শুক্রবার সিএনএন-আইবিএন টেলিভিশন চ্যানেলকে ভারতের প্রধান বিরোধী দলের এই সাংসদ বলেন, “আমার মনে হচ্ছে, আমি হয়তো অতিরঞ্জিত করেছি। ড. সেনের কাছ থেকে ভারত রত্ন কেড়ে নেয়ার মন্তব্যের জন্য আমি অনুতপ্ত। আমি একটু বেশি বলে ফেলেছিলাম। ”
তিনি বলেন, অমর্ত্য সেনকে নিয়ে তার মন্তব্য একান্তই ব্যক্তিগত। এটা বিজেপির অবস্থান নয়।
বিজেপি নেতারাও ওই মন্তব্যকে মিত্রের ব্যক্তিগত অভিমত হিসেবে আখ্যায়িত করে এ বিতর্ক থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন।
পদক কেড়ে নেয়ার মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেও অমর্ত্য সেনের অর্থনীতি নিয়ে এদিন সমালোচনা করেন চন্দন মিত্র।
“আমিও একজন বাঙালি এবং অর্থনীতির ছাত্র। আমার মনে হয়, অমর্ত্য সেনের অর্থনীতি সময়োপযোগী নয় এবং তা বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজন নেই। ”
অমর্ত্য সেনকে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তার একজন ভারত রত্নের মতো আচরণ করা উচিত।
”
তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক অভিলাষ থাকায় অমর্ত্য সেন বিজেপি বিরোধী।
“তিনি একজন বামপন্থী। তিনি কংগ্রেসের নীতিকে সমর্থন করছেন। তবে বিজেপি নিয়ে তিনি যেভাবে কথা বলছেন তা ঠিক নয়। তার মতো ব্যক্তির এ ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়।
”
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে অমর্ত্য সেনের মন্তব্য বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে চন্দন মিত্র বলেন, “ড. সেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদিকে দেখতে চান না। কিন্তু তিনি ভারতের ভোটার নন। ”
গত সপ্তাহে বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েন বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তিনি কখনোই মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান না।
“উনার রেকর্ডও আমার ভাল মনে হয় না।
আমরা ভারতীয়রা কখনও চাইব না এরকম কোনও পরিস্থিতি আসুক যেখানে সংখ্যালঘুরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ুক। আমি মনে করি ২০০২ সালে ওদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস পুরোটাই তৈরি করা হয়েছিল। ”
এরপর অমর্ত্য সেনের ভারত রত্ন উপাধি কেড়ে নেয়ার দাবি জানান চন্দন মিত্র।
চন্দন মিত্রের ওই দাবি নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তপ্ত বিতর্ক শুরু হয়। তার বক্তব্যকে বিজেপির ‘ফ্যাসিস্ট মানসিকতা’র প্রতিফলন হিসাবে উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস।
এর প্রতিক্রিয়ায় অমর্ত্য সেন বলেন, “মি. চন্দন মিত্র হয়তো জানেন না যে, বিজেপি সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপায়ী আমার হাতে ভারত রত্ন পদক তুলে দিয়েছিলেন। মি. বাজপেয়ী সেটা ফেরত চাইলে আমি অবশ্যই তা ফেরত দেব। ”
এ ধরনের একটি দাবি সামনে আসাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে এটাকে মিত্রর ‘ব্যক্তিগত’ মত হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
অমর্ত্য সেন বলেন, এরকম একটি রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হওয়া এবং তার সম্পর্কে কারো এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি শুধু তারই নয়, সব মানুষের কাছেই অন্যায় মনে হবে।
“এটা দুর্ভাগ্যজনক....।
এটা আসলেই ‘আনপ্রোডাক্টিভ’। ”
তিনি আরো বলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে এল কে আদবানি, যশোবন্ত সিনহা, জাসওয়াত সিং ও অরুন জেটলির মতো নেতাদের সঙ্গে তার অনেক আলোচনা হয়েছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।