জীবন কবিতার মত। আর কবিতাগুলো দুর্বোধ্য।
-এই রিকশা যাবা?
-কৈ যাবেন?
-সিদ্ধেশ্বরী ..কালি মন্দির .. কত ভাড়া?
-তিরিশ টাকা..
ভাড়া তিরিশ টাকা না হওয়ার কোন কারন নেই। মাসুক বিস্মিত হওয়ার ভান করে বলল,তিরিশ টাকা! রিকশায় নিজে কোনদিন চড়ছো নাকি সারাজীবন খালি চালাইছো?
মাসুকের পকেটে আছে মাত্র কুড়ি টাকা। দুইটা পাঁচ টাকার কয়েন, পাঁচটা দুই টাকার নোট।
সে দাঁড়িয়ে আছে নীলক্ষেত মোড়ে। সিদ্ধেশ্বরীতে ছাত্রী পড়াতে যাওয়া দরকার। মাসুক টিউশানিতে কখনোই সিরিয়াস না। রেগুলারলি ইররেগুলার। ছাত্রীর নাম ত্রপা।
ত্রপার আম্মা মাসুককে বলে দিয়েছেন বারদিন পড়ানো হলে তিনি একমাসের টাকা দিবেন। আজ তেরতম দিন। আজ বেতন পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
কোন রিকশাই কুড়ি টাকায় সিদ্ধেশ্বরী যেতে চাচ্ছে না। বেশির ভাগই তিরিশ টাকা চাচ্ছে, কেউ কেউ পঁচিশ টাকা দিলে যাবে বলছে।
বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তি।
আকাশের চেহারাটা খুব একটা সুবিধার না। যেকোন সময় বাতাসটাতাশ শুরু হয়ে যেতে পারে। ধূুলিকা বাতাস। বাতাস শুরু হয়ে গেলে রিকশা ভাড়া আরও বাড়ার সম্ভাবনা।
টিউশানিতে যাওয়া ঠিক হবে কিনা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে খুচরা চার টাকার দরকার। লাইটার দিয়ে বেনসন ধরাল মাসুক। নীলক্ষেত মোড়ে দাঁড়িয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে মোট দুইটা আইডিয়া মাথায় আসল।
আইডিয়া ১ঃ টিউশানিতে অবশ্যই যেতে হবে তবে পুরো পথ রিকশায় যাওয়া যাবে না।
কিছুটা বাসে যেতে হবে তারপর রিকশা নিতে হবে। নিলক্ষেত থেকে লোকাল বাসে প্রেস ক্লাব তারপর রিকশায় কালি মন্দির।
আইডিয়া ২ঃ আজকে টিউশানিতে একদমই যাওয়া হবে না।
সিদ্ধান্ত দুই খুব একটা পছন্দ হলো না মাসুকের। কারন এ মাস চলার মত তার কাছে আর কোনো হাত খরচ নেই।
কারো কাছ থেকে অবশ্য কিছু ধার নেয়া যেতে পারে। কিন্তু মাসুকতো কারও ধার ধারে না। সে ঝরঝরে টাইপের একটা বাসে উঠে পড়ল।
মাসুকের একটা বিশেষ গুন আছে। নিজে সিগারেট খেলেও অন্যের সিগারেট খাওয়া সে একদমই পছন্দ করে না।
ঘনবসতিপূর্ণ বাসের মধ্যে বাতাসে নিম্নমানের তামাকের গন্ধে তার মাথা ঝিমঝিম করছে।
(২০/০৭/২০০৬ )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।