অন্ধকার দেয়ালে তোমার আলো জন্ম দেয় মিথ্যে ছায়াকে.....
৩রা ফেব্রুয়ারি ছিল আমার পিচ্চিকালের বন্ধু দিতু'র জন্মদিন। গত চার বছর এই দিনটিতে সাধারনত সেমিস্টার ফাইনাল থাকত। এবার সেই ঝামেলা না থাকায় এক সাথে সেলিব্রেট করলাম। দিতুর বান্ধবিটি খুবই উচ্ছল আর হাসিখুশি প্রকৃতির। কিছুটা ভ্রমন প্রিয়ও বটে।
সে বলল এবারে আমরা কয়েকজন মিলে সোনারগাঁ যাব। আমি আগে কখনও ওদিকে যাইনি। তাই আমিও খুশি হয়ে গেলাম।
রওনা দেয়ার কথা ছিল ১১ টায়। কিন্তু দিতুর বান্ধবি এলই ১টার পর।
যথারীতি দিতুর সাথে ১ দফা ঝগড়া হয়ে গেল। মনে মনে ভাবলাম,শোকর আলহামদুলিল্লাহ! একা আছি ভালো আছি।
যাইহোক,গুলিস্তান থেকে বোরাক বাসে আমরা ৫ জন উঠলাম। জ্যাম-ট্যাম মিলিয়ে মোটামোটি দেড় ঘন্টার মত লাগল সোনারগাঁ পৌছাতে।
ভেবেছিলাম সোনারগাঁ প্রাচীন নগরী টাইপ কিছু হবে,কিন্তু কল্পনার সাথে কিছুতেই বাস্তব মেলাতে পারলাম না।
একটা পিকনিক স্পটের মত লাগল। সব গুলো ভবনই সম্ভবত সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু এতে এর প্রাচীন প্রাচীন ভাবটা পুরাটাই চলে গেছে। একদিকে গরুর গাড়ির ভাস্কর্য,আরেকদিকে ঘোড়ার ভাস্কর্য। প্রথম ভবনটার আঙ্গিনায় পালকি,গ্রাম বাংলা, বাউল-এসবের পুতুল সাজানো।
বলতে গেলে ভবন গুলোর আকৃতি ছাড়া সব কিছুই নতুন। প্রবেশের পরেই বঙ্গবন্ধুর বানী ঝোলানো দেখতে পেলাম। ভেতরে আরও কয়েক জায়গাতেও আছে। তবে তার কোনো প্রতিকৃতি পেলাম না। তার জায়গায় শেখ রাসেলের প্রতিকৃতি দেখতে পেলাম।
ছবিতে পুকুর পাড়ে ঘোড়ার ভাস্কর্্য। ।
পুকুর পাড়ে আমরা দিতুর জন্মদিনের কেক কাটা শুরু করলাম। কেক কাটার পর দিতুর বান্ধবিটি একের পর এক সারপ্রাইজ দিতে লাগল। সবচেয়ে মুগ্ধ হলাম তার শেষ গিফটটি দেখে।
দুজনের বিভিন্ন ছবি নিয়ে আর ক্যাপশন দিয়ে এত সুন্দর একটা লগ বুক তৈরি করেছে! পাতায় পাতায় তাদের বিভিন্ন স্মৃতি আর স্বপ্ন। মনে মনে বললাম- ইয়া আল্লাহ!! ক্যান তুমি আমাকে একটা গার্লফ্রেন্ড দিলা না!!
সোনারগাঁ থেকে আমরা রওনা দিলাম বাংলার তাজমহলের উদ্দেশ্যা। ১২০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিয়ে বেশ খানিকটা ভেতরে ;''বাংলার তাজমহল''। ৫০টাকা পার হেড প্রবেশ ফি দিয়ে ঢুকে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। রুচিহীন একটি সৃষ্টি।
তাজমহল বলাটা অন্যায় হয়ে যাবে। ঢুকতেই চোখে পড়ে হাস্যকর কয়েকটা ছবি। যেমন- একদল মানুষ গোলাপ ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে! নিচের ছবিতে আমার পেছনে দেখুন :
প্রবেশের পর ডানে বায়ে দুইদিকেই ''টয়লেটের'' মত অবয়ব। কিন্তু আসলে ওগুলো নাকি অফিস কক্ষ। সবচেয়ে হতাশাজনক, তাজমহল স্ট্রাকচারটি।
নিন্মমানের টাইলস দিয়ে মোড়ানো-কি আর বলব। এর চেয়ে বসুন্ধরা সিটির টাইলসও ঢের ভালো মানের। ফোয়াড়ার পানি ময়লায় ভরা। পুরা এলাকা যেন মশাদের গুদাম। কখনই সম্ভবত মশার ওষুধ দেয়া হয় না।
মশার জ্বালায় টিকতে না পেরে ''বাংলার টাইল মহল'' ত্যাগে বাধ্য হলাম। সি এন জি নিয়ে মদনপুর বাস স্ট্যান্ড,সেখান থেকে আবার বোরাক হয়ে ঢাকায়।
আরেকটি কথা,টাইলসমহলে গিয়ে কেউ আশে পাশের দোকান থেকে কিছু কিনে খেতে যাবেন না। একেবারে গলা কেটে রেখে দেবে!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।