ভিন্ন মতের, তাই আদিম বর্বর স্টাইলে নির্যাতন! মিউজিক ও গানের তালে তালে প্রথমে রড আর হকিস্টিক দিয়ে পেটানো হলো। তারপর বৈদ্যুতিক শক। নৃশংস বর্বর স্টাইলের এ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের (এসএম হল) চার ছাত্র। আর এ নির্যাতন করেছে বর্তমান সরকারের শীর্ষব্যক্তির ‘সোনার ছেলে’ বলে আখ্যা দেয়া ছাত্রলীগ।
সময় শনিবার দিবাগত রাত দুইটা।
ছাত্রলীগ এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক আনু আনোয়ারের নির্দেশে তার গ্রুপের সমর্থক নাহিদ, হাফিজ, দিদার, পলাশ, সাকিল ও ভাড়াটিয়া ক্যাডার রানা এক তাবলীগ জামায়াতের ছাত্রের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চার ছাত্রকে বিভিন্ন রুম থেকে হলের রিমান্ড সেল নামে
পরিচিত ১৪১ নম্বর রুমে ধরে নিয়ে যায়। ২৫ নম্বর গণরুম থেকে ধরে নেয়া হয় বাংলা তৃতীয়বর্ষের ছাত্র মোবারক হোসেনকে, ৮৫ নম্বর গণরুম থেকে নেয়া হয় সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র হাসানুল বারীকে, ১৩৮ নম্বর রুম থেকে নেয়া হয় আইন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তারেকুল ইসলামকে এবং ১৬৫ নম্বর গণরুমের সামনে থেকে নেয়া হয় ইসলামী স্টাডিজের ছাত্র শহিদুল ইসলামকে। ছাত্রলীগ অভিযোগ পায় এরা ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মী।
এদের রিমান্ড সেলে নেয়ার পর ভেতর থেকে দরোজা বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর কম্পিউটারে মিউজিক ও গান ছেড়ে দিয়ে হকস্টিক ও রড দিয়ে পেটানো শুরু হয়।
নির্যাতনের একপর্যায়ে দেয়া হয় বৈদ্যুতিক শক। এতে তারা একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলে এ নির্যাতন। গভীর রাতে নির্যাতিতদের চিত্কারে আশপাশের কক্ষের ছাত্ররা ছুটে এলেও ক্যাডারদের ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি কেউ। তাদের উদ্ধারে হল প্রভোস্টের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এরপর ভোররাতে প্রক্টর কে এম সাইফুল ইসলাম খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন আহত দু’জনকে। তিনি তাদের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। আর বাকি দু’জনকে নির্যাতনের পর ছেড়ে দেয়া হয়। মোবারক ও হাসানুল বারীকে উদ্ধারের পর গতকাল দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রক্টর তাদের ছেড়ে দেন। তবে যেসব ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এ অমানবিক নির্যাতন করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রক্টর কিংবা হল কর্তৃপক্ষ।
নির্যাতনের শিকার হাসানুল বারী সাংবাদিকদের বলেন, রড ও হকস্টিক দিয়ে মারার পর আমাদের বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়েছে। তখন আমরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ছিলাম। হাসানুল বলেন, আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। হল ছাড়া হয়ে এখন আমি কোথায় থাকব।
এ ব্যাপারে প্রক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্যাতিতদের উদ্ধারের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জড়িতদের শাস্তির ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষ দেখবেন। আমি হল প্রভোস্টের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের পাইনি।
source
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।