অযথা ঝগড়া বিবাদ ভাল লাগে না। শিক্ষা বলতে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়। সু শিক্ষা চাই সর্বত্র।
প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে যাকাত দেয়ার রীতি চলে আসছে বহু কাল থেকে। ধনীদের কেউ নগদ টাকা কেউ আবার বস্ত্র বিতরন করে গরীবের মাঝে।
তবে শোনা যায় সঠিক হারে যাকাতের টাকা দেয় না অধিকাংশ যাকাত দাতা। আমাদের দেশে যাকাত হিসেবে বস্ত্র দানকে বেশী প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রশ্ন রয়েছে বস্ত্রের মান নিয়ে। বেশীর ভাগ যাকাত দাতা সবচেয়ে কম দামের বস্ত্রটি গরীবের যাকাতের জন্য কিনে আনে। সাধারনত সব সময় যে বস্ত্র মানুষ পরিধান করে তার তুলনায় যাকাতের বস্ত্রকে আলাদা ধরার একটা মানসিকতা আছে আমাদের মাঝে।
যাকাত গরীবের জন্য তা কম দামী, নিম্ন মানের বস্ত্র হবে এমনটা ভেবে থাকেন প্রায় সবাই। যাকাতের নিম্ন মানের বস্ত্র বিক্রির জন্যও আলাদাভাবে বিজ্ঞাপন দেয় বিক্রেতারা। বড় বড় করে লেখা থাকে ‘ এখানে যাকাতের কাপড় পাওয়া যায়’। যেন যাকাতের কাপড় ভিন্ন কোন গ্রহ থেকে আনা হয়।
বাঙ্গালী নারীদের সবচেয়ে প্রিয় পোশাক শাড়ি বা কাপড়।
সাধারনত লম্বায় তা ১২ হাত হয়। তবে যাকাতের জন্য বিক্রি করা কাপড় থাকে ১০ হাতের কম। গত বছর বা তারও আগে ওই রকম যাকাতের কাপড় পাওয়া কয়েকজন মহিলার সাথে আলাপ করে জানা গেল, নিম্নমানের এই কাপড়গুলো একবার ধোয়ার পর তা আরো খাটো হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে রঙ উঠে গিয়ে ভিন্ন রঙে রুপ নেয় তা। সেই কাপড় পরে রাস্তাঘাটে অনেকে ভিক্ষা করে কেউ আবার নানা কাজ করে।
আটসাট কাপড়টি তখন তাকে সুরক্ষা দিতে পারে না। ছওয়াবের আশায় একজন নারীকে যে কাপড় দান করা হল তা কতটুকু কাজে লাগবে তা ভাবা উচিত যাকাত দাতাদের।
মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা গেল অধিকাংশ যাকাতের কাপড় ১ শ’ ৭০ থেকে ২ শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেদারছে তা কিনে নিয়ে গরীবকে দিচ্ছেন। প্রশ্ন রইল সেই সব যাকাত দাতাদের কাছে, আপনি নিজে কি এই কাপড় আপনার স্ত্রী, মা, বোনদের উপহার দিতে পারবেন ? এক দোকানী জানালো, আড়াই শ’ থেকে ৩ শ’ টাকা দামের যে কাপড় বিক্রি হয় তা তুলনামূকভাবে ভাল।
পুরোপুরি ১২ হাতের এই কাপড় মধ্যবিত্ত সমাজে সব সময় ব্যবহার হয়। অনেক যাকাত দাতা এই কাপড় কিনে তা গরীবকে দেন।
লক্ষ্য করলে দেখা যায়, নিম্নমানের কাপড়ের চেয়ে ভাল মানের কাপড়ের দামে খুব বেশী তফাৎ নেই। একই অবস্থা লুঙ্গী, পাঞ্জাবীসহ অন্যসব বস্ত্রের বেলায়ও। একজন গরীব মানুষ ঈদ উপলক্ষে একটি বস্ত্র পাওয়ার আশায় ধনীদের বাড়িতে অনেকবার ঢু মারে।
কত কাকুতি করে বলে ‘ সব সময় দেন আমারে এবারেও একটা কাপড় দিয়েন’ কেউবা বলে ‘ গতবার পাই নাই এবার কিন্তু দিবেন’। এরপর যেদিন দেয়া হয় সেদিন আবার সকাল থেকে লম্বা লাইনে দাড়িয়ে রোদে পুড়ে বেলা শেষে একটি বস্ত্র জুটে, কারো হয়তো জুটে না। সেই বস্ত্রটি যদি ভাল মানের না হয় তবে কি লাভ এই লোক দেখানো দান করে।
আসুন সবাই ওয়াদা করি যাকাতের বস্ত্র ভাল মানের দিব নিম্ন মানের নয়। এতে করে যাকাতের কাপড় বলে কোন দোকানে আলাদা সাইনবোর্ড লাগাতে হবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।