নিজেকে হয় নাই চেনা
এখন রাত দশটা বাজে। ঠিক দশটা না, দশটা বাজতে তিন মিনিট বাকী আছে। সকালে ঠিক সাড়ে নটায় ল্যাপ্পিটা কাঁধে ঝুলিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ছিলাম এই পন করে যে “যে করেই হোক আজকে এসাইনমেন্টটা শেষ করে তবেই রুমে ফিরবো”। রুমে থাকলে কিছুই করা হয় না। কতক্ষন পরেই পাশের বিছানাটার সাথে আমার পিঠের একটা তুমুল আকর্ষন কাজ করে।
একটু না শুয়ে পারি না। আর একটু শোয়া মানেইতো বুঝেছেন, খানিক ঘুমিয়ে নেয়া। তাই এভাবে রুম থেকে বের হয়ে আসা।
থার্ড ইয়ারে উঠার পর থেকে খেয়াল করছি, এসাইনমেন্ট গুলো কেমন যেন বিদঘুটে হয়ে গেছে। এক পৃষ্ঠা লেখতে গেলে নিদেন পক্ষে দশ পৃষ্ঠা পড়তে হয়।
ভিন্ন ভাষায় লেখা কিছু পড়তে গিয়ে চোখকে তার কোটর বিচ্ছিন্ন করার ধৈর্য আমার কোন কালেই ছিল না। এখনও নেই। আজ এই পর্যন্ত অনেক বার চেষ্টা করেছি কিছু আর্টিকেল রিভিউ করবো এসাইনমেন্টের জন্য। পারলাম না। একটা করে আর্টিকেল খুলি আর কয়েক লাইন পড়েই বিরক্ত হয়ে অন্যটা ধরি।
একাডেমিক আর্টিকেল, বড্ড বেশী বোরিং, রস কস কিচ্ছু নেই ওতে। প্রতিবার এই টাইপের এসাইনমেন্ট গুলো করতে গিয়ে মেজাজটা বিগড়ে যায়। নিজে নিজেই বকি, “শালার এই এসাইনমেন্ট জিনিসটা যে কোন ব্যাটায় বানাইসে!! ওরে পাইলে কিলাইয়া চৌদ্দ গোষ্ঠীর নাম ভুলাইয়া দিতাম”
সারা দিনে কিছু একটা লেখার জন্য ক’বার যে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের পাতা খুলেছি তার ইয়ত্তা নেই। দু-চার লাইন লিখেই মনে হচ্ছে কি করতে এলাম আর কি করছি। ভেবেই বন্ধ করে আবার এসাইনমেন্টে মনযোগ।
কিন্তু ওটাও আর করা হয় না। আবার কিছু একটা লেখার জন্য বসি। নাহ! দুই চার লাইন লেখার পর আর আগায় না কিছুই। আচ্ছা সমস্যাটা কোথায়? কি হচ্ছে এসব?
কি লিখবো খুজেই পাচ্ছিনা। অবশেষে চিন্তা করলাম মাথায় কত চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে, সেগুলোই লিখে ফেলি না কেন? যেই ভাবা সেই কাজ, শুরু করলাম লেখা।
এই যা! আবারো একই কান্ড। দু-চার লাইন লেখার পরই চিন্তাগুলো কোথাও আটকে যাচ্ছে। আর এগুচ্ছে না। সেই সাথে থেমে গেছে দুটি হাত। কীবোর্ডের উপর আজ আর হাত চলছে না।
অবশেষে হাল ছেড়ে দিলাম। আজ কোন লেখালেখি নয়।
সন্ধ্যার পর আবারো ঐ এসাইনমেন্ট নিয়ে বসলাম। এবার কিছুটা এগুলো কাজটা। কিন্তু কিছুক্ষন পর আবার থেমে গেল, আর ভাল্লাগছে না।
কিছুক্ষন ব্লগ পড়লাম, ফেসবুকে একজনের নোট পড়লাম। আবার কিছু একটা লেখার জন্য মনে ধরলো। কিন্তু কি লিখবো? মাথায় যে কিছুই নেই। আসলে মস্তিষ্কের চিন্তাগুলো কেন যেন আজ জোড়া লাগছে না। আমি বিক্ষিপ্ত এই চিন্তাগুলো থেকে মুক্তি চাই।
তা না হলে যে কোন কাজ হচ্ছে না। আর লিখতে ইচ্ছা করছে না। এখন দশটা পঁচিশ বাজে। এখানেই শেষ করলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।