আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই বিএনপির সংসদ সদস্যপদ হারানোর এই ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
সংসদে টানা ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতি সদ্য শেষ হওয়া সপ্তদশ অধিবেশন পর্যন্ত ৮৩ কার্যদিবস ছুঁয়েছে।
সে হিসেবে সদস্য পদ রাখতে আগামী বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে হবে তাদের, যা আগামী জুন মাসে হবে।
টানা ৭৭ দিন অনুপস্থিতির পর সর্বশেষ গত বছরের ১৮ মার্চ সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলো বিএনপিসহ বিরোধী দল।
২০ মার্চ বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তব্য দেয়ার পর আবার সংসদ বর্জনে ফেরে বিএনপি।
বর্জনের কারণ দেখিয়ে তখন সংসদে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছিলেন, জনগণের কথা বলতে অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন তারা। তবে ক্ষমতাসীন দল ও স্পিকারের কারণে তারা কথা বলতে পারেননি।
গত বছরের ১৮ মার্চের আগে ২০১১ বছরের ২৪ মার্চ বিএনপি সংসদে যোগ দিয়েছিলো এবং কিছুদিন পরই আবার বেরিয়ে যায়।
নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপিকে সংসদে ফিরতে সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
সংলাপের প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবারও বিরোধী দলকে সংসদে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।
স্পিকার আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেয়া পর নতুন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও বিরোধী দলকে আগামী বাজেট অধিবেশনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো সংসদে ফেরার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
এই প্রসঙ্গে জয়নুল আবদীন ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সংসদে যোগ দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ”
সেক্ষেত্রে সংসদ সদস্যপদ হারানোর ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, “এনিয়ে এ মুহূর্তে আমরা চিন্তিত নই।
”
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক সংসদ সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংসদ অধিবেশনে অনুপস্থিতি ৮৩ দিন পার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই দলীয় ফোরামে আলোচনা করবেন তারা।
চলতি নবম জাতীয় সংসদে বিরোধী দল সংসদ বর্জনের রেকর্ড করেছে। সপ্তদশ অধিবেশন পর্যন্ত ৩১৫ দিন সংসদে অনুপস্থিত ছিলো বিএনপি, দেশের সংসদীয় ইতিহাসে কোনো বিরোধী দল এতদিন অনুপস্থিত ছিলো না।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সংসদীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের পর পঞ্চম সংসদে (১৯৯১-১৯৯৫) প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ২৬৫ কার্যদিবসের মধ্যে ১৩৫দিন সংসদের বাইরে ছিলো।
সপ্তম সংসদের (১৯৯৬-২০০১) বিরোধী দল বিএনপি ২১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৬৩ দিন এবং অষ্টম সংসদের (২০০১-২০০৬) বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ৩৭৩ কার্যদিবসের মধ্যে ২২৩ দিন বাইরে ছিলো।
বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা পঞ্চম সংসদে উপস্থিত ছিলেন ১৩৫ দিন, অষ্টম সংসদে ৪৫ দিন উপস্থিত ছিলেন তিনি।
অন্যদিকে খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সপ্তম সংসদে উপস্থিত ছিলেন ২৮ দিন। নবম অর্থাৎ বর্তমান সংসদে এই পর্যন্ত ৩৭০ কার্যদিবসে আট দিন উপস্থিত হন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।