মোহাম্মদপুরের পুরনো এলাকায় ঢুকে রাস্তাঘাটের নামের মধ্যে ব্যতিক্রম চোখে পড়বে। বেশীরভাগ রাস্তা পুরনো রাজা বাদশাহদের নামে। বাবর রোড, আওরঙ্গজেব রোড, শাহজাহান রোড, রাজিয়া সুলতানা রোড, শেরশাহসূরী রোড, আজম রোড ইত্যাদি। আছেন রাজমহিষীর নামেও-নূরজাহান রোড। আছে রাজমহিষীর স্মৃতিবিজড়িত তাজমহল রোড।
মহাকবি ইকবালের নামে আছে ইকবাল রোড।
ব্যাতিক্রম দু'টি। আসাদ গেট থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রোডটির নাম আসাদ এভিনিউ। টাউনহল বাজারের পশ্চিমপাশ দিয়ে আসাদ এভিনিউ-তাজমহল রোডের সংযোগ-সড়ক শহীদ সলিমুল্লাহ রোড। এই দুটিই এই ভূখণ্ডের দুই শহীদের নামে।
একজন ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে শহীদ। আরেকজন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ।
মূল সড়ক হিসাবে আসাদ এভিনিউ ভালো আছে। সাধারণত ভালোই থাকে। যতো দূর্গতি শহীদ সলিমুল্লাহর।
সব দোকানের সাইনবোর্ডে রোডের নাম লেখে সলিমুল্লাহ রোড। শহীদ শব্দটি খুঁজে পাওয়াই দায়। এর ফলে বেশীরভাগ লোক ভাবে এটি নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নামে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যেন থেকেও নেই। অথচ শহীদ সলিমুল্লাহর দুই গুনী পুত্র সঙ্গীত শিল্পী সাদী মোহাম্মদ এবং নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই নয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পতাকাও বহন করছেন।
সলিমুল্লাহ রোডে ঢুকলেই আস্তে আস্তে ভাঙা রাস্তার আসল রূপ কি হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পেতে শুরু করবেন। ভাঙা পর্যন্ত হলেও কথা ছিলো। পানির টাংকির কাছাকাছি গেলে দেখবেন নোংরা কাদাপানির নহর বইছে। যদি হেঁটে যান তাহলে পোষাক এবং জুতার বারোটা বাজবে এই গ্যারান্টি চোখ বুঁজে দেয়া যাবে। যদি রিকশায় যান কয়েকদিন এমনকি চিরদিনের জন্য কোমর ব্যথা উপহার পাবেনই।
যদি গাড়ী নিয়ে যান সে গাড়ীর ময়লা তুলতে কপালের ঘাম ছুটে যাবে। গাড়ীর নাটবল্টু দু'চারখানা বদল করতেই হবে। নোংরাডুবোপানির নীচের কিসে লেগে যে টায়ায় ফাঁসবে তা বুঝতেই পারবেন না।
এই দশা চলছে গত এক বছরের বেশী সময় ধরে। কবে শেষ হবে কেউ তা জানে না।
সম্প্রতি যোগ হয়েছে ড্রেনের কাজের নামে দুই পাশে ভাঙ্গা ইটপাটকেলের স্তুপ।
মবমিলে রোডটিকে ঠিক গুরুত্বহীন বলাও মুশকিল। এটি একটি অনুমোদিত বাসরুট। (মেগাসিটি) মোহাম্মদপুরে অল্প ক'টি রোডের কপালেই এই রাজতিলক জুটেছে। এটি আবার এমন এক প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা স্বয়ং সিটি করপোরেশন যে মন্ত্রনালয়ের অধীনে।
তারপরও এই সমস্যায় জর্জরিত শহীদ সলিমুল্লাহ রোড এলাকাবাসী।
পাদটিকা-কেউ যেন না ভাবেন মোহাম্মদপুরের সব রোডের এই হাল। বাঁশবাড়ি বস্তি এলাকা বাদে এরকম ভয়ানক দূর্গতির সন্ধান আর কোথাও পাবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।