সরদার আবদুর রহমান : ভারত তার উত্তর প্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত 'নিম্নগঙ্গা সেচ প্রকল্পের' জন্য ৬ হাজার কিলোমিটার খালের মাধ্যমে গঙ্গার পানি সরিয়ে নিচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশে পদ্মা নদীতে পড়ছে পানির টান। এভাবে ভারত আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গার প্রায় পুরোটা জুড়ে অসংখ্য প্রকল্পের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার অব্যাহত রেখেছে। এটি পৃথিবীর বৃহত্তম খালগুলোর একটি।
বাংলাদেশ এমনিতেই ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় মরুপ্রক্রিয়ার শিকার হচ্ছে।
'মধ্যগঙ্গা ক্যানাল প্রজেক্ট'-এর মতো কার্যক্রম বাংলাদেশের পদ্মাকে আরো বিপন্ন করে তুলবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের অসংখ্য বাঁধ, খাল ও অন্যান্য প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশ শুকনো মওসুমে গঙ্গার পানি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এখন মধ্যগঙ্গা ক্যানাল প্রজেক্টসহ এধরণের প্রকল্পের কারণে পদ্মা নদীর অস্তিত্ব আরেক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র মতে, ভারতের আলীগড়ের কাছে নারোরা নামক স্থানে গঙ্গা নদীর ডান তীরে এই খাল খনন করা হয়েছে। এর প্রধান খালটি ১ হাজার ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
এর শাখা-প্রশাখার দৈর্ঘ ৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি। নিম্নগঙ্গা খাল প্রকল্পের (Lower Ganga Canal-LGC) পানি প্রত্যাহারের ক্ষমতা হলো প্রতি সেকেন্ডে ১৫৬ ঘনমিটার। এর মাধ্যমে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হবে। এই সুদীর্ঘ ক্যানেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশ ও উত্তরখন্ড রাজ্যের ১০টি জেলার প্রায় ৯ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি সেচের আওতায় আসছে। এই ক্যানেলের প্রধান শাখাগুলোর মধ্যে আছে মাইনপুরি জেলার জেরা গ্রাম থেকে কানপুর ও কানপুর থেকে ভগ্নিপুর, বালরাই থেকে ইয়ামুনা নদী, ইটাওয়া থেকে নানু, নানু থেকে নারোরা প্রভৃতি।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেচের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে মূল্য নেয়া হয়ে থাকে। প্রকল্পভুক্ত এলাকাগুলোর মধ্যে আছে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মধ্যাঞ্চলের মাইনপুরি, ইটাহ, ফররুখাবাদ, ইটাওয়াহ, কানপুর, ফতেপুর, এলাহাবাদ প্রভৃতি জেলা। এই সেচ সুবিধা আরো সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও আছে বলে জানা গেছে। এদিকে শুরুতে এটি কেবল একটি সেচ প্রকল্প হিসেবে দেখা হলেও পরে এর চ্যানেলসমূহ নৌ চলাচলেরও উপযোগী করা হয়। এ জন্য খালের দু'পাড় সম্প্রসারণ ও গভীরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।