহতিপ্রাপ্তির জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের অঙ্গীকার ছিল : আয়ের ওপর আরোপনীয় কর, সুপার ট্যাঙ্ ও ব্যবসার মুনাফা কর প্রদান থেকে গ্রামীণ ব্যাংককে অব্যাহতি দেওয়া হলে ব্যাংকটি পুনর্বাসন তহবিল গঠন করে সব লভ্যাংশসহ করের অর্থ তহবিলে জমা করবে। এ তহবিল প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রসত্ম সদস্যদের পুনর্বাসনকাজে ব্যবহার করবে।

' এনবিআর বলেছে, 'কিন্তু প্রতীয়মান হয় যে, গ্রামীণ ব্যাংক ওই অর্থ গ্রামীণ কল্যাণ ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থানানত্মরের মাধ্যমে কর অব্যাহতিপ্রাপ্তির মূল শর্ত লঙ্ঘন করেছে। ' ড. ইউনূসের ব্যাংক হিসেবে ৫৪ কোটিরও বেশি টাকার হদিস পেয়েছে এনবিআর যার আয়কর দেয়া হয়নি। গত তিরিশ বছরে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে যে বেতন পেয়েছেন তাতে তাঁর ব্যাংক এ্যাকাউন্টে তিন লাখ টাকাও থাকার কথা নয়। নোবেল পুরস্কারের পাঁচ কোটি টাকাও এই হিসেবে জমা পড়েনি। এত টাকা এলো কোত্থেকে? ইউনূস এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, বিভিন্ন সময়ে বিদেশে বিভিন্ন ফোরামে ভাষণ দিয়ে যা আয় করেছেন তা তিনি এই হিসেবে জমা করেছেন।

২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর বিদেশে ড. ইউনূসের ভাষণের দাম নিশ্চয় বেড়েছে, কিন্তু নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগেও কি তিনি এত দামী বক্তা ছিলেন? বছরে তিনি কতগুলো আনত্মর্জাতিক সম্মেলন, সেমিনার বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিয়েছেন? মেনে নিলাম তিনি কোটি টাকার বক্তা, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে_বিদেশে বক্তৃতা দিয়ে পাওয়া টাকা কিভাবে আয়করমুক্ত হয়? আমরা জানি প্রবাসে চাকরি বা ব্যবসা করে যারা দেশে রেমিট্যান্স পাঠান সরকারের 'ওয়েজ আর্নার স্কিম' অনুযায়ী সে টাকার জন্য আয়কর দিতে হয় না, কারণ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী সেই দেশে আয়কর দেন। কিন্তু বিদেশে ভাষণের সম্মানী-অর্থ থেকে কোন প্রতিষ্ঠান বা সম্মেলন কতর্ৃপক্ষ আয়কর কাটে না। ড. ইউনূসের তুলনায় আমি অতি নগণ্য এক ব্যক্তি। বছরে কয়েকবার আমাকেও বিদেশে যেতে হয়, কখনও কোন আনত্মর্জাতিক সম্মেলন/সেমিনারে, কখনও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেয়ার জন্য। এশিয়ার বেশিরভাগ দেশে এ ধরনের কোন অনুষ্ঠানে এ ধরনের ভাষণ দেয়ার জন্য সচরাচর কোন সম্মানী দেয়া হয় না।

এশীয় সংস্কৃতিতে তা অসম্মানজনক। বরং উপহার দেয়া হয় প্রতিষ্ঠানের সামর্থ্য অনুযায়ী। আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ভাষণের জন্য আমি ঘণ্টায় একশ' ডলার পাই, শুধু কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ঘণ্টায় দু'শ' ডলার সম্মানী দিয়েছিল। ড. ইউনূস নিশ্চয়ই এর দশগুণ বা বিশগুণ পাবেন। যত বেশি পাবেন নিঃসন্দেহে সেটা হবে আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

১৯৯২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর লেখালেখির যৎসামান্য সম্মানী ছাড়া দেশে আমার তেমন কোন আয় নেই। গত দশ বছর আমি একটি ডাচ আর্কাইভের ইতিহাস প্রকল্পের জন্য খ-কালীন কাজ করছি। এর সম্মানী বাবদ এবং বিদেশে ভাষণ দিয়ে যা আয় হয় সব আমার ব্যাংকে জমা হয়। এসব আয়ের ওপর বছর শেষে যা আয়কর দিতে হয় আমি তা যথারীতি প্রদান করি। বিদেশ থেকে আসা আমার যৎসামান্য আয়ের জন্য আমি যদি গত ১৫ বছর ধরে আয়কর দিই, ড. ইউনূস কোন আইনে তার বিপুল উপার্জনের জন্য আয়কর দেবেন না? এনবিআরকে আমি এ প্রসঙ্গে বিনীতভাবে বলতে চাই_আপনারা যদি বিদেশ থেকে আয়ের কারণে ড. ইউনূসের কর মওকুফ করেন তাহলে এত বছর আমি যে আয়কর দিয়েছি সে অর্থ আমাকে ফেরত দিন।

আয়কর ফাঁকি দেয়াকে নোবেলবিজয়ী ইউনূস কোন অপরাধ বলে গণ্য করেন না। এর জন্য যে শাসত্মির আইন আছে তারও তিনি পরোয়া করেন না। টম হেইনেমানের প্রামাণ্যচিত্রে আমরা দেখেছি ক্ষুদ্রঋণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংকে পাঠানো নোরাডের টাকা তিনি গ্রামীণ কল্যাণের এ্যাকাউন্টে সরিয়েছিলেন আয়কর ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশ্যে, অনত্মত নোরাডকে তিনি তাই বুঝিয়েছেন। চিঠিতে এমন কথাও তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়টি যেন গোপন রাখা হয়, দেশে জানাজানি হলে তিনি বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। ভদ্রভাষায় আমরা আয়কর ফাঁকি বলি বটে_কাজটা আসলে সরকারী কোষাগারের টাকা মেরে দেয়ার শামিল।

শানত্মির জন্য নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূস জাতির সামনে অনৈতিকতার এক অভূতপূর্ব উদাহরণ স্থাপন করেছেন। আমাদের দেশের অনেক অসৎ ধনী ব্যক্তি আয়কর ফাঁকি দেন। তাই বলে ড. ইউনূসও? শেঙ্পীয়রের নাটকের ভাষায় বলতে হয়_'ব্রম্নটাস, তুমিও!' কথিত ৫৪ কোটি টাকার বাইরেও বিসত্মর অর্থ সম্পদ রয়েছে ড. ইউনূসের। দৈনিক 'আমাদের সময়'-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার স্ত্রী আফরোজী ইউনূসসহ পরিবারের সদস্যরা দেশে-বিদেশে বাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্সসহ বিপুল সম্পদের মালিক। ঢাকার গুলশানে ড. ইউনূসের আছে ৫ হাজার ৪শ' বর্গফুটের ১২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট।

কলাবাগানেও আছে ৩ কোটি টাকা মূল্যের ৩ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট। এছাড়া স্পেনে রয়েছে রাজকীয় বাড়ি। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে জমিসহ সম্পদ। অন্যদিকে অধ্যাপক স্ত্রী আফরোজী ইউনূসের নামে আছে উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে ৭০ নম্বরে ৫ কাঠার ওপরে ৫তলা আলিশান বাড়ি। স্ত্রীর নামে রয়েছে মিরপুরের লালকুঠিতে ৩০ কাঠা জমি এবং জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ৩ বিঘা জমি।

লন্ডনেও তার নামে বাড়ি আছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ড. ইউনূস ও তার স্ত্রীর নামে এসব সম্পত্তির তথ্য মিলেছে। ' (আমাদের সময়, ১৪ মে ২০১১) নোরাডকে ইউনূস বুঝিয়েছিলেন এবং তারাও বুঝেছে ইউনূস কোন বদ মতলবে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণের টাকা গ্রামীণ কল্যাণের এ্যাকাউন্টে সরিয়ে রাখেননি। গ্রামীণ ব্যাংককে কখনও যে আয়কর দিতে হয় না, এ তথ্য ইউনূস কখনও নোরাডকে জানাননি, যে কারণে 'কাল্পনিক আয়কর' ফাঁকির গালগল্প তারা সরলমনে গ্রহণ করেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের মতো 'গ্রামীণ' কল্যাণ এবং গ্রামীণ নামের আরও চার ডজন প্রতিষ্ঠান যার চেয়ারম্যান অথবা এমডি ড. ইউনূস_সবই তো গরিবদের কল্যাণে।

তিরিশ বছর ধরে গরিবদের কল্যাণের কথা বলে ইউনূস বিদেশ থেকে যত টাকা এনেছেন কল্যাণের সুনামিতে গ্রামের গরিবদের ভেসে যাওয়ার কথা। বাসত্মবে ঘটেছে উল্টোটি। ভাসছেন ইউনূস, ডুবছেন তার ঋণগ্রহীতা গরিব মানুষরা। ঋণের ফাঁদে গরিবদের আটকে সহায়-সম্পদ সব কেড়ে নিয়ে তাদের পথের ভিখিরি বানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার যে অধ্যাদেশের দ্বারা গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে তার প্রসত্মাবনায় বলা হয়েছে, এই ব্যাংকটি গ্রামের ভূমিহীন গরিবদের ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার জন্য গঠন করা হয়েছে।

ড. ইউনূস এবং তার পরিবার দারিদ্র্যসীমার অনেক উপরে শুধু নয়, পশ্চিমের মানে ধনীদের পঙক্তিতে অবস্থান করেন। তারপরও ইউনূসের পারিবারিক ছাপাখানা 'প্যাকেজেস কর্পোরেশন'কে ক্ষুদ্রঋণ নয় বৃহৎ অঙ্কের ঋণ দেয়া হয়েছে, দফায় দফায় ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ মওকুফ করা হয়েছে এবং এভাবে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষদের মালিকানাধীন গ্রামীণ ব্যাংকের আমানত ড. ইউনূসের পরিবার খেয়ানত করেছে। এ বিষয়ে রিভিউ কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে_'প্যাকেজেস কর্পোরেশন গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৯০ সাল হতে ২০০৫ সাল পর্যনত্ম উক্ত প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত ও গ্রহীতা কতর্ৃক পরিশোধিত ঋণের আসলের পরিমাণ যথাক্রমে ৯৬৬.৪৪ লাখ ও ৮৬৯.৬৯ লাখ টাকা। উক্ত সময়ে এ ঋণের ওপর ১৮৯.৭৯ লাখ টাকা সুদ আরোপ করা হয়, যার মধ্যে ১৪১.৯১ লাখ টাকা পরিশোধিত হয়।

ফলে, ২০০৫ সালে প্যাকেজেস কর্পোরেশনের নিকট গ্রামীণ ব্যাংকের আসল ও সুদ বাবদ পাওনা ছিল যথাক্রমে ৯৬.৭৫ লাখ ও ৪৭.৮৮ লাখ টাকা (মোট ১৪৪.৬৩ লাখ টাকা)। প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে প্রদত্ত মূলধন ঋণের ওপর ১০% এবং চলতি ঋণের ওপর ১৯৯৬ সাল পর্যনত্ম ১৬% ও ১৯৯৭ সাল হতে ১২% হারে সুদ আরোপ করে উপরোক্ত হিসাব করা হয়েছিল। '২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত ৭৬তম পর্ষদ সভায় গ্রামীণ ব্যাংক কতর্ৃক প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে প্রদত্ত ঋণের ওপর শুরম্ন থেকে ডিসেম্বর, ২০০৫ পর্যনত্ম সুদ হার ৫%-এ পুননির্ধারণ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে পর্ষদ প্রতিষ্ঠানটির নিকট অবশিষ্ট পাওনা ৭.২২ লাখ টাকায় নির্ধারণ করে যদিও প্রতিষ্ঠানটির নিকট প্রকৃত পাওনা ছিল ১৪৪.৬৩ লাখ টাকা (আসল ৯৬.৭৫ লাখ ও সুদ ৪৭.৮৮ লাখ টাকা)। অর্থাৎ মোট মওকুফের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩৭.৪১ (১৪৪.৬৩-৭.২২) লাখ টাকা।

কিন্তু উক্ত তারিখে গ্রহীতার নিকট গ্রামীণ ব্যাংকের বকেয়া সুদের স্থিতি ৪৭.৮৮ লাখ টাকা হওয়ায় গ্রাহক কতর্ৃক ইতোপূর্বে পরিশোধিত অতিরিক্ত সুদকে (৫% হারে হিসাবায়নের প্রেক্ষিতে) আসল পরিশোধ হিসেবে গণ্য করা হয়। 'গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান হতে আদায়কৃত সুদ মওকুফ করার কোন সুযোগ নেই। পর্ষদ গ্রাহককে ১৩৭.৪১ লাখ টাকা মওকুফ করে। গ্রাহকের নিকট সুদ পাওনা ছিল ৪৭.৮৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ পর্ষদ গ্রাহকের অনুকূলে আসল বাবদ ৮৯.৫৩ (১৩৭.৪১-৪৭.৮৮) লাখ টাকা মওকুফ করেছে।

ঋণের আসল মওকুফে আমানতকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আসল মওকুফ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.