২০১০ মোটেও ভালো কাটেনি বিএনপির
ঢাকা: ২০১০ সাল মোটেও ভালো কাটলো না বিএনপির। বার বার ঘোষণা দিয়েও সরকার পতনের আন্দোলন তেমন একটা জমাতে পারেনি দেশের প্রধান এই বিরোধী দল। উপরন্তু সরকারের কৌশলী পদক্ষেপে দলটির একের পর আন্দোলনের ইস্যু বুমেরাং হয়ে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়তে হয়েছে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
এছাড়া নাটোরের উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবু হত্যা, সিরাজগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অর্ধডজন মানুষের মৃত্যু, উপ নির্বাচনে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের পরাজয় ইত্যাদি ইস্যুর পালেও ঠিকমতো হাওয়া জোগাতে পারেননি দলটির নেতারা।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে তাদের সমর্থিত প্রার্থী জিতলেও দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে দলীয় মেয়র প্রার্থী বাছাই করতে না পারার ব্যর্থতাটাই প্রকট হয়ে ফুটেছে। তারওপর চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা ও কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী গ্রেপ্তার হওয়ার পর আরো বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি।
সর্বশেষ ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের ডাকা ২৬ ডিসেম্বরের হরতালে সমর্থন জানিয়েছিলো দলটি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওলামা মাশায়েখরা হরতাল প্রত্যাহার করায় বেকায়দা অবস্থায় থেকেই বছর শেষ করতে হচ্ছে বিএনপিকে।
জানুয়ারি-২০১০
১ জানুয়ারি: ছাত্রদলের ৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ছাত্র সমাবেশে ভাষণ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো চুক্তি হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা নয়-দেশ চালাচ্ছে অন্য কোনো শক্তি। ’ ছাত্র সমাবেশে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনও বক্তৃতা করেন।
৬ জানুয়ারি: বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১১ ও ২৫ জানুয়ারি জরুরি আইন ও বাকশাল প্রাতিষ্ঠার দিনকে কালো দিবস এবং ১৯ জানুয়ারি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৭৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৯ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
৭ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের প্রতিক্রিয়া জানাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংসদে ফেরার পরিবেশ নিশ্চত করার আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সত্যের অপলাপ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
৯ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রাক্কালে গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দেশের স্বার্থ রক্ষার পরামর্শ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১১ জানুয়ারি: কালো দিবস উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিএনপির আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ক্ষমতায় গেলে ১/১১’র কুশিলবদের বিচারের ঘোষণা দেন।
১২ জানুয়ারি: ১/১১’র কালো দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি।
মিছিল উদ্বোধনকালে মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো অর্জন হয়নি। ’
১৩ জানুয়ারি: বিএনপির নবগঠিত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক চেয়াপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় দুই দেশের যৌথ ঘোষণা নিয়ে পর্যালোচনা হয় এ বৈঠকে।
১৪ জানুয়ারি: ভারতের সঙ্গে করা চুক্তির সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরএ গনি।
১৫ জানুয়ারি: সরকারের সঙ্গে ভারতের চুক্তি ব্যাপারে খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলন একদিন পিছিয়ে রোববার করার কথা জানান তার প্রেস সেক্রেটারি মারুফ কামাল খান সোহেল।
১৬ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে দলের পক্ষ থেকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সমম্মেল করেন দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে। ’
১৭ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে গুলশান অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদা জিয়া। সংবাদ সম্মেলনে যৌথ ইশতেহার প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সমঝোতা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাথে ভারত সরকারের।
দাসখত দিয়ে এসে সংসদে আলোচনার প্রস্তাব অর্থহীন। ’
১৮ জানুয়ারি: জাতীয় প্রেসকাবে শহীদ জিয়ার আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)। এদিন ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
১৯ জানুয়ারি: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
২১ জনুয়ারি: ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর হামলার প্রতিবাদে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্রদল। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সংসদে মিথ্যাচার না করে অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানান। এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জিয়ার লাশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে দেলোয়ার বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অসত্য বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংকীর্ণতার পরিচয় দিয়েছেন। ’
২২ জানুয়ারি: জিয়ার লাশ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রি.জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘ হাসিনার বক্তব্য কুরুচিপূর্ণ। ’
২৫ জানুয়ারি: ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাকশাল দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপি নেতারা বলেন, ‘সংসদ অকার্যকর রেখে দেশে গণতন্ত্রের লেবাসে বাকশালী শাসন চলছে।
’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান।
২৬ জানুয়ারি: ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর হামলার প্রতিবাদে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্রদল। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘প্রভুর ইশারায় বিএনপি ধ্বংসে নেমেছে মহাজোট।
২৭ জানুয়ারি ২০১০: ভারতের সাথে দেশ বিরোধী চুক্তির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর বিএনপি রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
এছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগে সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদকে দল থেকে বহিষ্কার করেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
২৯ জানুয়ারি: রাত ৩ টা ২০ মিনিটে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার মঈনুল রোডের বাসায় সমন নিয়ে যায় পুলিশ। বিরোধী দলের নেত্রীর বাসভবনে গভীর রাতে পুলিশ সমন নিয়ে যাওয়ায় বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক তীব্র সমালোচনা করেন।
৩০ জানুয়ারি: নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান তৃণমূল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দেশের ১০টি ভেন্যুতে ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনের আদলে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
২ মাসব্যাপী এ কর্মসূচি ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখে শুরু হয়।
ফেব্রুয়ারি-২০১০
১ ফেব্রুয়ারি: নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে শেখ হাসিনার মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন। জিয়া হত্যার সময় শেখ হাসিনা কোথায় ছিলেন তাও জানতে চান মোশাররফ। এর আগে ৩০ জানুয়ারি গণভবনে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাসায় না থাকতে ফোন দিয়েছিলেন তারেক রহমান। এর পরের তিন দিন খালেদা জিয়া কোথায় ছিলেন জাতি তা জানতে চায়।
৬ ফেব্রুয়ারি: বিএনপির তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলন সিলেট থেকে শুরু। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রি. জে. (অব) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘ষড়যন্ত্র ও ইতিহাস বিকৃতি রুখতে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ’
৭ ফেব্রুয়ারি: লালদীঘি ময়দানে চট্টগ্রাম বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘ভারতকে বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিলে দেশ নিরপাত্তা হীনতায় পড়বে। এদিন রাতে গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ কারেন ভারতীয় হাইকমিশনার রজিত মিতার।
৮ ফেব্রুয়ারি: গুলশান লেকশোর হোটেলে সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজনীতি করছি।
৯ ফেব্রুয়ারি: এদিন ঢাকা সিটি করপোরেশন বিএনপি সমর্থিত ওয়ার্ড কমিশনার আলী আহমেদ হোসেন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। নিহত আহমেদ হোসেন দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান খালেদা জিয়া।
১১ ফেব্রুয়ারি: ৬৪ কার্যদিবস বর্জনের পর খালেদার নেতৃত্বে সংসদে যোগ ও জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি করায় সংসদ থেকে ওয়াক আউট করে বিএনপি।
১৩ ফেব্রুয়ারি: ঢাকার হোটেল সোনার গাঁওয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুলের সাথে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ। এদিন রাতেই দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজামীর সাথে ১ ঘণ্টা বৈঠক করেন খালেদা।
১৪ ফেব্রুয়ারি: দ্বিতীয় বারের মতো যোগ দিয়ে সংসদ থেকে আবারো ওয়াক আউট করে বিএনপি। এদিন শেখ সেলিম সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘ জিয়ার কফিনে লাশ কেউ দেখতে পায়নি। ’
১৫ ফেব্রুয়ারি: এদিন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে তাজা ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।
জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তনে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। এর প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
১৬ ফেব্রুয়ারি: জিয়ার নাম পরিবর্তন ও গুলশান কার্যালয়ের সামনে বোমা পুঁতে রাখার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ দিন পরিবর্তনের কথা বলে ক্ষমতায় এসে সরকার নাম পরিবর্তনের রাজনীতি শুরু করেছে। ’
১৭ ফেব্রুয়ারি: রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্রদলের বর্ধিত সভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে শিগগিরই আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। ’
১৮ ফেব্রুয়ারি: জিয়ার নাম পরিবর্তন ও গুলশান কার্যালয়ের সামনে বোমা পুঁতে রাখার প্রতিবাদে মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিএনপির মিছিলে পুলিশের হামলায় নিহত ১, আহত হয় ১২ জন।
রাতে এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। ’
১৯ ফেব্রুয়ারি: মিছিলে হামলার প্রতিবাদে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকেলে হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বিএনপি দ্বিধা করবে না। ’
২০ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ২১ শে’র আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘বিএনপিকে শিক্ষা না দিয়ে আওয়ামী লীগের উচিত অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া। ’ এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘জিয়া বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে বিএনপিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য।
’
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশে’র প্রথম প্রহরে ফুল দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া প্রটোকল পাননি এমন অভিযোগ তোলে বিএনপি। ’
২২ ফেব্রুয়ারি: মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাকশালী শাসনের জন্য আওয়ামী লীগ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল। এই দিনই জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে জিয়ার নাম সরিয়ে সেখানে হযরত শাহ জালাল (রহ.) এর নাম স্থাপন করা হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি: বরিশাল তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তৃণমূল নেতারাই বিএনপির মূল শক্তি। ’ এদিন জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত স্মরণ সভায় নেতারা বলেন, ‘পিলখানা ট্রাজেডিতে আওয়ামী লীগ জড়িত।
’ সকালে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনাদের সমাধীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান খালেদা জিয়া। রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খালেদা নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে এসএসএফ মোতায়েনের দাবি জানায় বিএনপি।
মার্চ-২০১০
১ মার্চ: রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘তারেক রহমান: অপেক্ষায় বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাতে গুলশান অফিসে চিনা প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন। এদিন রাতেই সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলল ও সাইফুল ইসলাম নীরবকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া।
২ মার্চ: বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও তার ছোট ভাই আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছির বের হয়। বিক্ষোভ মিছিল পূর্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকারের কফিন তৈরি শুরু হয়েছে। সেখানে শেষ পেরেক মারার সময় ঘনিয়ে এসেছে। ’
৬ মার্চ: নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তারেক রহমানের তৃতীয় কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে ছাত্রদলের ছাত্রসমাবেশ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধান মন্ত্রীর মামলা প্রত্যাহার হলে তারেক রহমানের কেন নয়।
’
৮ মার্চ: আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গুলশানের একটি হোটেলে বিশিষ্ট নারীদের সাথে খালেদার মত বিনিময়।
৯ মার্চ: তারেক রহমানের কারাবন্দি হওয়ার ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে নয়াপল্টনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সমাবেশ। সমাবেশে বিএনপির নেতারা বলেন, ‘সরকার দেশকে বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছে। ’
১২ মার্চ: বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সাথে জড়িত। এর আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
’
১৩ মার্চ: জয়নুল আবদীন ফারুকের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে নয়াপল্টনে ছাত্রদল আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলের আগে ছাত্রনেতারা বলেন, ‘হুমকি-ধামকি বন্ধ না হলে গণআন্দোলন তীব্র হবে। ’
১৫ মার্চ: উপজাতি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বিএনপির সংসদীয় দল পার্বত্য অঞ্চলে যায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিটিশমন্ত্রী জি ফিজ প্যাট্রিক দেখা করতে এলে মাহমুদুর রহমানের উপর হামলার তদন্ত দাবি করেন খালেদা জিয়া। ফরিদপুর তৃণমূল সম্মেলনে গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘জিয়ার মাজারে হাত দিলে সে হাত ভেঙে ফেলা হবে। ’
১৬ মার্চ: কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৭ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
এদিন বিকেলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশ হবার কথা থাকলেও পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে সমাবেশ হতে দেয়নি। মূলত এদিন থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আর কোনো বিক্ষোভ সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি।
১৭ মার্চ: দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও মামলার প্রতিবাদে মুক্তাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্যাতনে দেশের মানুষ এমনিতেই দিগম্বর হয়ে যাবে। ’
১৯ মার্চ: গুলশানের বাসায় বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জয়ের দুর্নীতির প্রমাণ সময় মতো প্রকাশ করা হবে।
’
২০ মার্চ: কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে বাধা দেওয়ায় সারা দেশে যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশ। সমাবেশে নির্যাতন-নিপীড়নের জবাব রাজপথে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। ’
২০ মার্চ: খালেদা জিয়ার সাথে ব্রিটিশ হাইকমিশনার স্টিফেন ইভানের সৌজন্য স্বাক্ষাৎ।
২৬ মার্চ: মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে গেলে খালেদার গাড়ির বহরে পুলিশে বাধা দেয় বলে অভিযোগ করে বিএনপি। এদিন সকালে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়ার মাজার জিয়ারত করেন খালেদা জিয়া।
২৭ মার্চ: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় দর্শক সারিতে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া। তবে তিনি কোনো বক্তব্য রাখেননি। সভাপতির বক্তব্যে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ’
২৯ মার্চ: চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। সমাবেশে গণপ্রতিরোধের ডাক দেন তিনি।
এপ্রিল-২০১০
৩ এপ্রিল: রাজশাহীতে বিএনপির ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেন, ‘শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধ করেননি। ’
৪ এপ্রিল: বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক ও বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মুক্তাঙ্গনে ছাত্রদল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পদত্যাগ করে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিন। ’
১০ এপ্রিল: বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রেনাটা লক ডেসালিয়ান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিযার সাথে গুলশান কার্যালয়ে দেখা করেন।
রেনাটা এসময় ওয়ান ইলেভেনের সাথে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। এদিন বগুড়ায় তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বিএনপি নেতারা বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেন সরকারের বিচার একদিন হবেই।
১২ এপ্রিল: রাজধানী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শিক্ষক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাস দেন।
১৮ এপ্রিল: খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি জনগণকে বৃহৎ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
২২ এপ্রিল: নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভোলা-৩ উপনির্বাচনে কারুচুপি হলে এর পরিণতি শুভ হবে না। ’
২৪ এপ্রিল: ভোলা-৩ উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনিটরিং সেল খুলে সারা দিন নির্বাচনের সর্বশেষ খবর মিডিয়াকে অবহিত করে বিএনপি।
এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে ভোটকেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়।
২৭ এপ্রিল: গুলশান অফিসে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদল পরিচিতি সভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভোট ডাকাতি করে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় না। ’
মে-২০১০
৩ মে: ভোলা-৩ উপনির্বাচনের ফল বাতিল ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ তিন নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে মুক্তাঙ্গন থেকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় অভিমুখে বিএনপির গণমিছিল। তবে কোনো প্রকার পুলিশী বাধা ছাড়াই মিছিলটি বাংলামোটরে এসে শেষ হয়।
৫ মে: রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের চিঠি জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সমাবেশ থেকে সাবেক সেনা প্রধান মঈন উ আহমেদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
৬ মে: রাজশাহী বিভাগীয় মহাসমাবেশগামী বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে বগুড়ায় অর্ধদিবস হরতালসহ ৪ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
৮ মে: সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনে আয়োজিত আইনজীবীদের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বিচার বিভাগকে দলীয় অঙ্গ সংগঠনে পরিণত করার চেষ্টা করছে সরকার। ’
১২ মে: বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মাধ্যমে ১/১১-এর ভূত তাড়াতে হবে। ’
১৩ মে: খালেদা কালো টাকা সাদা করেছেন সরকারের এই বক্তব্য’র প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন।
১৯ মে: রাজধানীর ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এই সমাবেশ থেকে বিচার বিভাগের উপর সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ৯ জুন গণঅবস্থান, সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৭ জুন সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং গ্যাস-বিদ্যু-পানি সংকট নিরসন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির উন্নতিসহ ১৩ দফা দাবিতে ২৭ জুন সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া।
২২ মে: রাজশাহী মহাসমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত জাকির হোসেনের পরিববার খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে এলে তিনি বলেন, ‘দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। ’
২৩ মে: নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ১/১১-এর কুশিলবদের অপকর্মের বিচারে গণতদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
২৯ মে: শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ২৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। প্রধান অতিথি হিসেবে দর্শক সারিতে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়া। সভাপতির বক্তব্যে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘হরতালে বাধা দিলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
৩০ মে: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জিয়ার ২৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন। জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও রাজধানীর ৫১টি স্পটে দুস্থদের মধ্যে খালেদার খাবার বিতরণ।
জুন-২০১০
৫ জুন: গুলশান কার্যালয়ে জামায়াত নেতাদের সাথে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠক। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপির ঐক্যমত।
৬ জুন: হরতালের সমর্থন আদায়ে সাংবাদিক, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদদের সাথে খালেদা জিয়ার বৈঠক।
৭ জুন: রাজধানীর হোটেল শেরাটনের উইন্টার গার্ডেন বলরুমে বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়া।
৯ জুন: বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে বিএনপির গণঅবস্থান।
আঘাত এলে পাল্টা আঘাতের ঘোষণা খালেদার।
১৩ জুন: দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলন। হত্যার উদ্দেশ্যে মাহমুদুর রহমানের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে খালেদার অভিযোগ।
১৫ জুন: চিনা ভাইস প্রেসিডেন্ট শি পিংয়ের সাথে হোটেল সোনারগাঁয়ে খালেদার বৈঠক। গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনে চীনের আগ্রহে বিএনপির সমর্থন।
১৬ জুন: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী মনজুর আলমের ব্যাপক বিজয়।
২০ জুন: গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ। ১৯ মে পল্টনের মহাসমাবেশ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
২১ জুন: গুলশান কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এমকে আনোয়ার বলেন, ৬ দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন অলীক কল্পনা।
কর বাড়ায় গরীবের দুর্ভোগ বাড়বে।
২৪ জুন: খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৭ জুনের হরতাল সফল করতে নানা বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়।
২৫ জুন: ২৭ জুন হরতাল সফল করতে গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন,‘হরতাল বাধা দিলে ফল শুভ হবে না।
’
২৬ জুন: হরতাল সফল করতে দেশব্যাপী বিএনপির গণসংযোগ ও মিছিল।
২৭ জুন: বিএনপির ডাকে দেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতাল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৬ মাসে এটিই ছিল বিএনপির প্রথম সকাল সন্ধ্যা হরতাল।
২৮ জুন: হরতালে বাধা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ। সমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব খোন্দাকার দেলোয়ার হোসেন ৭ জুলাই দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
৩০ জুন: আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে জাতীয় সংসদ ভবনের পূর্ব প্লাজায় জাতীয়তাবাদী সংসদীয় দলের মানব বন্ধন। নেতৃত্ব দেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক। বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
জুলাই-২০১০
১ জুলাই: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক। বৈঠকে ৭ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
২ জুলাই: নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে যৌথসভা অনুষ্ঠিত। সভায় ৭ জুলাই মানববন্ধন সফল করতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৩ জুলাই: গুলশান কার্যালয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের নেতাদের সাথে বৈঠক করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
৭ জুলাই: হরতালে বাধা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিএনপির মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
৮ জুলাই: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক।
বৈঠকে ১০ জুলাই মুক্তাঙ্গনে চৌধুরী আলমের সন্ধান ও মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া বিএনপির সাবেক মহাসচিব অসুস্থ আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার নিয়েও আলোচান হয়।
১৪ জুলাই: বিএনপির বন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে যুবদল। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন ‘সরকার গণতন্ত্রের মুখে কালিমা লেপন করেছে। ’
২৫ জুলাই: পল্টনে গণঅনশনের অনুমতি না পেয়ে রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি।
৩১ জুলাই: বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকার নিজেই আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। আপনারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন। ’
আগস্ট-২০১০
৫ আগস্ট: খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি।
৭ আগস্ট: গণমিছিল সফল করতে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে বিএনপির গণসংযোগ।
৮ আগস্ট: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা পার্টির সভানেত্রী জেসমিন আক্তারের ১জন নারীনেত্রী বিএনপিতে যোগ দেন।
৯ আগস্ট: ১৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাজধানীর পল্টন ময়দান থেকে বিশাল এক গণমিছিল বের করে বিএনপি। গণমিছিলের আগে এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় রোজার পর কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। এদিন রাতে গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে বরগুনার পিডিপি নেতা কর্নেল খালেদ বিএনপিতে যোগ দেন।
১২ আগস্ট: রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস কাবে ওলামা ও এতিমদের নিয়ে ইফতার করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১৪ আগস্ট: সংসদ ভবনের ডিএল হলে বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১৫ আগস্ট: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৬৬তম জন্মদিন পালন করে বিএনপি।
১৬ আগস্ট: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি নিতে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভা করে বিএনপি। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
১৭ আগস্ট: রাজনীতিবিদদের সম্মানে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
১৮ আগস্ট: রাজধানীর হোটেল রেডিসনে কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
৩০ আগস্ট: পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১০ দিনের সফরে সৌদি আরব যান।
সেপ্টেম্বর-২০১০
১ সেপ্টেম্বর: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী পালন করে বিএনপি।
৩ সেপ্টেম্বর: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দ্বিতীয় কারামুক্তি দিবস পালন করে বিএনপ।
১১ সেপ্টেম্বর: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় কারামুক্তি দিবস।
একই দিনে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ায় এই দিনটিতে বিশেষ কোনো কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি। তবে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ইস্কাটনের লেডিস কাবে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
২১ সেপ্টেম্বর: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২২ সেপ্টেম্বর: মুক্তাঙ্গনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন।
২৩ সেপ্টেম্বর: খালেদা জিয়ার ও তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদল ‘যুবসভা’র আয়োজন করে। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
২৪ সেপ্টেম্বর: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির মুলতবি বৈঠক অনুষ্ঠিত। বৈঠকে সংসদে ফেরা না ফেরার সিদ্ধান্তের ভার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপর ন্যস্ত করা হয়।
২৫ সেপ্টেম্বর: খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
অক্টোবর ২০১০
২ অক্টোবর: রমনা থানা বিএনপির সভাপতি চৌধুরী আলমের নিখোঁজের ১শ’ দিন পূর্তি উপলক্ষে মহানগর বিএনপি রাজধানীর মুক্তাঙ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।