রোববার কমিশনের সভায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বহুল আলোচিত ৯১ (ই) ধারাটি নিয়ে আলোচনা হয়।
নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নতুন সংযোজনের প্রস্তাব দেয়ার পরও সমালোচনা হচ্ছে। এজন্যে আরপিও’র আলোচিত ধারাটি বিলোপ করতে চাইছি আমরা। ”
তবে কমিশনের সভায় আবার আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৯১ (ই) ধারা অনুযায়ী, নির্বাচনে গুরুতর অনিয়ম তদন্তে প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
‘হয়রানির অভিযোগে’ গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিধানটি বাদ দেয়ার জন্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি উঠে। বিএনপি এবারো এই ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
আগামী নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের প্রস্তাব রেখে গত এপ্রিলে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় ইসি। তবে তা আরো পর্যালোচনার জন্য ফেরত আসে।
ওই প্রস্তাবে, ৯১ (ই) ধারা সংশোধন করে বলা হয়- একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের পর যদি বৈধ প্রার্থী হিসেবে একজন বাকি থাকেন, তবে সেই প্রার্থীকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হবে।
তবে এখন ওই ধারাটিই বিলোপ করতে চাইছে ইসি, যাদের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কমিশন কর্মকর্তারা জানান, এই ধারাটি বিলুপ্ত হলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর কোনো প্রার্থী গুরুতর অপরাধ করলেও তার প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ থাকবে না। তবে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময়ে যৌক্তিক কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা কারো মনোনয়নপত্র বাতিল করতে পারবেন।
৯১ (ই) ধারায় বলা আছে, কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা থাকার অযোগ্য হতে পারেন। তবে তার আগে কমিশন অভিযুক্ত প্রার্থীকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দিয়ে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেবে।
তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কমিশন সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে।
সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বাকি প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের পর যদি একজন প্রার্থী অবশিষ্ট থাকেন, তবে সেই আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হবে।
নবম সংসদের নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ধারাটি অন্তত স্থগিত করারও দাবি জানিয়েছিল। তখনকার ইসি তাকে আশ্বস্ত করেছিল, এ ধারাটির ‘অপপ্রয়োগ’ করা হবে না।
ইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, দলগুলোর বারবার আপত্তির মুখে এ ধারাটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কমিশন। সোমবার এ বিষয়ে আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত হবে। এরপরই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে প্রস্তাব।
আরো সংশোধন
সংশোধিত প্রস্তাবে দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের মন্ত্রণালয় নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করে সব দপ্তর, বিভাগ বা মন্ত্রণালয়ের ওপর ‘নিয়ন্ত্রণ’ রাখার কথা বলেছে ইসি।
প্রস্তাবিত সংশোধনীর ৪৪ (ই) ধারায় বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সরকারের যে কোনো বিভাগ বা দপ্তরের অধীনে যে কোনো চাকরিজীবীকে বদলির জন্য তার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে লিখিভাবে অনুরোধ করবে ইসি।
লিখিত ওই পত্রটি হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে বদলি কার্যকর ব্যবস্থা নিবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া ৮৬ ধারায় তিনটি নতুন উপধারা সংযুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
উপধারা ৮৬ (এ) প্রস্তাব রয়েছে- নির্বাচনের সময় যদি কোনো ব্যক্তি ইসির নির্দেশ না মানে বা ভঙ্গ করে তবে তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
উপধারা ৮৬ (বি) তে বলা হয়েছে, কোনো বিভাগ বা দপ্তর বা এসব দপ্তরের যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি ইসির নির্দেশ না মানে বা ভঙ্গ করে তবে তাকেও একই দণ্ডে দণ্ড দেয়া যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।