আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারত থেকে প্রণব মুখার্জির প্রতিশ্রুত ৫ লাখ টন খাদ্যশস্য আসেনি

মুক্তমত প্রকাশের প্লাটফর্ম ব্লগ। তাই ব্লগে বসতে ভা্ল লাগে....। প্রণব মুখার্জির প্রতিশ্রুত ৫ লাখ টন খাদ্যশস্য সরবরাহ করেনি ভারত। আইনি জটিলতায় দীর্ঘ ৩ বছরেও এসব খাদ্যশস্য বাংলাদেশে আসেনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ৫ লাখ টন চাল ও গম আসার আশা থেকে সরে এসে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য প্রণব মুখার্জি (ভারতের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী) ২০১০ সালের আগস্টে ঢাকা সফরের সময় ৫ লাখ টন খাদ্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এর মধ্যে ৩ লাখ টন চাল ও ২ লাখ টন গম রয়েছে। শর্ত হিসেবে থাকে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য থেকে ৫ ডলার কমে ভারত বাংলাদেশের কাছে রফতানি করবে। প্রণব মুখার্জির প্রতিশ্রুতির পর বাংলাদেশ ভারত থেকে খাদ্য আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করে।

এ নিয়ে দুই দেশের আমলা পর্যায়ে কয়েকবার আলোচনা হয়। বেশ সময়ও অতিবাহিত হয়। এরপর ২০১১ সালের ফেব্র“য়ারিতে জেনেভা সম্মেলন শেষে প্রণব মুখার্জির কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সে সময় তিনি আবার প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান ২০১০ সালের অক্টোবরে ভারত সফরেও চাল ও গম আমদানি প্রসঙ্গে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশে ৫ লাখ টন চাল ও গম রফতানির বিষয়টি ভারতের আদালতে ওঠে। চাল সরবরাহ নিয়ে ওই দেশের কয়েকটি কোম্পানি একটি রিট দায়ের করে। রিটকারীদের অভিযোগ পুরনো সরবরাহকারী থাকা সত্ত্বেও তারা এ চাল সরবরাহের দায়িত্ব পায়নি। অবশ্য তখন ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রিটকারী কোম্পানিগুলো সেদেশের কালো তালিকাভুক্ত। এজন্যই তাদের এ চাল সরবরাহের কাজ দেয়া হয়নি।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’ নামে একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ওই চাল সরবরাহ করার কথা। বাংলাদেশ সর্বশেষ ৪৯১ ইউএস ডলারের প্রতি টন চালের আন্তর্জাতিকবাজার দর নির্ধারণ করে ভারতের কাছে পাঠায়। হিসাব অনুযায়ী ওই দর থেকে ৫ ডলার কম অর্থাৎ ৪৮৬ ডলারে বাংলাদেশে ভারতের চাল পাঠানোর কথা। কিন্তু হঠাৎ বিশ্ববাজারে মূল্য বেড়ে যায়। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন চালের মূল্য ওঠে ৫১০ ডলার।

ফলে ভারত থেকে চাল সরবরাহ আবার আটকে দেয়া হয়। পরে সেই মূল্য জটিলতা কাটানো হয়। কিন্তু এত প্রক্রিয়ার পরও খাদ্যশস্য সরবরাহ করেনি ভারত। এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ভারত যেসব শর্ত দিয়েছে তা পূরণ করেই প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু ভারতে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল এ নিয়ে।

মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ সূত্র বলেছে, এই মুহূর্তে খাদ্য নিয়ে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই। আগামী বোরো ওঠা পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া খাদ্য সংকট হবে না। ইতিমধ্যে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইউক্রেন থেকে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য আমদানির ব্যবস্থা করেছে সরকার। থাইল্যান্ড থেকে ২ লাখ টন চাল এসেছে গত বছর। ভিয়েতনাম থেকে আসে আড়াই লাখ মেট্রিক টন চাল।

এছাড়া প্রতিবছর পাঁচ থেকে দশ লাখ টন গম দেবে এমন একটি চুক্তি হয়েছে ইউক্রেনের সঙ্গে। বর্তমানে সরকারের গুদামে ৯ লাখ টন খাদ্য মজুদ রয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালের ৯ ফেব্র“য়ারি আবার ঢাকায় আসেন প্রণব মুখার্জি। দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সিদ্ধান্ত হয় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে।

দ্বিতীয় এ সফরে ঢাকার শেরাটন হোটেলে সাংবাদিকদের সামনে সিডর দুর্গত এলাকার জন্য ভারতীয় সহায়তার ঘরের মডেল উদ্বোধন করেন তিনি। খুব শিগগিরই ঘর নির্মাণ শুরু হবে বলেও ঘোষণা দেন। কিন্তু ঘর নির্মাণ সহায়তা আর আসেনি। ১ ডিসেম্বর পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে আসেন ভারতের তৎকালীণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি। বরগুনার পাথরঘাটা এবং বাগেরহাটের শরণখোলা এলাকার বিধ্বস্ত উপকূল পরিদর্শন করেন তিনি।

পরে দেশে ফেরার আগে দুর্গত এলাকার ১০টি গ্রাম পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। জানা গেছে, এ বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমে ১৬শ’ পরিবারের তালিকা চায়। সেটি পাঠানো হলে জানতে চাওয়া হয় পরিবারের সদস্য সংখ্যা। দ্বিতীয় এই চিঠির উত্তরের পর তৃতীয় দফা চিঠিতে তালিকাভুক্ত ১৬ পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তি ও তাদের আয়ের পরিমাণ জানতে চায় ভারত। যথারীতি সেই তথ্যও দিয়েছে বাংলাদেশ।

কিন্তু তারপরও কোনোরকম সহায়তা পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ২০১১ সালের প্রথম দিকে আবার তাগাদাপত্র দেয়া হলে বিষয়টি ভারত সরকারের পরীক্ষা -নিরীক্ষাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.